জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ॥ চলতি বছরই জাতীয় সংসদ নির্বাচন
তারিখ: ১৩-জানুয়ারী-২০১৮
দিদার এলাহী সাজু ॥

সব দলকে আগামী নির্বাচনে অংশ গ্রহনের আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে আবারও তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সংবিধান মেনে, অর্থাৎ তার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনেই চলতি বছরের শেষের দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি আশা করি, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত সকল দল আগামী সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেবে এবং দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে সমুন্নত রাখতে সহায়তা করবে।”দশম সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের চার বছর পূর্তিতে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় জাতির উদ্দেশে দেয়া টেলিভিশন ভাষনে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারী স্যাটেলাইট চ্যানেল তার এ ভাষণ সম্প্রচার করে।

জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০১৩ সালের মতই নির্বাচনের আগে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের মাধ্যমে একটি ‘নির্বাচনকালীন সরকার’গঠন করা হবে। সেই সরকার নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনকে সর্বোতভাবে সহায়তা দিবে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে ২০১৬ সালের ১৫ ফেব্র“য়ারি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। নতুন কমিশন ইতোমধ্যে দুটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের বেশ কিছু নির্বাচন ‘সুষ্ঠুভাবে’সম্পন্ন করে ‘জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংস আন্দোলন এবং ভোটের দিন ও আগে-পরে ব্যাপক সহিংসতার কথা জাতি নিশ্চয়ই ভূলে যায়নি। তাই জাতিকে আগামী নির্বাচন নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্বাধীনতার ৪৭ বছর অতিক্রান্ত হতে চলেছে। আমরা আর দরিদ্র হিসেবে পরিচিত হতে চাই না। আমরা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বাঁচতে চাই। এসব যদি আপনাদের চাওয়া হয়, তাহলে আমরা সব সময়ই আপনাদের পাশে আছি”। বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যের কথাও তিনি এ ভাষণে আবার তুলে ধরেন।

উল্লেখ্য, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিন মেয়াদে ১৪ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত সরকারের নেতৃত্ব দেয়ার পর আওয়ামী লীগ নির্বাচনে হেরে গেলে শেখ হাসিনা হন বিরোধদলীয় নেতা। এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নবম সংসদ নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে জয় পায় আওয়ামীলীগ। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে গঠিত হয় মহাজোট সরকার। এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাতে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামীলীগ। নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় ৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। তাদের ভোট বর্জন ও প্রতিহতের হুমকিতে আন্দোলনের মধ্যেই ১২ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠন করেন শেখ হাসিনা।

প্রথম পাতা