ভূয়া এসপি রাহুলের বিরুদ্ধে ১২টি প্রতারণা মামলা ॥ বেরিয়ে আসছে অজানা কাহিনী
তারিখ: ২৩-জানুয়ারী-২০২০
স্টাফ রিপোর্টার ॥

ভূয়া পুলিশ সুপার (এসপি) সেজে প্রতারণা করে ঢাকায় আটক হওয়ায় হবিগঞ্জের নিলান্দ্রী শেখর রাহুল গোপের (৩৫) বিষয়টি নিয়ে জেলাজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। পাশাপাশি হতগম্ভ হয়েছেন প্রতারক রাহুলের এমন কর্মকাণ্ডে। রাহুলের পরিচিত অনেকে আবার তুলে ধরছেন তার অতিথের বিভিন্ন কু-কর্ম।

রাহুল বানিয়াচং উপজেলার পৈলারকান্দি ইউনিয়নের বিথঙ্গল গোয়াল হাটি গ্রামের অজিত ঘোপের ছেলে ও শহরের উত্তর শ্যামলীর বাসিন্দা। ভূয়া এসপির বিষয় ছাড়াও উঠে আসছে রাহুলের পুরনো অপকর্মের সাত-সতেরো। অপরদিকে তাকে আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ। রাহুলের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ঢাকাসহ বিভিন্ন থানায় ১২টি প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সে একাধিক মেয়ের সাথে বিয়ের নামে প্রতারণা করার অভিযোগও রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে ভয়-ভিতি দেখিয়ে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা।

এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি রাতে কুড়িলে অবস্থিত একটি হোটেল থেকে নারীসহ রাহুলকে আটক করে ভাটারা থানা পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে বাংলাদেশ পুলিশের আইডি, একটি নোকিয়া মোবাইল, একটি আইফোন, ১৯ লাখ টাকা ও একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই ভাটারা থানায় মামলা নং-৩১ (১৬-০১-২০২০), ধারা ১৭০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১৭১ ও মামলা নং-৩৫, ধারা ৪০৬/৪১৯/৪২০, তারিখ ঃ ১৯/০১/২০২০ইং রুজুক্রমে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

এ ব্যাপারে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান বলেন- ‘গত ১৪ জানুয়ারি হোটেল প্রগতি ইনে পুলিশের আইডি কার্ড দেখিয়ে এএসপি পরিচয়ে রুম ভাড়া নেয় অভিযুক্ত রাহুল গোপ। পরে ১৬ জানুয়ারি হোটেল কর্তৃপক্ষ ভাড়া চাইতে গেলে বিভিন্ন অজুহাত দেখাতে থাকে। সন্দেহ হলে ভাটারা থানা পুলিশকে খবর দেয় হোটেল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ হোটেলে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্তের পরিচয় জানতে চাইলে বিভিন্ন অজুহাত দেখাতে শুরু করে। এক পর্যায়ে তিনি ভূয়া পুলিশ পরিচয়ে হোটেলে অবস্থান করছেন বলে স্বীকার করে।’

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে ভুক্তভোগীরা থানায় এসে অভিযোগ করেছেন। রাহুলের বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমাণ্ড আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরো রহস্য বেরিয়ে আসবে। এছাড়া হবিগঞ্জ থানার পুলিশকেও খোঁজ খবর নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রাহুল ৬ মাস পূর্বে হবিগঞ্জ বাণিজ্যিক এলাকার উত্তরা কমপ্লেক্সের সংলগ্ন পূর্বে পুরান মুন্সেফীতে ৯০ লক্ষ টাকায় একটি ৩ তলা অট্টালিকা ক্রয় করে ওই ভবনটিকে ৫ তলায় রূপান্তরিত করে। অট্টালিকাটি বাংলাদেশ পুলিশের ডিজাইন ও রংয়ে দৃশ্যমান রয়েছে। যে কেউ দেখলে মনে হবে এটি পুলিশের কোন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার বাড়ি।

ভূয়া এএসপি রাহুল গোপ নিয়মিত হবিগঞ্জ যাতায়াত করতেন (পুলিশ ডিএমপি/পুলিশ এসএমপি) স্টিকার সম্ভলিত একটি বিলাশ বহুল গাড়ীতে। তার স্বীকারোক্তি মতে ঢাকার একটি বাসা থেকে পুলিশের বিভিন্ন পোশাক, সিল, জুতা, বেইজ, লঘু, বাশি, খেলনার পিস্তলসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে।

প্রথম পাতা