আজ পৌর চেয়ারে বসবেন মেয়র জি কে গউছ
তারিখ: ৩০-এপ্রিল-২০১৭
স্টাফ রিপোর্টার ॥

২০১৪ সালের ১০ নভেম্বরের পর আজ মেয়রের চেয়ারে বসবেন হবিগঞ্জ পৌরসভার টানা ৩ বারের নির্বাচিত মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ। তিনি ইতিমধ্যেই পবিত্র ওমরা সম্পন্ন করে দেশে ফিরেছেন। আজ সকাল ১০টায় পৌরসভায় অফিস করবেন। এ উপলক্ষে পৌরসভায় খতমে কোরআন ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এরপূর্বে ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারী ৭শ ৩৯ দিন কারাভোগের পর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান মেয়র জি কে গউছ। ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর দাখিলকৃত সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার ৩য় সম্পূরক চার্জশীটে মেয়র জি কে গউছকে আসামীভুক্ত করা হয়। পরে ২৮ ডিসেম্বর তিনি আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করেন। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর কারাগারে থেকেই হবিগঞ্জ পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মেয়র জি কে গউছ। এই নির্বাচনে অনেকটা অভিভাবকহীন অবস্থায় প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন তিনি। কিন্তু জনগনের ভালবাসার কাছে সকল রক্তচক্ষু ধুলিস্যাৎহয়ে যায়। নির্বাচিত হন টানা ৩য় বারের মত মেয়র। ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারী প্যারোলে মুক্তি পেয়ে শপথ গ্রহন করেন মেয়র জি কে গউছ। কিন্তু দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়েই ২০ মার্চ মেয়র জি কে গউছকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারী উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে ২৩ জানয়ারী তিনি পৌরসভার দায়িত্ব ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। আদালত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করলে মেয়রের পদ ফিরে পান জি কে গউছ। কিন্তু দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবিগঞ্জ পৌরসভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের চিঠি আসতে সময় লেগে যায় ২ মাস।

গত ২৩ মার্চ তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহন করেন জি কে গউছ। আবারও প্রাণ সঞ্চার হয় পৌরসভায়। স্বস্থি ফিরে আসে হবিগঞ্জ পৌরবাসীর মধ্যে। কিন্তু দায়িত্ব ফিরে পাওয়ার ১১ দিনের মাথায় গত ২ এপ্রিল মেয়র জি কে গউছকে আবারও বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তখন মেয়র জি কে গউছসহ দেশের ৩ মেয়রকে এক সাথে বরখাস্ত করায় তুমুল ঝড়ে উঠে দেশব্যাপী। দেশি-বিদেশী সংবাদপত্র ও টক-শোতে তখনকার সময়ে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ৩ মেয়রের বরখাস্তের ঘটনা। সরকারকেও ব্যাপক সমালোচনায় পড়তে হয়েছে। এক পর্যায়ে সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলতে বাধ্য হন “৩ মেয়রের বরখাস্তের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অবগত নন।”পরে মাত্র ২ দিনের মধ্যেই ৪ এপ্রিল আবারও মেয়রের দায়িত্ব ফিরে পান বহুল আলোচিত মেয়র জি কে গউছ।

এদিকে দায়িত্ব ফিরে পেলেও মেয়রের চেয়ারে বসে দায়িত্ব পালন করেননি মেয়র জি কে গউছ। তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, মহান আল্লাহর ঘর পবিত্র কাবা শরীফ তাওয়াফ ও রাসূলে পাক (দঃ) এর রওজা মোবারক জিয়ারত না করে মেয়রের চেয়ারে বসবেন না। তাই পবিত্র ওমরা পালনে যাওয়ার পূর্বে তিনি সচিবের রুমে বসে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু ওমরা পালনে যেতেও অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি অতিক্রম করতে হয়েছে মেয়র জি কে গউছকে।

পবিত্র ওমরা হজ্বে যাওয়ার জন্য গত ১৬ ও ২৩ মার্চ অনুমতি চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পৃথক ২টি আবেদন করেন মেয়র জি কে গউছ। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কোনো জবাব না পেয়ে ২৯ মার্চ তিনি আইনি নোটিশ দেন। তারও কোনো জবাব না পাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট করেন মেয়র জি কে গউছ। এ রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট ৩ দিনের মধ্যে জি কে গউছকে পবিত্র ওমরা হজ্বে যাওয়ার অনুমতি দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে যাত্রাপথে বিমানবন্দর পর্যন্ত তাকে যেন কোনো ধরনের হয়রানি না করা হয় তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রতি নির্দেশ দেন আদালত। পরে মহান আল্ল্হর ঘর পবিত্র কাবা শরীফ তাওয়াফ ও রাসূলে পাক (দঃ) এর রওজা মোবারক জিয়ারত করতে সৌদি আরব গমন করেন মেয়র জি কে গউছ। তিনি পবিত্র ওমরা সম্পন্ন করে ইতিমধ্যেই দেশে ফিরেছেন। আজ সকাল ১০টায় তিনি পৌরসভায় অফিস করবেন। এরপূর্বে মেয়রের চেয়ারে বসে সর্বশেষ দায়িত্ব পালন করেছিলেন ২০১৪ সালের ১০ নভেম্বর।

প্রথম পাতা