৩ মাস পর পুণরায় অপারেশন ॥ গৃহবধু জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে ॥ শহরে চাঁদের হাসি হাসপাতালে সিজারের সময় রোগীর পেটে তোয়ালে রেখে সেলাই!
তারিখ: ২৫-নভেম্বর-২০১৭
জাকারিয়া চৌধুরী ॥

*দায়ভার নিতে রাজি নয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ * ডাঃ এসকে ঘোষ বললেন, ‘ভুলবশত হয়ে থাকতে পারে’

হবিগঞ্জ শহরে ব্যাঙ্গের ছাতার মত গজিয়ে উঠছে মিনি হাসপাতাল ও ক্লিনিক। আর এসব ক্লিনিকগুলোতে অপচিকিৎসারশিকার হচ্ছে সাধারণ জনগণ। এরই ধারাবাহিকতায় শহরের চাঁদের হাসি হাসপাতালের ডাক্তারের অপচিকিৎসারশিকার হয়েছে সাধারণ এক গৃহবধু। মল্লিকা দাস (৩৮) নামে ওই গৃহবধুর সিজার করানো সময় পেটে তোয়ালে রেখেই সেলাই করে দেন ওই ডাক্তার। পর্যায় ক্রমে ধীরে ধীরে অসুস্থ হতে থাকে সে। পরে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর গতকাল শুক্রবার বিকেলে প্রায় ৩মাস পর পুনরায় অপর একটি ক্লিলিকে অপারেশন করে বাহির করা হয় তোয়ালেটি। এমতাবস্থায় মল্লিকা দাস নামে ওই গৃহবধু এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে। তবে এসব কর্মকান্ডের পরও দায় সারা ভাব করছে চাদের হাসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সচেতন মহল। গৃহবধু মল্লিকা দাস আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও গ্রামের সঞ্জিব সরকারের স্ত্রী। তারা বর্তমানে শহরের শায়েস্তানগর এলাকার বাসিন্দা। এ ব্যাপারে মল্লিকা দাসের স্বামী সঞ্জিব সরকার সমাচারকে জানান, গত ২৩ আগস্ট তার স্ত্রী কে সিজার করানোর জন্য শহরের চাঁদের হাসি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিয়মানুযায়ী ভর্তি করানো হয়। ঐদিনই চাঁদের হাসি হাসপাতালের ডাক্তার ডাঃ এসকে ঘোষকে দিয়ে সিজার করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সিজারের সময় মল্লিকার পেটের ভেতরে একটি তোয়ালে রেখেই সেলাই করে দেন ডাক্তার। এক পর্যায়ে মল্লিকাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সিজারের কয়েকদিন পর থেকেই পেটের ভেতরে ব্যাথা অনুভব করতে থাকে সে। দিন যত গড়ায় ব্যাথা তত বাড়তে থাকে। প্রচন্ড ব্যাথা অুনভব করায় বেশ কয়েকদিন পর আবারও চাদের হাসি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এসময় ডাক্তার মল্লিকাকে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষায় তার পেটের ভেতরে কিছু রয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয়। এক পর্যায়ে অভিজ্ঞ ডাক্তার কর্তৃক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর গতকাল শুক্রবার বিকেলে ডাক্তার আবুল কালামের পরামর্শে এবং সে নিজেই পুনরায় শহরের সিনেমহল এলাকার হেলথ কেয়ার ক্লিনিকে অপারেশন করেন। অপারেশনের এক পর্যায়ে মল্লিকার পেটের ভেতর থেকে একটি তোয়ালে উদ্ধার করা হয়।

এদিকে, অপারেশন শেষে পেটের ভেতর থেকে উদ্ধার হওয়া পুরো একটি তোয়ালে দেখে হতভম্ব হয়ে পরে তার স্বজনরা। এসময় তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং পুর্বের ঘটনার সাথে জড়িত ডাক্তার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি জানান।

এ ব্যাপারে ডাঃ এসকে ঘোষ এর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমনটা’ত হওয়ার কথা নয়। তবে ভুল বশত হয়ে থাকতে পারে।