তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল ॥ বিদেশে পালানোর চেষ্টা ॥ মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হলেন আ’লীগ নেতা নবীগঞ্জের গোলাপ চেয়ারম্যান
তারিখ: ১১-ফেব্রুয়ারী-২০১৫
দিদার এলাহী সাজু/জাকারিয়া চৌধুরী ॥

ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীর পর এবার মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হলেন আরেক আ’লীগ নেতা গোলাপ চেয়ারম্যান। তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন। এ খবর জানার পর তিনি এখন বিদেশে পালানোর চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার ১১নং গজনাইপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের গোলাপের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গত ৩১ জানুয়ারী হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের মাধ্যমে জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি মোঃ মোক্তাদির হোসেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ প্রতিবেদন দাখিল করেন। অভিযোগে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার ১১নং গজনাইনপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের গোলাপ মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। আবুল খায়েরের পিতা মতিউর রহমান ওরফে উমরা মিয়া একজন রাজাকার ছিলেন। ১৯৭১ সাথে মুক্তিযুদ্ধকালীন তিনি পাক হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা করেন। তার সহযোগিতায় পাক হানাদার বাহীনি নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুর হাই স্কুলে একটি ক্যাম্প স্থাপন করে। এ সময় তার পিতার সহযোগিতায় পাক-হানাদার বাহিনী নিরিহ বাঙ্গালির উপর নির্যাতন চালায়, হত্যা করে। এ সময় আবুল খায়ের গোলাপের বয়স ছিল প্রায় ১৯ বছর। তার পিতার নির্দেশে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মিলিতভাবে আবুল খায়ের গোলাপ নিরীহ লোকজনদের বাড়িতে হামলা, অগ্নি সংযোগ, ধর্ষণ ও লোটপাট করেন।

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, স্বাধীনতাপূর্বে গোলাপ একজন স্বল্প আয়ের যুবক ছিলেন। কোন রকমে চলত তাদের অভাবের সংসার। কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের ভাগ্য বদলে দেয় পাক হানাদার বাহীনি। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে আবুল খায়ের গোলাপ স্থানীয় ব্যক্তিদের হত্যা করে তাদের সম্পত্তি দখল করে প্রচুর সম্পদের মালিক হন। ১৯৭২ সালে গোলাপের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নি সংযোগের অভিযোগ উত্থাপিত হয়। পরে নবীগঞ্জ থানা ও হবিগঞ্জ মহকুমা আদালতে মামলা দায়ের হয়। কিন্তু তৎকালীন সময়ে তার ক্ষমতার দাপটে এসব অভিযোগ চাপা পড়ে যায়।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৭ জুলাই তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে একই উপজেলার নিশাকুড়ি গ্রামের আছকির উল্লার ছেলে মোঃ মানিক মিয়া বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারকে নিদের্শ দেন। সে অনুসারে হবিগঞ্জ জেলার গোয়েন্দা শাখার ওসি মোঃ মোক্তাদির হোসেন দীর্ঘ  তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রথম পাতা