পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ নিয়ে রহস্য ॥ মাধবপুরে মা-ছেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ॥ স্বামী পলাতক
তারিখ: ২১-ফেব্রুয়ারী-২০১৭
স্টাফ রিপোর্টার ॥

মাধবপুর উপজেলার ঘিলাতলী গ্রামে শিশু পুত্রকে হত্যার পর মা’র গলায় ফাস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার বহরা ইউনিয়নের ঘিলাতলী গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। তবে এটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় মাধবপুর উপজেলাসহ জেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঘটনার পর থেকে তার স্বামী ও শাশুড়ী পলাতক রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩ বছর পুর্বে মৌলভীবাজার জেলার কাশিপুর গ্রামের মঞ্জুলাল দেবের মেয়ে মিলির সঙ্গে বিয়ে হয় মাধবপুর উপজেলার ঘিলাতলী গ্রামের মৃত প্রিয় লাল দেবের ছেলে পিন্টু দেবের সঙ্গে। এর মধ্যে তার কোলজুড়ে এক ফুটফুটে ছেলে সন্তান পথিকের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকেই তার শাশুড়ী পঞ্চমী দেবের সঙ্গে মন মালিন্য চলে আসছিল। প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হত। এ ব্যাপারে নিহত মিলির প্রতিবেশী তার ভাসুরের স্ত্রী রিক্তা দেব বলেন, প্রতিদিন সকালে মিলি তার বাচ্চাকে আমার কাছে রেখে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে কাজ করত। পরে আমাদের সঙ্গে হাসি খুশিভাবে সময় কাটাত। গতকাল সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন তাদের কোনো সাড়াশব্দ পাচ্ছিলাম না, আর বাচ্চাকে আমার কাছে রেখে যায়নি, তখন কৌতুহল বশত তাদের ঘরের গ্রিলে ধাক্কা দিয়ে ডাকতে থাকি। তাতেও কোনও সাড়া শব্দ না পেয়ে গ্রিল খুলে ভিতরে গিয়ে দেখি মিলি ও তার শিশু সন্তান পথিক ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলছে। এ দৃশ্য দেখে আমি হতবাক হয়ে যাই। পরে চিৎকার দিলে বাড়ির অন্যান্য লোকজন ছুটে আসে। এ সময় পিন্টু বাড়ির বাইরে ছিল। আর তার শাশুড়ী গত কয়েকদিন যাবত তার মেয়ের বাড়িতে অবস্থান করছিল। সোমবার সকালে তিনি খবর পেয়ে বাড়িতে ছুটে আসেন। এনিয়ে আরও রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা আরও জানায়, মিলির স্বামী একটি বেসরকারী কোম্পানিতে চাকুরি করেন। প্রতিদিন সকালে তিনি অফিসের কাজে বাইরে চলে যান। স্ত্রী সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়ে পিন্টু বাড়িতে আসেন। পরে আর তাকে পাওয়া যায়নি। মিলির বোন পার্শ্ববর্তী দূর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা মাপ্পি দেব বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত এসে দেখি ঘরের ভিতর আমার বোন ও তার সন্তানের লাশ ঝুলছে। তার স্বামী ও শাশুড়ী এ সময় বাড়িতে ছিলেন না। তবে কি ভাবে মা ছেলের মৃত্যু হয়েছে তার রহস্য এখনও কাটেনি। মা-ছেলেকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে নাকি ছেলেকে হত্যার পর মা আত্মহত্যা করেছে তা স্পষ্ট নয়। এ ব্যাপারে মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোক্তাদির হোসেন জানান, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটন্থালে গিয়ে লাশ উদ্ধার এবং আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে মিলির স্বামী পিন্টু ও তার মাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

শেষ পাতা