ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও ঝাঁকজমকপুর্ণ ভাবে হবিগঞ্জ ফাউন্ডেশন ইউকের আনন্দমেলা অনুষ্ঠিত
তারিখ: ২৪-জুলাই-২০১৭
লন্ডন প্রতিনিধি ॥

ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় ও ঝাঁকজমকপুর্ণ ভাবে হবিগঞ্জ ফাউন্ডেশন ইউকের আনন্দমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আনন্দ, হৈ হুল্লোর, নাচ-গান, আপ্যায়ন, প্রিয় মানুষদের কাছে পাওয়া ও প্রিয় মাতৃভূমির স্মৃতিচারনের মধ্যদিয়ে এ আনন্দমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৬ জুলাই রবিবার পূর্ব লন্ডনের ইম্প্রেশন ইভেন্ট ভেন্যুতে হবিগঞ্জ ফাউন্ডেশন ইউকের উদ্যোগে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। উৎসবে যোগ দিতে দূরবর্তী শহরে বসবাসকারী অনেকে একদিন পূর্বেই লন্ডন চলে আসেন তাদের আত্মীয় পরিজনদের বাসায়। যদিও অনুষ্ঠানটি শেষ হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা ৬ টায় কিন্ত রাত ৯ টা পর্যন্ত চলে অতিথিদের আনন্দ আড্ডা। এক সময় হল বন্ধ হলে অতিথিরা চলে যান লন্ডন শহরের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানে প্রধান প্রধান সড়কে টেমসের পারে। সেখানে আড্ডা চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। পরের দিন ছিল হবিগঞ্জ ফাউন্ডেশন ইউকের চেয়ারপারসন দেওয়ান সৈয়দ রব মোর্শেদের জন্মদিন। তাই এর প্রথম প্রহর তথা রাত ১২টা ১ মিনিটে কেক কেটে শুরু হয় জন্মদিনের শুভেচ্ছা। আনন্দ উৎসব গড়ায় জন্মদিনের উৎসবে। এ উৎসব যেন শেষ হওয়ার নয়। পরে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ঘোষনা আসে আগামী বছর আরো বৃহৎ পরিসরে হবিগঞ্জ উৎসব-২০১৮ আয়োজনের। যা কেবল যুক্তরাজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না যুক্ত করা হবে পুরো ইউরোপকে। অচিরেই একটি শক্তিশালী হবিগঞ্জ উৎসব-২০১৮ এর উদযাপন কমিটি ঘোষনা করে কর্মযজ্ঞ শুরু হবে। থাকবে হবিগঞ্জের ইতিহাস ঐতিহ্য কৃষ্টি সংস্কৃতি নিয়ে সমৃদ্ধ প্রকাশনা। এবারের মতো যুক্তরাজ্যের গন্ডি পেরিয়ে পুরো ইউরোপে আয়োজন করা হবে রোড শো’র। বাংলাদেশ থেকেও হবিগঞ্জের কৃতি সন্তানদের আমন্ত্রন জানানো হবে ২০১৮’র উৎসবে। অনুষ্ঠানটি শুরুতেই ছিল শিশুদের ম্যাজিক শো। পরবর্তীতে পুরো দ্বিতল বিশিষ্ট ভেন্যুটিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। একদিকে চলে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অন্যদিকে চলে বাচ্চাদের ফেইসপেইন্টিং। অন্য কর্নারে চলে মহিলা ও কিশোরীদের মেহেদী উৎসব। আরেক কর্নার মেতে উঠে যন্ত্রবিহীন সুরে বেসুরে সঙ্গীত উৎসবে। আরেক দিকে চলে শিশু-কিশোরদের বিভিন্ন খেলাধুলা, আনন্দ উৎসব। একটি কর্নার সংরক্ষিত ছিল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সুধিজনদের জন্য। এছাড়া ছিল কফি ও টি কর্নার, আইসক্রীম পার্লার, ডেসার্ট কর্ণার, সেলফি কর্নার। অথিতিদের পরিচিতি পর্বের পরই শুরু হয় প্রবাসী হবিগঞ্জবাসীর সন্তানদের শিক্ষায় কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ এওয়ার্ড প্রদান’। হবিগঞ্জ ফাউন্ডেশন মেধাবী পদক' প্রাপ্তরা হলেন শাহ সুমাইয়া, সুহা মিয়া, নাভিদ চৌধুরী, মাহিরা নুজহাত চৌধুরী, মুতাসিম হুসেন চৌধুরী, নাজমুল শেখ, অমিত হুসেন, তামিম উদ্দিন প্রমূখ। পদক প্রাপ্তদের সাথে তাদের গর্বিত বাবা-মাও মঞ্চে আসেন। আর পুরস্কার তুলে দেন কমিউনিটি নেতা শামসুউদ্দিন আহমেদ এমবিই ইউরোপ সফররত হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন হবিগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি বিশিষ্ঠ সাংবাদিক হারুনুর রশীদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্যস্থ হবিগঞ্জ এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এম এ রউফ, হবিগঞ্জ ডিস্ট্রক্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক বিশিষ্ট শিল্পপতি মুকিত চৌধুরী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক কমনওয়েলথ স্কলার মোঃ আজিজুর রহমান শামীম, লুটন কাউন্সিলের মেয়র সৈয়দ মহিবুল হাসান, খন্দকার ট্রাস্ট ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সুফি মিয়া খন্দকার, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ব্যরিস্টার তারেক চৌধুরী, চুনারুঘাট এসোসিয়েশনের সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি গাজিউর রহমান গাজি, শায়েস্তাগঞ্জ এসোসিয়েশনের সভাপতি ও গ্রেটার সিলেট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের নর্থইস্ট রিজিওনের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট মীর গোলাম মোস্তফা, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও গবেষক মতিয়ার চৌধুরী, গিয়াস রিজিয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান দানবীর গিয়াস উদ্দিন, ইয়ুথ এসোসিয়েশন অব হবিগঞ্জ ইউকে’র আহবায়ক চৌধুরী নিয়াজ মাহমুদ লিঙ্কন ও সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক সাধারন সম্পাদক শামসুল ইসলাম মঞ্জু, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ম্যানচেস্টারের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মোরতাহীন বিল্লাহ জুয়েল, রুহান চৌধুরী প্রমুখ। এছাড়ও আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লোকজন। হবিগঞ্জ ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি বিপ্লব পাল অপ্রচলিত হবিগঞ্জই আঞ্চলিক শব্দের সন্ধানে টেবিলে টেবিলে ঘুরে সবাইকে তাদের জানা আঞ্চলিক শব্দ জিজ্ঞেস করেন এবং বাবা মা দেরকে তাদের বাচ্চাদের সাথে হবিগঞ্জই আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলার উৎসাহ দেন। মধ্যান্নভোজের পরপর শুরু হয় সংগীতানুষ্টান। প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ও স্বনামধন্য ব্যান্ড সংগীত শিল্পী আদিত্য সাদির পরিকল্পনায় এবং গীতিকার ও টিভি উপস্থাপক জাহাঙ্গীর রানার পরিচালনায় শুরু হয় সংগীতানুষ্ঠান। সংগীত পরিবেশন করেন তানিশা চৌধুরী, রাদিয়া গুলজান, নুরজাহান শিপ্লী, পরশমনি, কুতুব আফতাব, মীর গোলাম মোস্তফা। বিশেষ আকর্ষন ছিল বাংলাদেশের মিউজিক লিজেন্ড তপন চৌধুরীর পরিবেশনা। কানাডা থেকে আগত তপন চৌধুরী হবিগঞ্জের প্রতি শ্রদ্ধা জানান হবিগঞ্জের কৃতিসন্তান সুবির নন্দীর গান গায়। অনুষ্টানের সর্বশেষ পর্বে ছিলো আকর্ষণীয় রেফেল ড্র যাতে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন বিভিন্ন ট্রাস্টি বৃন্দ। তার মধ্যে দিয়েই অনুষ্টানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন সংগঠনের চেয়ারপারসন ও অনুষ্ঠানের কথক দেওয়ান সৈয়দ রব মোর্শেদ।

প্রথম পাতা