অন্তহীন সমস্যার গ্যাঁড়াকলে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন
তারিখ: ১৯-অক্টোবর-২০১৯
দিদার এলাহী সাজু, হবিগঞ্জ/আব্দুল হক রেনু, শায়েস্তাগঞ্জ ॥

টিকিট কালোবাজারি ও ছিনতাইকারীদের লাগামহীন দৌড়াত্ম ॥ পরিত্যক্ত ভবনে

অনৈতিক কার্যকলাপ ॥ বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকট ॥ সরকারী শৌচাগারে তালা

অন্তহীন সমস্যার গ্যাঁড়াকলে বন্দি জেলার একমাত্র রেলওয়ে জংশন শায়েস্তাগঞ্জ। টিকিট কালোবাজারি ও ছিনতাইকারীরা খুঁড়ে-খুঁড়ে খাচ্ছে যাত্রীসেবা। তাছাড়া পরিত্যাক্ত ভবনে অনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়টিও প্রায় ‘ওপেন সিক্রেট’। এ অবস্থায় প্রতিনিয়ত চরম দূর্ভোগ ও সীমাহীন হয়রানীর শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার যাত্রী। পাশাপাশি বিপথগামী হচ্ছে এলাকার যুব সমাজ। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, শায়েস্তাঞ্জ জংশন থেকে আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেনে প্রতিদিন ঢাকা-সিলেট-চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়ত করে থাকেন হাজারো যাত্রী। অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে টিকিট সংকটের কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের। এরই মাঝে আবার ‘মরার উপর খাড়ার ঘাঁ’ এর মত টিকিট কালোবাজারিদের লাগামহীন দৌড়াত্মে উঠছে নাভিঃশ্বাস। একদিকে, কতিপয় কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ভোরের আলো প্রস্ফ্রুটিত হওয়ার আগেই অতি সুকৌশলে টিকিট পৌছে যায় কালোবাজারিদের হাতে। ফলে নিরুপায় যাত্রীদেরকে একেকটি টিকিট কিনতে হয় দ্বিগুণ দামে। অন্যদিকে, টিকিট বরাদ্ধের অপ্রতুলতা তো লেগেই আছে। অতিগুরুত্বপূর্ণ এ স্টেশনটির জন্য প্রতিদিন মাত্র ২৪৪টি টিকিট বরাদ্ধ রয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই হাস্যকর। ফলে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়েও গন্তব্য স্থানের টিকিট পাননা সাধারণ যাত্রীরা। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে স্টেশনের প্ল¬াটফর্মটি পরিণত হয়েছে ছিনতাইকারীদের নিরাপদ অভয়ারণ্যে। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা। একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র এখানে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকলেও রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে রেলওয়ে প্রশাসন।

একাধিক যাত্রী অভিযোগ করে জানান, বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রায়ই স্টেশন মাস্টারকে খুঁজে পাওয়া যায় না। স্টেশনটিতে রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট। প্রায়ই বন্ধ থাকে ওয়েটিং রুম। পর্যাপ্ত ‘ওয়েটিং সিট’ না থাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় শত-শত যাত্রীদের। শুধু তাই নয়, সরকারী শৌচাগার গুলো সব সময়ই থাকে তালাবদ্ধ। এ অবস্থায় পাবলিক টয়লেটে লেগেই থাকে উপচে পড়া ভীড়। তাছাড়া স্থানে স্থানে স্তুপ করে রাখা ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধ ও প্ল¬াটফর্মের ভাংগা শেড দিয়ে পড়া বৃষ্টির পানির দূর্ভোগ অসহনীয় পর্যায়ে পৌছেছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, জংশনটির পরিত্যক্ত জমিতে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। এসব পরিত্যক্ত ভবনে চলে অনৈতিক কার্যকলাপ। বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও না জানার ভান করছেন সংশি¬ষ্টরা। এ অবস্থায় প্রতিনিয়ত চরম দূর্ভোগ ও সীমাহীন হয়রানীর শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার যাত্রী। পাশাপাশি বিপথগামী হচ্ছে এলাকার যুব সমাজ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্টেশন মাস্টার এ.বি.এম সাইফুল ইসলাম জানান, দায়িত্ব পালনে তার কোন ত্র“টি নেই। তবে তিনি অনৈতিক কার্যকলাপ ও ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলেও টিকিট কালোবাজারির বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি জানান, জনবল ও টিকিট সংকটের বিষয়টি উপর মহলে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।

প্রথম পাতা