৭ আসামীর জামিন নামঞ্জুর ॥ মামলা চীফ জুডিসিয়াল আদালতে স্থানান্তর ॥ বাহুবলে ৪ শিশু হত্যা মামলার বাদীকে আদালত প্রাঙ্গনে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি!
তারিখ: ২৬-মে-২০১৬
নিরঞ্জন গোস্বামী শুভ ॥

বাহুবলে চাঞ্চল্যকর ৪ শিশু হত্যা মামলায় ৭ আসামীর জামিন নামঞ্জুর করেছে আদালত। সেই সাথে মামলাটি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আলমের আদালতে হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী আব্দুল আলী বাগালসহ ৭ আসামীর জামিন আবেদন করা হয়। দুপুরে শুনানী শেষে বিচারক আসামীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করেন এবং মামলাটি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরনের নির্দেশ দিয়ে মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন আগামী ৯ জুন। জামিন নামঞ্জুরকৃত আসামীরা হলো পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আলী বাগাল, তার দুই ছেলে রুবেল মিয়া ও জুয়েল মিয়া, তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আরজু মিয়া, শাহেদ মিয়া, সালেহ উদ্দিন ও বশির মিয়া। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবি এডভোকেট ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন জানান, মামলায় শুনানী শেষে ৭ আসামীর জামিন নামঞ্জুর করেছে আদালত এছাড়া জব্দকৃত সিএনজিটি জিম্মায় নেয়ার আবেদন করা হয়েছিল সেই সাথে সিএনজির আবেদনটি বাতিল করা হয়েছে এবং মামলাটি আমলী আদালত থেকে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রেরনের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। চীফ জুডিসিয়াল থেকে সংশ্লিষ্ট আদালতে প্রেরণ করা হবে। এদিকে আসামীদের কারাগারে নেয়ার সময় চাঞ্চল্যকর ৪ শিশু হত্যা মামলার বাদীকে প্রকাশ্যে গলাকেটে হত্যার হুমকি দিয়েছে মামলার অন্যতম আসামী শাহেদ মিয়া। দুপুরে আদালত প্রাঙ্গনে তাকে এ হুমকি দেয়া হয়। দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আলমের আদালতে মামলার নির্ধারিত ধার্যতারিখে শুনানী শেষে আসামীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেয়া হয়। এর পর পুলিশ ভ্যানে করে কারাগারে নেয়ার সময় উপস্থিত পুলিশ, সংবাদকর্মী ও জনতার সামনে মামলার আসামী শাহেদ নিহত শিশু মনিরের পিতা আব্দাল মিয়াকে হত্যার হুমকি দিয়ে বলে আমি জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তোকে গলা কেটে হত্যা করব। আর কদিন বেচে থাক। শাহেদের এ ধরনের প্রকাশ্যে হুমকিতে উপস্থিত অনেকেই হতবিম্ভ হয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে শিশু মনিরের পিতা আব্দাল মিয়া হত্যার হুমকির কথা স্বীকার করে জানান, প্রকাশ্যে এ ধরনের গলাকেটে হত্যার হুমকিতে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। তবে অপর আসামীরা সংবাদ কর্মীদের দেখে তারা নিদোর্ষ দাবী করে চিৎকার করে জানান আমরা ষড়যন্ত্রের স্বীকার।

উল্লেখ্য, গত ১২ ফেব্র“য়ারী বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মোঃ ওয়াহিদ মিয়ার পুত্র জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার চাচাত ভাই আব্দুল আজিজ-এর পুত্র তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার পুত্র মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আব্দুল কাদির-এর পুত্র ইসমাঈল হোসেন (১০)। খেলতে গিয়ে নিখোজ হয়। নিখোজের ৫দিন পর ১৭ ফেব্র“য়ারী গ্রামের পাশ্ববর্তী স্থানে ৪ শিশুর মাটিচাপা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দেশে বিদেশে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনার পরপরই প্রধান অভিযুক্ত আব্দুল আলীসহ ৭ জনকে আটক করে এবং ঘটনার অন্যতম আসামী বাচ্চু মিয়া র‌্যাবের সাথে ক্রস ফায়ারে নিহত হন। ইতিমধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আব্দুল আলীর দুই ছেলেসহ ৪জন আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।

প্রথম পাতা