রাধাপুরে সংঘর্ষে যুবক নিহত বাড়ি ঘর ভাংচুর লুটপাট
তারিখ: ১১-ফেব্রুয়ারী-২০১৫
বানিয়াচং প্রতিনিধি ॥

বানিয়াচঙ্গের রাধাপুর গ্রামে দু’পক্ষের ভয়াবহ সংঘর্ষে এক যুবক নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের পর আসামীপক্ষের লোকজনের বাড়ীঘরে হামলা ভাংচুর-লুটপাট করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গত মঙ্গলবার সকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত দুলাল মিয়াকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে মঙ্গলবার রাতে দুলাল মিয়া মারা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মক্রমপুর ইউনিয়নের রাধাপুর গ্রামের খোরশেদ আলী ও নজির মিয়ার মধ্যে পূর্ব বিরোধ ও মামলা মোকদ্দমা চলে আসছিল। এর জের ধরে গত ৮ ফেব্র“য়ারী সকালে নজির মিয়ার ভাতিজা নুর আলমসহ কয়েকজন খোরশেদ মিয়ার শষ্য ক্ষেত থেকে ঘাস কাটার কথা বলে গম কেটে নিয়ে যায়। এসময় খোরশেদ মিয়ার লোকজন বাধা দিলে তারা গমের বস্তা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে নুর আলম বাড়ীতে গিয়ে তাকে মারপিট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে। এতে নজির মিয়ার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। গত ৯ ফেব্র“য়ারী খোরশেদ মিয়া দক্ষিণ সাঙ্গর থেকে বাড়ী ফেরার পথে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা নজির মিয়ার লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র তার উপর হামলা চালায়। খোরশেদ মিয়ার শোর চিৎকারে বাড়ীর লোকজন তাকে বাচাতে ছুটে আসলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে খোরশেদ মিয়ার পক্ষের হেকিম আলীর পুত্র মিজু মিয়া (২৫), খোরশেদ মিয়ার পুত্র শরীফ উদ্দিন (১৮), মন্জব আলীর পুত্র খেলু মিয়া (৩৫), মৃত আরজ আলীর পুত্র খোরশেদ মিয়া (৫৫) ও ইদ্রিস মিয়ার পুত্র আবু তালিব (২৫) গুরুতর আহত হয়। তাদেরকে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। অপরদিকে, নজির মিয়ার পক্ষের আব্দুল হাসিমের পুত্র কুদ্দুছ মিয়া (৩৫) ও আম্বর আলীর পুত্র দুলাল মিয়া (২৬)সহ কয়েকজন আহত হয়। পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে দুলাল মিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকের কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টায় দুলাল মারা যায়।

এদিকে, দুলাল মিয়ার মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নজির মিয়ার লোকজন বেপরোয়া হয়ে খোরশেদ মিয়ার লোকজনের বাড়ী ঘরে হামলা-ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এসময় বাড়ীর মহিলাদের মারপিট করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। রাধাপুর গ্রামের জমির আলীর স্ত্রী রতœা বেগম (২৭) জানান, তারা আমার বাড়ীতে হামলা করে আমাকে মারপিট করে আমার বাড়ীর সকল মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। পরে আমার দুই দিনের শিশু বাচ্চাসহ আমাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। খোরশেদ মিয়ার লোকজন অভিযোগ করেন, নজির মিয়ার লোকজন হেকিম আলী, ইদ্রিস আলী জমির আলী, জোবেদ আলী, আনোয়ার আলী, খেলু মিয়া ও আব্দুল কাদিরের বাড়ীতে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট করে ৭২টি গরু, ১০টি ছাগল, ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, ৬টি ট্রাক্টর, ৬টি সেচ মেশিন, ধান চাল, আসবাবপত্রসহ ৬০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় তারা একটি ছাগলকে পিটিয়ে মেরে ফেলে ও বাড়ীঘর ভাংচুর করে। এ ব্যাপারে খোরশেদ মিয়ার পক্ষের দেওয়ান মিয়া জানান, আমাদের জনবল খুব কম। তারা আমাদেরকে বিভিন্ন সময় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নির্যাতন করেছে। আমরা এর প্রতিবাদ করায় তারা পরিকল্পিতভাবে তাদের লোককে হত্যা করে আমাদেরকে ফাসানোর পরিকল্পনা করেছে।

প্রথম পাতা