মাধবপুরে ট্রিপল মার্ডার ॥ আদালতে ঘাতক তাহেরের স্বীকারোক্তি ॥ ভাবী জাহানারার প্রতারণার শিকার হয়ে ৩ জনকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করি
তারিখ: ২৫-অগাস্ট-২০১৬
নিরঞ্জন গোস্বামী শুভ ॥

মাধবপুরে ভাবির কাছে প্রতারণা আর উপহাসের শিকার হয়েই ৩ জনকে হত্যা করেছে ঘাতক তাহের উদ্দিন। গতকাল বুধবার বিকেলে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসাদ বেগমের আদালতে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা প্রদান করেন। স্বীকারোক্তির বিষয়টি মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোক্তাদির হোসেন ও কোর্ট ইন্সপেক্টর কাজী কামাল হোসেন সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। তাহের তার বক্তব্যে জানায়, ভাবির দ্বারা দফায় দফায় প্রতারিত আর উপহাসের শিকার হয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন তাহের উদ্দিন। এ কারণেই ভাবিকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ সময় অন্যরা ছুটে আসায় তাদেরও আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছে তিনজন। হত্যাকান্ড তাহের উদ্দিন একাই ঘটিয়েছেন। ঘাতক তাহের আরো জানান, ১১ বছর কুয়েত এবং গ্রিসে ছিলেন। সেখান থেকে তিনি তার ভাবি জাহানারা বেগমের কাছে উপার্জিত টাকা পাঠাতেন। কিন্তু দেশে ফেরার পর তিনি তার টাকা ফেরত পাননি। এছাড়াও ভাবির দ্বারা তিনি বিভিন্নভাবে প্রতারিত হয়ে ২ বছর বয়সী সন্তানসহ আর্থিক কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করতেন। সম্প্রতি জমিজমা বিক্রি করে তিনি বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ফ্লাইট জটিলতায় তার যাওয়া হয়নি। শেষ সম্বলটুকুও হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যান তিনি। এ নিয়ে প্রায়ই ভাবি জাহানারা তাকে নানাভাবে উপহাস করতেন। মঙ্গলবার রাতেও তাকে নিয়ে উপহাসের এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তাহের ক্ষিপ্ত হয়ে ভাবি জাহানারার ওপর আক্রমণ করেন। মূলত ভাবিকে হত্যার জন্যই তিনি আক্রমন করেছিলেন। এ সময় তার চিৎকারে অন্তঃসত্তা মেয়ে শারমীন, ছেলে সুজাত ও প্রতিবেশী শিমুল মিয়া এগিয়ে আসার কারণে তাদের উপরও হামলা চালান তিনি। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান জাহানারা। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাহেরকে আটক করেন।

এদিকে গতকাল সকালে নিহতদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে তাদের লাশ আত্মীয় স্বজনদের জিম্মায় দেয়া হয়। অপর দিকে মঙ্গলবার রাতেই নিহত জাহানারার দুলা ভাই হাজী মোহন মিয়া বাদি হয়ে মাধবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

প্রথম পাতা