হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের সাবেক ওসি মানিকুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ
তারিখ: ৩-অগাস্ট-২০২১
স্টাফ রিপোর্টার ॥

 হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের সাবেক ওসি ও বর্তমানে রাজশাহী রেঞ্জের সিরাজগঞ্জ জেলায় কর্মরত ডিবি’র ওসি মানিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সিলেটে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান মামলার বাদী সুচনা বেগম (২৭)। চলতি বছরের ২০ মার্চ সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সিনিয়র জেলা জজ মো. মুহিতুল হক এনাম চৌধুরীর আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন সিলেট জেলার ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর এলাকার

মৃত মতিন মিয়ার মেয়ে সুচনা বেগম (২৭) নামের ওই তরুণী। এরপর বিচারক মামলাটি ৭ কার্যদিবসের মধ্যে অনুসন্ধানপুর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন।

মামলা সূত্র জানায়, হবিগঞ্জে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে অভিযুক্ত মানিকুল ইসলাম ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর কদমতলা এলাকায় বডি মেসেজ করতে তাহলিল ফিজিও থেরাপী সেন্টারে প্রায়ই যাওয়া আসা করতেন। সেখানে পরিচয় হয় ফিজিও থেরাপিস্ট এর সহকারী সূচনা নামের সুন্দরী তরুণীর সাথে। ওই সুন্দরী নারী সূচনা তাহলিল ফিজিও থেরাপী সেন্টারে থেরাপিস্ট এর সহকারী পদে অনুমান ৪ বছর ধরে কর্মরত। হবিগঞ্জে দায়িত্বের ফাঁকে মানিকুল ইসলাম তাজপুরে আত্মীয়তার সুবাদে প্রায় সময়ই তাজপুর গিয়ে ফিজিও থেরাপী সেন্টারে বডি ম্যাসেজ করতেন। এ সুবাধে মানিকুল ইসলাম সুচনাকে বিভিন্ন সময় অসামাজিক কাজের প্রস্তাব দেন। বিষয়টি সুচনা ফিজিও থেরাপী সেন্টারের পরিচালকে  অবগত করেন। এতে মানিকুল তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। ১৫ জানুয়ারি  রাত ৯টায় পরিকল্পিতভাবে থেরাপী রুমে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করেন ওসি মানিকুল। এক পর্যায়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় ওই তরুনী বাধা দিলে মানিকুল তাকে চর-থাপ্পর মেরে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই তরুণী মানিকুলের বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল  আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৩৬২-২১ইং। ওই তরুনী পুলিশের আইজিপি ও রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি ও সিরাজগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারের কাছেও এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর গত ১৭ জুলাই অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে ৫ সদস্য বিশিষ্ট  প্রতিনিধিদল তদন্ত করতে সিলেটে আসেন এবং ভুক্তভোগী তরুণীর সাথে কথা বলেন।

এ বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগটা ডিসিপ্লেন ২ শাখা অনুসন্ধান করছে’। জানতে চাইলে  তরুণীর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলা আনসার ও ভিডিপির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমা বেগম বলেন, ‘কাগজপত্র আসছে  নির্দিষ্ট সময?ের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে  প্রতিবেদন দাখিল করা হবে’।

এছাড়াও ওসি মানিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২০ আগস্ট চুনারুঘাট উপজেলার ইউসুফ আলী নামের এক ব্যবসায়ী তার স্ত্রীর সাথে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক ও চাঁদা দাবী এবং হত্যার হুমকীর অভিযোগ এনে স্বরাষ্টমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপি, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজিসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। তৎকালীন সময়ে ওসি মানিকুলের ক্রসফায়ারের ভয়ে সাংবাদিক সম্মেলনও করেন ইউসুফ আলী।