আজ ব্যকস এর নির্বাচন ॥ হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা ॥ দুটি প্যানেল থেকে ৪০ জন প্রার্থী কারা হাসবেন বিজয়ের হাসি
তারিখ: ২৮-মার্চ-২০১৫
শরীফ চৌধুরী ॥

হবিগঞ্জ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি ব্যকস-এর দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন আজ। সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত টাউন হলে বিরতিহীন ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে, তৃণমূল ব্যবসায়ীদের সর্ব বৃহৎ সংগঠন ব্যকসের নির্বাচনকে ঘিরে শহরে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। শহরের প্রাণকেন্দ্র টাউন হল এরিয়াসহ পুরো শহর ছেয়ে গেছে নির্বাচনী পোস্টার-লিফলেট ও ফেস্টুনে। শহরের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত চষে বেড়িয়েছেন প্রার্থীরা। শেষ মুহুর্তের প্রচারণায় গতকাল শুক্রবার মধ্য রাত পর্যন্ত উভয় প্যানেলের প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করেছেন। দুটি প্যানেলই শক্তিশালী হওয়ায় নির্বাচনটি হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনে ২৪টি পদের বিপরীতে ২ প্যানেল থেকে ২০জন করে লড়ছেন মোট ৪০জন প্রার্থী। এবারের নির্বাচনে ব্যকস ও হবিগঞ্জ চেম্বাররের সাবেক সভাপতি তকাম্মুল হোসেন কামাল-এর নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী নিবাচন কমিশন দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচনের  অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে উভয় প্যানেলেই তরুণদের অংশ গ্রহণ। প্রার্থীদের অনেকেই রয়েছন নতুন ও শহরের নামিদামী ব্যবসায়ী। যারা কিনা অল্প বয়সেই পেয়েছেন ব্যবসায়ীক সফলতা। এবার তারা লড়ছেন ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব দিতে নির্বাচনের যুদ্ধে। আজ বিকেলেই দেখা যাবে তৃণমূল ব্যবসায়ীদের নেতৃত্বের অধিকারী। নির্বাচনে তিনস্তরের ব্যবসায়ীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে রয়েছেন আজীবন সদস্য, সাধারণ সদস্য ও সহযোগী সদস্য। নির্বাচনে তিনস্তরের মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৮৯ জন। এর মধ্যে আজীবন সদস্য ২৭২ জন, সাধারণ সদস্য ৫২০ জন ও সহযোগী সদস্য ২৯৭ জন।

১৯৮৬ সাল থেকে ব্যকস প্রতিষ্ঠিত হলেও অদ্যাবধি সবকটি পদে এবারই প্যানেল ভিত্তিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দীর্ঘ ৩০ বছর পর এবারই প্রথম ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণের জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্টু ও নিরপেক্ষ করতে কমিশনের পক্ষ থেকে প্রশাসন ও সংবাদ মাধ্যমসহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী দপ্তর ও সংস্থায় আমন্ত্রন পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনে মঈন উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাম্মু ও শামছুল হুদা প্যানেল থেকে সভাপতি পদে লড়ছেন মঈন উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাম্মু (হারিকেন), সাধারণ সম্পাদক পদে শামছুল হুদা (রিক্সা), সাংগঠনিক সম্পাদক পদে চৌধুরী মোঃ তুহিনুজ্জামান (ঘোড়া), সহ-সভাপতি পদে একেএম নজরুল ইসলাম (আম), এস এম হেমায়েত উল্লাহ রিজু (লিচু), এম এ আজিজ ইউনুছ (পেপে), সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে মোঃ আলমগীর (মোরগ), এবিএম মাহফুজুর রহমান নোমান (হাতি), কোষাধ্যক্ষ পদে মোঃ আব্দুল হক (আলমিরা), দপ্তর সম্পাদক মোঃ মাহবুবুর রহমান (দোয়াত কলম), প্রচার সম্পাদক পদে মোঃ জালাল উদ্দিন সজলু (টেলিভিশন), সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সৈয়দ জুয়েব হুসেন খোকন (বই), সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোঃ মামুন মিয়া (কবুতর) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। কার্যনির্বাহী সদস্য পদে এনামুল হোসেন চৌধুরী (শাপলা ফুল), মহিউদ্দিন মোঃ মোছাদ্দেক (টমটম), হাফিজুল ইসলাম (গোলাপ ফুল), মোঃ জাহিদ (কাপ প্লেইট), মোঃ মাহফুজ চৌধুরী (দেয়াল ঘড়ি), মুখলিছুর রহমান ফয়সল (কলস) ও মখলিছ মিয়া (মই) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। নির্বাচনের অন্যতম আরেকটি আকর্ষণ হল রাজনৈতিক মামলায় কারাগারে থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন হাফিজুল ইসলাম (গোলাপ ফুল) প্রতীক নিয়ে সাম্মু-শামছুল হুদা প্যানেল থেকে।

অপর দিকে, তোফায়েল ইসলাম কামাল ও ইকরাম চৌধুরীর প্যানেলে  থেকে সভাপতি পদে লড়ছেন সৈয়দ তোফায়েল ইসলাম কামাল (চেয়ার), সাধারণ সম্পাদক পদে মোঃ ইকরাম চৌধুরী (ছাতা), সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মোঃ নাজমুল হাসান সিদ্দিকী (হরিণ), সহ-সভাপতি পদে মোঃ নাছির উদ্দিন (আনারস), হোসাইন আহাম্মেদ রানা (কাঠাল), শাহ্ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সুমন (আপেল), সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে এনামুল হক শাহীন (মাছ), মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম আনু (হাঁস), কোষাধ্যক্ষ পদে মীর একেএম জমিলুন্নবী ফয়সল (তালা চাবি), প্রচার সম্পাদক জহিরুল ইসলাম রুয়েল (মোবাইল ফোন), সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রাজা স্মরণ ভট্টাচার্য্য (কলম), সমাজ কল্যাণ সম্পাদক রাজন রায় (প্রজাপতি)। কার্যনির্বাহী সদস্য পদে সানাউল্লাহ চৌধুরী সানি (খেজুর গাছ), রকিব উদ্দিন রিপন (টেবিল ফ্যান), সঞ্জয় রায় (টেলিফোন), একেএম মেহেদী হাসান সুমন (ঘুড়ি), মোঃ জসিম মাহমুদ (হাত পাখা), আহমেদ জামান খান শুভ (চশমা) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে ক্রীড়া সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় মোঃ কামাল খান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোঃ তকাম্মুল হোসেন কামাল জানান, নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি আমরা সম্মন্ন করেছি। নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করার জন্য প্রশাসন ও সাংবাদিকসহ পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এখন শহরের ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে আছেন সে শেষ মুহুর্তে  বিজয়ের হাসি হাসবে কারা?

প্রথম পাতা
শেষ পাতা