পুলিশের সাড়াষি অভিযানে আটক ৩ ॥ এলাকায় আতংক ॥ উচাইল চারিনাও গ্রামে জহুর আলী হত্যা মামলার আসামীকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা
তারিখ: ৬-মে-২০১৫
জাকারিয়া চৌধুরী ॥

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার উচাইল চারিনাও গ্রামে জহুর আলী হত্যা মামলার আসামী লিটনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বাদী পক্ষের লোকজন। নিহত লিটন মিয়া (২০) ওই গ্রামের তাউস মিয়ার পুত্র। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ ফেব্র“য়ারী উচাইল চারিনাও গ্রামে পুকুর খনন করাকে কেন্দ্র করে জহুর আলীর সাথে বাকবিতন্ডা হয় একই গ্রামের খুরশেদ আলীর পুত্র শাহজাহান মিয়ার। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এতে মহিলাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় জহুর আলীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে তিন দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জহুর আলী। এ ঘটনায় জহুর আলীর ছেলে মেম্বার এমদাদুল হক আউয়াল বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় লিটন মিয়াকে ৬২ নাম্বার আসামী করা হয়। সম্প্রতি ওই মামলায় জামিনে মুক্ত রয়েছিল লিটন। পরবর্তীতে জহুর আলীর মেয়ে মোছাঃ লাকী আক্তার বাদী হয়ে ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় লিটন মিয়াকে ১৮ নাম্বার আসামী করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জহুর আলী হত্যা মামলা ও ভাংচুর মামলার আসামী এবং তদন্ত করতে যায় সদর থানার এসআই সুমন চন্দ্র হাজরা। এসময় জহুর আলী হত্যা মামলার আসামী মঞ্জু মিয়া (৪০) ও ভাংচুর লুটপাটের মামলার আসামী শুকুর আলী (৩০) কে আটক করা হয়। মঞ্জু মিয়া ওই গ্রামের ছৈইক উল্লাহর পুত্র এবং শুকুর আলী আব্দুল করিমের পুত্র। পুলিশ উল্লেখিতদের আটক করে থানায় নিয়ে আসার সময় নিহত জহুর আলীর পুত্র ও হত্যা মামলার বাদী মেম্বার এমদাদুল হক আউয়াল অন্য আরেকজন আসামী কে আটক করেছে বলে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ আটককৃত আসামী লিটন মিয়াকে উদ্ধার করে আনতে গেলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছার পূর্বেই মেম্বার আউয়াল মিয়া ও তার লোকজন লিটন মিয়াকে পিটিয়ে আহত করে আধমরা করে রাখে। এসআই সুমন চন্দ্র হাজরাসহ একদল পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। মাত্র কয়েক ঘন্টা চিকিৎসাধীন অস্থায় থাকার পর মৃত্যু হয় লিটনের। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই গ্রামের শহীদ মিয়ার পুত্র রিংকু মিয়া (২০) নামে এক যুবক কে আটক করে পুলিশ। এদিকে, গতকাল রাত সাড়ে ১১ টার দিকে পুলিশ লাশের ছুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। অপরদিকে, প্রকাশ্যে হত্যা মামলার আসামীকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনায় ওই এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পরছে। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি নাজিম উদ্দিন জানান, পুলিশ আসামী ধরে নিয়ে আসার সময় জহুর আলী হত্যা মামলার বাদী ও তার ছেলে আউয়াল মোবাইল ফোনে অপর আরেকজন আসামীকে আটক করেছে বলে জানায়। পরে পুলিশ তাকে নিয়ে আসার জন্য ঘটনাস্থলে পৌছাবার পূর্বেই বাদী পক্ষের লোকজ লিটনকে পিটিয়ে আহত করে। আহত লিটনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে তার মৃত্যু হয়। তিনি আরও জানান, এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশের সাড়াষি অভিযান অব্যাহত আছে।

প্রথম পাতা
শেষ পাতা