আইডিয়া’র উদ্যোগে সংসদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক ও নির্বাচনী কার্যক্রমের স্ব-পক্ষে ঐক্যমত হবিগঞ্জের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ
তারিখ: ৭-ডিসেম্বর-২০১৮
প্রেস বিজ্ঞপ্তি ॥

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা ও নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনার প্রতিশ্র“তি বদ্ধ হলেন হবিগঞ্জ জেলার জেষ্ঠ্য পর্যায়ের আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ। হবিগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবে ইউএসএআইডি এবং ডেমোক্রাসি ইন্টারন্যাশনাল-এর সহযোগিতায় আইডিয়া’র উদ্যোগে “শান্তিতে বিজয়” নামে একটি সামাজিক প্রচারাভিযান মূলক প্রকল্প’র অবহিতকরণ সভার আয়োজন করা হয়। ইউএসএআইডি এবং ডেমোক্রাসি ইন্টারন্যাশনাল-এর যৌথ অর্থায়নে এবং ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের উবসড়পৎধপু, ঐঁসধহ জরমযঃং ধহফ খধনড়ৎ (উজখ) ধহফ ঝঃৎবহমঃযবহরহম চড়ষরঃরপধষ খধহফংপধঢ়ব (ঝচখ) প্রকল্প দুটির আওতায় “শান্তিতে বিজয়”ক্যাম্পেইনটি পরিচালিত হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ও সহনশীল রাজনীতির চর্চা বৃদ্ধিতে, “শান্তিতে বিজয়” ক্যাম্পেইনটি বাংলাদেশের সকল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, নির্বাচনী প্রার্থী এবং সাধারণ জনগণকে সচেতন করবে ও তাঁদের অংশগ্রহণ করার সুযোগ তৈরি করবে। সভায় সঞ্চলনা ও স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন, আইডিয়া’র নির্বাহী পরিচালক নজমুল হক, প্রকল্পের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন ডেমোক্রাসি ইন্টারন্যাশনাল-এর রিজিওনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ফরহাদ আহমদ, অনুষ্ঠানে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, এনজিও প্রধান, তরুন, যুব সমাজ, সমাজকর্মী, সাংস্কৃতি ককর্মীবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক বৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সিভিল সুশীল সমাজের সদস্যবৃন্দ, নারী নের্তৃবৃন্দ, আইনজীবী এবং সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনের আগে ও পরে যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকে, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সহাবস্থান, নির্বাচনের দিন, নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক নের্তৃবৃন্দ ও উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ”শান্তিতে বিজয়” প্রকল্পের সমর্থনে সহমত পোষন করেন এবং এতদসংক্রান্ত একটি শপথ পাঠ করেন।

অবহিতকরন সভায় বক্তাদের মধ্যে আইডিয়া, সিলেট-এর নির্বাহী পরিচালক নজমুল হক বলেন, এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দলসহ সকলকে সচেতন থাকা এবং প্রত্যেকের অবস্থান থেকে সহযোগিতা করা। তিনি আইডিয়া’র পক্ষে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ সচিবালয়-এর  অবসর প্রাপ্ত যুগ্ম সচিব মোঃ ফজলুর রহমান বলেন, “আমি পেশাগত জীবনে অনেক নির্বাচন প্রত্যক্ষ করেছি এবং পরিচালনায় যুক্ত ছিলাম। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি বেশিরভাগ মানুষ এবং রাজনৈতিক কর্মী শান্তিপূর্ণ পরিবেশের পক্ষে থাকেন। কিছু অতি উৎসাহী মানুষ এবং রাজনৈতি কর্মী শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও নিরাপত্তা বিগ্নিত করে থাকেন। জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ উৎসবমূখর পরিবেশে অংশগ্রহণ করে থাকেন আমরা তাদের এই প্রতি পঞ্চবার্ষিক উৎসব যাতে শান্তিপূর্ণ হয় সেজন্য সচেষ্ট থাকতে হবে।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ জাতীয় কমিটির সদস্য শহিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন সমগ্র বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে কিন্তুু ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমরা সহিংসতা লক্ষ্য করেছি। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে বলতে পারি আমরা আমাদের কর্মীদেরকে যেভাবে গাইড করব তারা সেভাবে আচরণ করবে। আসুন আমরা সবাই মিলে অপপ্রচার ও প্রতিহিংসাকে না বলি আর শান্তিতে বিজয়কে সমর্থন করি। রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে জনগণের কাছে আমাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। আমি হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ এর পক্ষ থেকে অঙ্গীকার করছি নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকব।

হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি এডভোকেট মনজুর উদ্দিন আহমেদ বলেন, হবিগঞ্জে বহু নির্বাচন হয়েছে কোন নির্বাচনেই কোরকমের সহিংসতা ঘটেনি। এই জেলায় সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে রয়েছে পাস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ। আমি শুধু বলব যারা নির্বাচনী দায়িত্বে আছেন আপানারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করুন। মামলা এবং ওয়ারেন্ট ছাড়া কোন মানুষকে গ্রেফতার করবেননা। আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি হবিগঞ্জ জেলায় শান্তিতে বিজয় প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য। আমি পরামর্শ দিব উপজেলা পর্যায়ে আপনারা লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে প্রার্থী ও ভোটারদের নির্বাচনকালীন সময়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সচেতন করুন। হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আমিও অঙ্গীকার করছি আমাদের দল নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সহায়তা করব।

হবিগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ নাজিম উদ্দিন বলেন, আমি কোন রাজনৈতিক বক্তব্য দিব না। উপস্থিত সকল রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও ভোটারদেরকে আহবান জানাব নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে আমরা নির্বাচন আচরণ-বিধি মেনে চলার জন্য। আমরা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ। নির্বাচন আচরণ-বিধি মেনে চললে শান্তিতে বিজয় প্রকল্প সফল হবে।

হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারী কলেজ-এর সাবেক অধ্যক্ষ ইকরামূল ওয়াদুদ বলেন, উপস্থিত সবাইকে দেখে আমরা অন্তত এটা বলতে পারি, হবিগঞ্জের মানুষ শান্তির পক্ষ। শান্তিতে বিজয় স্লোগানকে আমরা হবিগঞ্জ জেলাবাসী সমর্থন জানাচ্ছি। যেভাবে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নের্তৃবৃন্দ একজন অন্যজনের প্রতি শ্রদ্ধারেখে বক্তব্য দিয়েছেন এবং অঙ্গীকার করলেন আপনাদের দল হবিগঞ্জে নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে বদ্ধপরিকর। আশা করছি শান্তিতে বিজয়ের মাধ্যমে আমাদের বাংলাদেশ জয়ী হবে এবং সাথে সাথে আমরাও জয়ী হব। পরিশেষে শান্তিতে বিজয়ের পক্ষে উপস্থিত সকল অংশগ্রহণকারীদেরকে নিয়ে একটি হবিগঞ্জ জেলা পিস ফোরাম গঠন করা হয় এবং শান্তিতে বিজয়ের পক্ষে একটি শপথ উপস্থিত সকল অংশগ্রহণকারী পাঠ করেন। ‘শান্তিতে বিজয়’ ক্যাম্পেইনের মূল লক্ষ্য হল দেশের ১৬ কোটি মানুষের জন্য শান্তিপূর্ণ ও সহনশীল রাজনীতির পক্ষে একাত্ম হওয়ার মঞ্চ তৈরি করা। রাজনৈতিক নের্তৃবৃন্দের সাথে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষের মতবিনিময়ের সুযোগ তৈরি করার জন্য সারা দেশে ‘শান্তিতে বিজয়’ ক্যাম্পেইনের আওতায় আয়োজিত হচ্ছে শান্তি -শোভাযাত্রা, নির্বাচনী প্রার্থীদের সাথে মুখোমুখি সংলাপ, রাজনৈতিক নের্তৃবৃন্দের সাথে গোলটেবিল বৈঠক ও কর্মশালা।

প্রথম পাতা