সংবাদ সম্মেলনে সমাজচ্যুত করা বৃদ্ধের ফরিয়াদ ॥ অসুস্থ হলে আমার হাসপাতালে যাওয়ার কোন উপায় নেই
তারিখ: ১৯-সেপ্টেম্বর-২০১৮
স্টাফ রিপোর্টার ॥

বানিয়াচংয়ে সরকারী মৎস্য প্রকল্প থেকে চাঁদা না দেয়ায় গ্রাম্য সর্দার আমজাদ হোসেন সমাজচ্যুত করেছেন ফুল মিয়া ও তার ভাই মোতাহের মিয়াকে। সমাজচ্যুত করেই ক্ষান্ত হননি, তাদেরকে হয়রানী করতে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে অভিযোগও দিচ্ছেন। নিরুপায় হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই হয়রানী থেকে বাচার আকুতি জানিয়েছেন ফুল নামে ওই বৃদ্ধ। মঙ্গলবার দুপুরে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ফুল মিয়া বলেন, আমােেক সামজচ্যুত করায়, আমার বাড়ির মেয়ে লোক বাহিরে চলাফেরা করতে পারেনা। আমার বাড়িতে কোন কাজের লোক আসেনা। যদি কেউ আসে তাকে জরিমানা করা হয়। আমার অসুস্থ হলে হাসপাতালে যাওয়ারও কোন উপায় নেই। বাজারে আসা যাওয়াও করতে পারিনা। যে কোন সময় আমাকে হত্যা করতে পারে সর্দার আমজাদ হোসেন ও তার লোকজন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশিল একজন মানুষ হিসাবে আইন মেনে চলতে পছন্দ করি। কিন্তু আইনগতভাবে আমার সাথে কুলিয়ে উঠতে না পেরে উক্ত আমজাদ হোসেন গংরা আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমজাদ হোসেন, আলী হোসেন, আলতাব হোসেন, আব্দুর রহমানরা সবাই মিলে আমি এবং আমার ভাই মোতাহের মিয়াকে সমাজচ্যুত করে। আমি এ ব্যাপারে প্রতিকার ছেয়ে পুলিশ, প্রশাসন এবং মানবাধিকার সংগঠন এবং সাংবাদিকদের স্মরণাপন্ন হই। বিষয়টি নিয়ে মিডিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এতে করে আরও ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে আমজাদ হোসেন গংরা। তারা রবিবার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ এবং স্মারকলিপি প্রদান করে। একের পর এক এই ধরনের অমানবিক ঘটনায় আমি মর্মাহত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্থ হয়ে আজ আমি আপনাদের স্মরণাপন্ন হয়েছি। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আমজাদ হোসেন গংরা যে কারণে বিক্ষুব্ধ হয়ে একের পর এক ঘটনা এবং নাটক সাজাচ্ছে তার মূল কারন হল- পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুটকী নদী প্রকল্পের ইজারা। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উক্ত প্রকল্প বিগত প্রায় ১৫ বছর যাবত ইজারা নিয়ে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মৎস্য চাষ ও সংরক্ষণ করে আসছেন জাহেদুল আলম চৌধুরী জাক্কু। আমি আম মোক্তার নামা বলে উক্ত প্রকল্প বিগত ১২ বছর যাবত দেখাশোনা করে আসছি। কিন্তু উক্ত প্রকল্প ১৪২৫-১৪২৯ বাংলা পর্যন্ত ইজারা নবায়নের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পাদন করার পরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এবং এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হলে জাহেদুল আলম চৌধুরী জাক্কু মহামান্য হাইকোর্টে রীট পিটিশন নং ৭৩৩৫/১৮ দায়ের করিলে মহামান্য হাইকোর্ট সংশি¬ষ্ট কতৃপক্ষকে ৪ সপ্তাহের রুল ইস্যু করেন এবং উক্ত প্রকল্পে ৬ মাসের স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। আমি আম মোক্তার নামা বলে উক্ত প্রকল্পে মাছের পোনা অবমুক্ত করা, দল, কাটা দিয়ে অভয়াশ্রম তৈরি করা, পাহারাদার নিয়োগ এবং অন্যান্য খাতে প্রায় ১০/১২ লাখ টাকা ব্যয় করি। এরই মধ্যে আমজাদ হোসেন আমার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিয়ে আমার প্রকল্পের মাছ লুটপাটসহ বিভিন্নভাবে হয়রানী করার হুমকি দেয়। স্মারকলিপিতে তারা বলে, আমি নাকি খাল দখল করে এলাকাবাসীর জমি চাষাবাদে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছি। অথচ খালের পাশের জমি আমাদের। আর খালে আমরা দীর্ঘদিন যাবত বৈজ্ঞানিক উপায়ে মাছ চাষ ও আহরণ করে আসছি। খালে মাছ চাষে জমির আবাদ কিভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় সেই প্রশ্ন আমার। বিক্ষোভ সমাবেশের ব্যানারে আমাকে অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী ও দখলবাজ এবং আমার ভাই মোতাহেরকে জুয়াড়ি বলা হয়েছে। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমার কোন অবৈধ সম্পদ নেই বা কোন দখল করিনি। আমার ভাইও জুয়াড়ি নয়। বরং আমজাদ হোসেন এর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলা রয়েছে।তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, মাদক ব্যবসা, জুয়ার আসর বসানোসহ সরকার বিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ডের স্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, আমজাদ হোসেন মহল¬ার সর্দার হয়ে নিজস্ব বাহিনী ঘরে তোলে এলাকায় রাম রাজত্ব কায়েম করেছে। তার ভয়ে কেউ কোন কথা বলতে পারে না। মহল্ল¬ার তহবিলে প্রতিবছর বিল ইজারা থেকে ১৫/২০ লাখ টাকা আয় হয়। সে উক্ত টাকা ৩শ’ পরিবারে বন্টন করে বাকী ৫/৭ লাখ টাকা বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে আত্মসাত করে। কিন্তু এর প্রতিবাদ করতে কেউ সাহস পায় না। সে সুটকী প্রকল্পের সরকারি ইজারা এবং আদালতের আদেশ থাকার পরও প্রকাশ্যে কিছুদিন পূর্বে জনসম্মুখে নিলামের মাধ্যমে ইজারা প্রদান করে। লীজ গ্রহীতা চাঁনপাড়া গ্রামের জিতু মিয়ার টাকাও আমজাদ হোসেন খরচ দেখিয়ে আত্মসাত করে। সরকাার সম্পত্তি এবং আদালতের স্পষ্ট আদেশ থাকার পরও তার এই ইজারা প্রদান আদালত অবমাননার সামিল এবং সরকার বিরোধী অপরাধ হিসাবে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হলেও সে রয়েছে ধরা ছোয়ার বাহিরে।

প্রথম পাতা