সামান্য কিছু সুদি ঋণের কিস্তির টাকার জন্যই হত্যা করা হয়েছে বানিয়াচং উপজেলার কাউরিয়াকান্দি গ্রামের নিরীহ সাজেল মিয়াকে। শুধু তাই নয়, আলোচিত এ হত্যাকান্ডের পর ঘটনাটিকে দূর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়ারও অপচেষ্টা করে ঘাতকরা। ঘটনার ১০ মাস পর আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক এ তথ্যই জানিয়েছে ঘাতক মিজান। গতকাল বুধবার বিকেলে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া ঘাতক মিজানের জবানবন্দির বরাত দিয়ে প্রেস ব্রিফ্রিং-এ সাংবাদিকদের এমন তথ্যই জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। তিনি জানান, শহরতলীর আলমবাজারের তাজ উদ্দিনের নিকট থেকে কিস্তিতে পরিশোধের শর্তে ১০ হাজার টাকা ঋণ নেন সাজেল মিয়া। কিন্তু টাকা সময় মতো পরিশোধ না করায় তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ কারনে ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাজেল মিয়াকে টমটম গ্যারেজে ডেকে আনেন তাজ উদ্দিন। এ সময় গ্যারেজে পূর্ব থেকেই উপস্থিত ছিল বানিয়াচং উপজেলার নয়াপাতারিয়া গ্রামের সাদ্দাম হোসেন, টলিয়া গ্রামের রুস্তম আলী, মিজান ও মহিউদ্দিন। তখন সুদের টাকার দেনা-পাওনা নিয়ে তাজ উদ্দিন ও সাজেল মিয়ার মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে লোহার পাইপ দিয়ে সাজেল মিয়ার মাথায় আঘাত করে তাজ উদ্দিন। এতে সে মাটিতে লুঠে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে উল্লেখিতরা গুরুতর অবস্থায় সাজেলকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে ভর্তির সময় বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনা বলে নাম-ঠিকানা রেজিষ্ট্রিভুক্ত করে তারা। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাজেল মিয়াকে মৃত ঘোষনা করেন। এ সময় তাজ উদ্দিন, মিজানসহ উল্লেখিতরা কৌশলে হাসপাতাল থেকে সটকে পড়ে।
তিনি আরও জানান, জবানবন্দি আদায়ের পর মিজানকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরদিকে, মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, সাজেল মিয়া হত্যাকান্ডের পর তার মা বাদী হয়ে তাজ উদ্দিন, মিজান, মহিউদ্দিন, রুস্তম আলী, সাদ্দামকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অবশেষে গত ২১ মে সন্ধ্যায় আলমবাজার থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আসামী মিজানকে গ্রেফতার করে। সে কাউরিয়াকান্দি গ্রামের শফিকুল ইসলামের পুত্র।