আমজনতার জিজ্ঞাসা............ ॥ মিরপুর পাবলিক টয়লেটের খবর কি? গালভরা মিষ্টি প্রতিশ্র“তি গেল কোথায়?
তারিখ: ২৬-জুলাই-২০১৬
দিদার এলাহী সাজু ॥

বাহুবলের সিংহদ্বার খ্যাত উপজেলার রাজনৈতিক রাজধানীর নাম ঐতিহ্যবাহী “মিরপুর বাজার”। বাণিজ্যিক কারণে একে উপজেলার প্রাণকেন্দ্রও বলা চলে। মিরপুর বাজারকে কেন্দ্র করে এর চারদিকে গড়ে উঠেছে আড়াই ডজনেরও বেশি “ব্রিক ফিল্ড”। ওই সব ব্রিক ফিল্ডে কর্মরত আছেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কয়েক হাজার শ্রমিক। মিরপুরে রয়েছে একাধিক কলেজ-মাদ্রাসাসহ অর্ধশতাধিক আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জাতীয় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের মিলনস্থল হওয়ায় বাজারটি ইতিমধ্যেই পরিণত হয়েছে ব্যস্ততম জনবহুল স্থানে। বিশেষ করে মিরপুর চৌমুহনীটি বিপুল সংখ্যক ক্রেতা-বিক্রেতা ও দূর-দূরান্তে যাতায়াতকারী হাজারও যাত্রী সাধারণসহ স্কুল-কলেজের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে প্রতিনিয়ত। অথচ এরকম একটি জনবহুল স্থানে দূর্ভাগ্যজনক কারণে নেই অতি প্রয়োজনীয় “পাবলিক টয়লেট”। এতে করে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাজার-হাজার ব্যবসায়ী, পরিবহণ যাত্রী ও শিক্ষার্থীরা। এলাকাবাসী মিরপুর চৌমুহনীতে একটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণের দাবী করে আসলেও, সংশি¬ষ্টরা দীর্ঘদিন ধরে দিয়ে আসছেন গালভরা মিষ্টি প্রতিশ্র“তি। এসব প্রতিশ্র“তি প্রদানকারীদের তালিকায় রয়েছেন স্থানীয় ব্যকস্ নেতৃবৃন্দ, ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম। শুধু তাই নয়, এ তালিকায় যুক্ত আছেন দু’জন পার্লামেন্ট মেম্বারও। কিন্তু এতগুলো মানুষ মিলেও কেন একটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করতে পারছেন না? এমন প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র। সংশি¬ষ্টদের কাছে আমজনতার জিজ্ঞাসা, মিরপুর পাবলিক টয়লেটের খবর কি? গালভরা মিষ্টি প্রতিশ্র“তি গেল কোথায়?

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মিরপুর ব্যকসের সাধারণ সম্পাদক মোঃ তারা মিয়া জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রীঘ্রই এ ব্যাপারে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। মিরপুর ইউনিয়নের বিদায়ী চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল আউয়াল জানান, পাবলিক টয়লেট নির্মাণে গত ৫ বছর তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বাজেট ও উপযুক্ত ভূমি না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন লিয়াকত জানান, এটা অতীতের জনপ্রতিনিধিদের ব্যর্থতার চিত্র। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি এ ব্যাপারে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে জানান। মিরপুরের বাসিন্দা উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান নাদিরা খানম জানান, উপজেলা পরিষদে তার কোন বরাদ্ধই নেই। তিনি রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, উপজেলা প্রশাসনে পাবলিক টয়লেট নির্মান খাতে আপাতত কোন বরাদ্ধ নেই। তবে ভবিষ্যতে বরাদ্ধ প্রাপ্তি সাপেক্ষে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন তিনি। একই বক্তব্য দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই। তিনিও শুনিয়েছেন আশার বাণী। এদিকে, এমপি মুনিম চৌধুরী বাবু ও এমপি কেয়া চৌধুরীও দিয়েছেন প্রায় একই রকম বক্তব্য। তারা উভয়ই জানান, উপযুক্ত জায়গা পেলে যেকোন সময় বরাদ্ধ দিতে প্রস্তুত আছেন। উপযুক্ত জায়গা না পাওয়ার কারণে ইতিপূর্বে তাদের দেয়া বরাদ্ধ নাকি প্রত্যাহার করতে হয়েছে।

প্রথম পাতা