পিতা-পুত্রের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি তদন্তের দাবী ॥ বানিয়াচঙ্গে মসজিদ ও মাদ্রাসার নামে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ
তারিখ: ২৩-এপ্রিল-২০১৮
আখলাছ আহমেদ প্রিয় ॥

বানিয়াচং উপজেলার পুকড়া ইউনিয়নের কাটখাল গ্রামে মাদ্রাসার নামে ইসলাম প্রচারের নাম ভাঙ্গিয়ে বিদেশের মুসল্লিয়ানের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় পিতা-পুত্রের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর পক্ষে ওই গ্রামের এক ব্যক্তি জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেয়ায় দৌড়-ঝাপ শুরু করেছে কাজী আবুল ফজল ও তার পুত্র কাজী বশির আহমেদ। মসজিদ ও মাদ্রাসায় পরিচালনা কমিটি না দিয়ে তারাই নিজেরাই এর পরিচালনা করে আসছেন এবং বিভিন্ন স্থান থেকে টাকা এনে আত্মসাত করছেন। এ বিষয়ে কাজী আবুল ফজল ও তার পুত্র কাজী বশির আহমেদ তাদের পঞ্চায়েতের মুরুব্বীয়ানদেরকে তোয়াক্কা করছেন না বলে জানান এলাকাবাসী। শুধু তাই নয়, মাদ্রাসায় পড়ানোর নামে ছাত্রদের কাছ থেকে প্রতিমাসে ৫শ-১শ টাকা  করে হাতিয়ে নিচ্ছে ওই পিতা-পুত্র। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া। দু-পক্ষের লোকজনের মধ্যে সৃষ্টি হচ্চে উত্তেজনা। স্থানীয়রা জানান, ২০০৪ সালে কাটখাল গ্রামে এবতেদায়ী মাদ্রাসা ফয়েজে মদিনার নাম দিয়ে মাদ্রাসা চালিয়ে আসছেন কাজী আবুল ফজল ও তার পুত্র কাজী বশির আহমেদ। পরে তারা মাদ্রাসার নামে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, কাতারসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে ধর্মপ্রান মুসল্লীদের কাছ থেকে ইসলাম প্রচারের নাম ভাঙ্গিয়ে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করছেন। মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির না থাকার সুধাদে ওই টাকাগুলো তারা নিজেরাই আত্মসাত করছেন। যে কারণে ওই টাকার কোন হদিস পাননি এলাকাবাসী।  ইসলামী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর কিশোর-কিশোরী প্রকল্প থেকে প্রতি মাসে টাকা উত্তোলন করছেন অথচ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকেও টাকা নিচ্ছেন তারা। এছাড়াও ওই পিতা-পুত্র গ্রামে মসজিদ স্থাপন করে এতেও রাখেননি পরিচালনা কমিটি। ২-৩ বছর পূর্বে নিজের আত্মীয়-স্বজনকে মসজিদটি ওয়াক্ফ করে দিলেও পরীবর্তিতে আবার নিজেদের মধ্যে নিয়ে যান। পরিচালনা কমিটির দেয়ার কথা বললেই মসজিদটি তালাবদ্ধ করবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন মুসল্লিয়ানদের। এতে করে কিছু কিছু মুসল্লিয়ানদের প্রতিবন্ধিকতা সৃষ্টি করছেন। এর প্রতিকার চেয়ে এবং তাদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সুষ্টু তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়ে ওই গ্রামের মৃত ইদ্রিছ আলীর পুত্র আব্দুল জব্বার হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ-প্রতিক্রিয়া। গ্রামের অনেকেই ফুসে উঠেছেন তাদের বিরুদ্ধে। লিখিত অভিযোগের পর ওই পিতা-পুত্র গ্রামের মুরুব্বীয়ানের কাছে ধর্না ধরলেও কোন সালিশ বৈঠক বসাতে পারছেন বলেও জানান এলাকাবাসী। তারা বিষয়টি সুষ্টু তদন্তের জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবী জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে ওই গ্রামের আব্দুস সহিদ জানান, মসজিদ ও মাদ্রাসার নামে টাকা আত্মসাতের কথা শুনেছেন। বিষয়টি নিয়ে একটি অভিযোগও হয়েছে। মসজিদ ও মাদ্রাসার কোন কমিটি না থাকায় ওই টাকা গুলোর হদিস পাওয়া যায়নি। দরবেশ আলী জানান, মসজিদ ও মাদ্রাসার ওই পিতা-পুত্র নিজেরাই পরিচালনা করে আসছেন। প্রায় ৩ বছর পূর্বে তাদের আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে ওয়াক্ফ করে দিলেও পরিবর্তীতে আবার নিয়ে যান। ফলে মাঝে মধ্যে প্রতিবন্ধিকতা সৃষ্টি হচ্ছে। আব্দুল জব্বার জানান, মসজিদ ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি না দিয়ে তারা এর নামে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করছে। মসজিদে তার  মামা সহযোগিতা করেছেন অথচ ওই পিতা-পুত্র বলছে ওই মসজিদ তালাবদ্ধ করে রাখবে। এতে এলাকাবাসী ফুসে উঠেছেন। স্থানীয় মেম্বার জয়নাল আবেদীন জানান, বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। এ নিয়ে একটি অভিযোগও হয়েছে। ঘটনাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে। কিছু দিনের মধ্যেই বিষয়টি সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদি।

প্রথম পাতা
শেষ পাতা