সভাপতির বিরুদ্ধে একক আধিপত্যসহ নানা অভিযোগ ॥ ধ্বংসের মুখে চুনারুঘাট দারুল ইসলাম রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসা
তারিখ: ২৯-সেপ্টেম্বর-২০১৬
স্টাফ রিপোর্টার ॥

চুনারুঘাট উপজেলার ঐতিহ্যবাহি ইসলামী শিক্ষার বিদ্যাপিঠ দারুল ইসলাম রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসা নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ধ্বংসের মুখোমুখি। শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ না দেয়া ও খোদ সভাপতির বিরুদ্ধে আত্মীয়করণের অভিযোগ উঠেছে। ফলে ওই মাদ্রাসায় চলছে একমুখী নীতি। সরকারের নিয়মনীতির প্রতি তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। খোজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছর থেকে এনটিআরসির মাধ্যমে বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করলেও এসব নীতির ছোঁয়া যেন এখনও পৌছেনি ওই মাদ্রাসায়। মাদ্রাসাটিতে একাধিক শিক্ষকপদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ শূন্যপদের তথ্য সরকারকে রহস্যজনক কারণে সরবরাহ করছে না। যে কারণে এনটিআরসির প্রকাশিত শূন্য পদধারী প্রতিষ্ঠানের তালিকায় কোথাও দারুল ইসলাম ফাজিল মাদ্রাসার নাম আছে বলে কেউ জানে না। ইংরেজি প্রভাষক ও আরবি প্রভাষক পদটি ২০১৫ইং সাল থেকে শূন্য রয়েছে। সহকারী শিক্ষক (শরীরচর্চা) পদটি শুরু থেকে শূন্য থাকলেও এসব পদে রহস্যজনক কারণে যোগ্য প্রার্থীদেরকে নিয়োগ না দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। একটি সূত্র জানায়, সরকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহকে এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত শূন্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমনসব শূন্য পদের তালিকা সরবরাহ করার জন্য এনটিআরসির ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কিন্তু দারুল ইসলাম রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শূন্যপদের কোন তালিকা প্রেরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান তালিকা প্রেরণ করেনি সেসব প্রতিষ্ঠান সমূহকে এ বছরের আগস্ট মাসে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে কারণসহ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। তাতেও এ প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার কর্ণপাত করেনি। এক পর্যায়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থীগণ যথাযথ কর্তৃপক্ষের সমূহে শূন্যপদের তালিকা সরকারকে সরবরাহ করার জন্য মৌখিক ভাবে অনুরোধ জানালেও নানা কৌশলে এসব বিষয়ে এড়িয়ে চলছেন। উক্ত প্রতিষ্ঠানে সরকার কর্তৃক দেয়া কোড নং ১৮৮৭০ এবং ইআইআইএন নং- ১২৯৪১১। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, মাদ্রাসার ট্রাস্টি গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে যে ব্যক্তি দায়িত্বপালন করছেন তিনি কুমিল্লা জেলার দেবিদ্ধার উপজেলার সৈয়দপুর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। সভাপতির ক্ষমতাবলে তিনি তার দুই পুত্রকে অত্র প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য দীর্ঘদিন ধরে নানা কৌশল অবলম্বন করে চলেছেন। উল্লেখ্য যে, গভর্ণিংবডির হাতে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে সভাপতি নিজ ক্ষমতাবলে যে নিয়োগটি প্রদান করেন তা ছিল তার বড় ছেলের জন্য। পদ ছিল আরবি প্রভাষক। বর্তমানে তার ২য় ছেলেকে নিয়োগদানের জন্য নানা প্রকার কূটকৌশল তৈরি করছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান। খোজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ৩ বছর আগে মাওলানা আবু তাহের সালেহ উদ্দিন ট্রাস্টি গভর্ণিং বডির হিসেবে অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচিত হন। এ পর্যন্ত কোন প্রকার নির্বাচন হয় নি। কবে কমিটি গঠন করা হয় কিংবা কখন মেয়াদ শেষ হয় অভিভাকদের অনেকেই জানেনা। জানাযায়, সভাপতি সহ কমিটির একটি অংশের সাথে অধ্যক্ষ মনছুর আহমেদের মতানৈক্য সহ নানা কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর পর থেকে এক বছর ধরে ইউসুফ আলী নামে একজন প্রভাষক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি দূরবর্তী স্থানে কর্মরত থাকায় তার কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নি। ঐতিহ্যবাহি দ্বীনি শিক্ষা এ বিদ্যাপিঠের শূন্যপদের শিক্ষক নিয়োগ সহ নানা অচলাবস্থা দূরীকরণে প্রশাসনকে এ মুহূর্তে নজর দেয়া প্রয়োজন।

প্রথম পাতা