লাখাইয়ে চাঞ্চল্যকর হেকিম হত্যা মামলা মামলা তুলে নিতে বাদী ও তার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে আসামী তৌহিদ মুহুরি
তারিখ: ২০-জুলাই-২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার ॥

লাখাই উপজেলার মুড়াকরিতে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয় আব্দুল হেকিম (২৬) নামে এক ব্যবসায়ীকে। পরে এ ঘটনায় মামলা করেও বিপাকে পড়েছেন নিহতের মা আছমা বেগম। মামলা তুলে নিতে বাদী ও তার পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে প্রাণনাশের হুমকি ধামকি অব্যাহত রেখেছে আসামী তৌহিদ মুহুরি ও তার লোকজন। তাই নিরুপায় হয়ে লাখাই থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একে একে ৩টি জিডি করেছেন তিনি। এদিকে, গত বৃহস্পতিবার হত্যা মামলার স্বাক্ষী ছকিনা আক্তার ও নিহতের ভাই মিরানকে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মারপিঠ করেছে তৌহিদ মুহুরি পুত্র ইসরাইল ফুরুক ও রুহুম আমিন। একই সাথে তাদেরকে স্বাক্ষী না দিতে হুমকিও দেয় তারা। জানা যায়, লাখাই উপজেলার মুড়াকরি গ্রামের মৃত আছকির মিয়ার পুত্র তৌহিদ মুহুরির সাথে একই গ্রামের মৃত লাল মিয়ার নামীয় জমি নিয়ে তার ছেলে আলমগীর মিয়ার সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়। পরে স্থানীয় মাতব্বরা বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন। কিন্তু তারা বিষয়টি সমাধান করতে পারেননি।

২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর সকালে মৃত অহিদ মিয়ার পুত্র আব্দুল হেকিমকে রাস্তায় একা পেয়ে তৌহিদ মুহুরি গংরা তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজনের হামলায় টেটাবিদ্ধ হন আব্দুল হেকিম। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার একদিন পর ২৪ অক্টোবর নিহতের মা আছমা বেগম বাদি হয়ে লাখাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বাদীর অভিযোগ মামলা দায়েরের পর আসামিরা এলাকায় ঘুরে বেড়ালো পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেনি। পরে একই বছরের ১৯ মে ১১ আসামি হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন। পরবর্তীতে আরো ১৬ আসামি হাইকোর্ট থেকে ৪ সপ্তাহের জামিন নিয়ে বেড়িয়ে আসে।

এদিকে, আসামিরা জামিন নিয়ে আসার পর থেকেই অদ্যবদি পর্যন্ত বাদি পক্ষকে মামলা তুলার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। এমনকি একাধিকবার বাদি পক্ষের উপর হামলাও চালিয়েছে আসামি পক্ষের লোকজন। এ ব্যাপারে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে এবং আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লাখাই থানায় তিন দফায় পৃথক তিনটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মামলার বাদি আছমা বেগম। এরমধ্যে প্রথম জিডি করেন ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর। ২য় জিডি করেন-চলতি বছরের ২ মার্চ এবং ৩য় জিডিটি করেন, ৫ জুন। জিডি করেও নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা পাচ্ছেন না বাদি ও স্বাক্ষীরা। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কোন ধরণের কাজ করছে না বলে অভিযোগ করছেন মামলার বাদি। এ অবস্থায় বর্তমানেও বাদি পক্ষের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন তারা। বাদি পক্ষের অভিযোগ, তৌহিদ মুহুরি প্রকাশ্যে বাদি পক্ষের লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। মামলা তুলে না নিলে আরও খারাপ কিছু হতে পারে বলেও বিভিন্ন সময় হুশিয়ারি দিচ্ছে সে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন বাদী পক্ষ।

প্রথম পাতা