বিদেশ ফেরত গৃহবধুর ঠিকানা এখন হাসপাতালে ॥ জর্দানের হোটেলে ১০ মাস ধরে চুনারুঘাটের রুণা বেগমের উপর চলে পাশবিক নির্যাতন
তারিখ: ৫-মার্চ-২০১৫
স্টাফ রিপোর্টার ॥

আমরা কি জানি, বিদেশ গিয়ে এসব কি হচ্ছে? অনেক যুবতিদের দুর্বলতার সুযোগে বিদেশে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এমনি এক হৃদয়স্পর্শী ঘটনা ঘটেছে চুনারুঘাট উপজেলার গোবরখলা গ্রামে। ওই গ্রামের মাসুক মিয়া সুন্দরী স্ত্রী রুনা বেগম (২০) বিদেশে পাশবিক নির্যাতনের শিকার  হয়ে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। গতকাল বুধবার রাত ৮টায় হাসপাতালে গেলে এ প্রতিনিধিকে আহাজারী করে রুণা বেগম জানায়, স্বামী অসুস্থ। অভাব অনটনের সংসারে জীবন চলছিলনা।্ এ দুর্বলতার সুযোগে আসামপাড়া গ্রামের আব্দুন নুরের পুত্র দালাল জামাল মিয়া ও তামশা মিয়ার পুত্র মানিক মিয়া তাকে প্রস্তাব দেয় যদি তুমি কিছু টাকার ব্যবস্থা করতে পারো তাহলে তোমাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিতে পারি। তাদের কথা রুনা বিশ্বাস করে কিছু টাকা যোগাড় করে দালালদের হাতে দেয়। দালালরা তাকে ঢাকায় নিয়ে যায় এবং একটি ট্যাভেলসে রাখে। গত বছরের ২৪ মে রাতে বিমানযোগে জর্দান পাঠায়। সেখান থেকে রুনাকে একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। রুনা সেখানে দেখতে পায় হবিগঞ্জের আরো কয়েক দালাল ও ৪০ জন যুবিত মেয়ে রয়েছে। ওই হোটেলে রুনাকে আটকে রেখে দালালসহ ওই দেশের লোক মিলে দিনের পর দিন পাশবিক নির্যাতন চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে দালালরা রুনার বাড়িতে ফোনে জানায়, যদি রুনাকে দেশে আনতে চাও বিমান ভাড়ার টাকা পাঠাও। দালালদের কথা মত রুনার স্বামী মাসুক মিয়া বাড়ি বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা পাঠালে অসুস্থবস্থায় রুনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। গত মঙ্গলবার রাতে রুনার স্বামী ঢাকা শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর থেকে অসুস্থবস্থায় রুনাকে হবিগঞ্জ নিয়ে আসে এবং গতকাল বুধবার সকালে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। রুনা আরো জানায়, বিদেশ যাওয়ার দিন থেকে ১০ মাস ধরে ওই হোটেলে আটক রেখে দিনের পর দিন তার উপর ও সেখানে থাকা অন্যান্য যুবতিদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। অনেকেই দেশে ফিরে আসতে না পেরে বাঁধ্য হয়েই সেখানে লালসার শিকার হয়ে দিনযাপন করছে। আবার অনেক দালালরা যুবতিদের লালসার শিকার বানিয়ে ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। ফলে বাঁধ্য হয়ে কথামত কাজ করতে হয়। খোজ নিয়ে জানা গেছে, এরকম অনেক মেয়েকে দালাল জামাল কাজ দেয়ার কথা বলে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। তার গ্রামের হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল ইউনিয়নের আটঘরিয়া গ্রামে। সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার দেবাশীষ দাশ জানান, পাশবিক নির্যাতনে রুনার অবস্থা আশংকাজনক হয়ে পড়েছে। আমরা আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা করছি।

প্রথম পাতা