ঢাকার বন্দিশালা থেকে কৌশলে পালিয়ে এসেছে হবিগঞ্জের মাদ্রাসার ছাত্র আনন্দ
তারিখ: ২৫-অগাস্ট-২০১৬
জাহেদ আলী মামুন ॥

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতানশী গ্রাম থেকে নিখোঁজ হওয়া শিশুকে ৬ মাসেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তবে ওই শিশুটি কাজের মেয়ের সহযোগিতায় ঢাকার মালিবাগ এলাকার একটি বাসার বন্দিশালা থেকে পালিয়ে এসেছে। এ ঘটনা নিয়ে দিনভর তোলপাড় শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে শিশু সাইফুল ইসলাম আনন্দ সাংবাদিকদেরকে জানায়, সে সদর উপজেলার সুলতানশী হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র ও গোবিন্দপুর গ্রামের আখলাছ মিয়ার পুত্র। গত ১৬ ফেব্র“য়ারি মাসে সুলতানশী মেলা ছিল। রাত ১০টায় সে ও তার এক বন্ধু মেলায় গেলে অপরিচিত একজন লোক এসে তার সাথে বন্ধুত্ব করে এবং তাকে হোটেলে নিয়ে হালুয়া খাওয়ায়। এরপর সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। একদিন পর জ্ঞান ফিরলে দেখতে পায় সে কমলাপুর রেল স্টেশনে আছে। এরপর তাজুল মোল্লা নামে একজন লোক মালিবাগের একটি বাসায় নিয়ে তাকে বিক্রি করে দেয়। সেখানে সে শত নিপীড়ন নির্যাতন সহ্য করে তাদের কথামতো ছিল এবং ঘরে কাজ কর্ম করে। এ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সাথে সে আন্তরিকতা জমায়। অতঃপর বাসা থেকে পালিয়ে আসার কৌশল খোজতে থাকে এবং সে ওই বাসার কাজের ভুয়ার সহযোগিতা নেয়। কাজের বুয়া তাকে ১শ টাকা দেয়। গত মঙ্গলবার রাতে কৌশলে ওই বাসার বন্দিশালা থেকে আনন্দ পালিয়ে আসে। কাজের বুয়া তাকে রাতে লুকিয়ে শায়েস্তাগঞ্জগামী একটি ট্রেনে তুলে দেয়। রাত ৩টার দিকে শায়েস্তাগঞ্জ রেল স্টেশনে এসে পৌছে। সেখানে একটি চায়ের স্টলে বসে সূর্যদয়ের অপেক্ষা করে। এরপর সকালে সিএনজিযোগে সে বাড়িতে আসে এবং তার পরিবারকে ঘটনা খুলে বলে। ঘটনা শোনার পর তার পিতা আলকাছ মিয়া বুধবার দুপুরে তাকে সদর থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পুলিশ তার জবানবন্দি রেক্ড করে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তার জবানবন্দি নিয়ে পিতার জিম্মায় দিয়ে দেয়।

উল্লেখ্য গত ১৬ ফেব্র“য়ারি ওই শিশুর পিতা আলকাছ মিয়া বাদি হয়ে সদর থানায় একটি জিডি করেন। এরপর পুলিশ বিভিন্নস্থানে তল্লাশী চালিয়েও ওই শিশুকে উদ্ধার করতে পারেনি। সম্প্রতি নিশাপট গ্রামের জমির আলীর পুত্র আলা উদ্দিন (৩০) শিশুর পিতাকে ফোন করে বলে তোমার ছেলেকে ফেরত পেতে হলে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। বিষয়টি তার পিতা পুলিশকে জানালে আলা উদ্দিন পুলিশের সাথে গেমস খেলে। এক পর্যায়ে মহিলা পুলিশ দিয়ে কৌশলে তাকে আটক করা হয়। এ ব্যাপারে আলা উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজনকে আসামী করে সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন শিশুর পিতা। এ মামলায় আলা উদ্দিন কারাগারে রয়েছে। এ ব্যাপারে সদর থানার এসআই পার্থ রঞ্জন চক্রবর্তী ও এসআই সাহিদ বলেন, শিশুটিকে তার পিতা থানায় নিয়ে আসেন।

প্রথম পাতা