বানিয়াচংয়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর ॥ ১ মাসের বেতন স্থগিত
তারিখ: ১৬-সেপ্টেম্বর-২০২৪
স্টাফ রিপোর্টার ॥

 বানিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামী পরিতোষ গোপ নামে এক শিক্ষক কাণ্ডজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি স্থানীয় জগদানন্দ দাস মোহন্ত উচ্চ বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক ও পৈলারকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। গত ৫ আগষ্ট তিনি বিদ্যালয় থেকে সাধারণ ছুটি নেন। এর পর থেকে তিনি দীর্ঘ ২৫ দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। তবে ৫ আগষ্ট থেকে ২৯ আগষ্ট পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর রয়েছে তার। এমন ঘটনায় হতবাক বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা। এদিকে, তার নামে গত  আগষ্ট মাসের বেতনের বিল প্রস্তুত করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আগষ্ট মাসের বেতন স্থগিত করেছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি ও বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমান। এরপর থেকে বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। স্থানীয় সূত্র জানায়, বানিয়াচংয়ে গত ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধি ছাত্র আন্দোলনে থানার এসআই ও সাংবাদিকসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় একটি মামলায় আসামী হন পৈলারকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগর সভাপতি ও জগদানন্দ দাস মোহন্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পরিতোষ গোপ। গত ৫ আগষ্ট থেকে ২৯ আগষ্ট পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে গা ঢাকা দেন পরিতোষ গোপ। এদিকে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অশুক কুমার চক্রবর্তীকে বদলী করা হয়। এ সুযোগে সহকারী শিক্ষক পরিতোষ গোপের বাড়ির পাশে বিদ্যালয়টি থাকার সুযোগে রাতে যে কোন সময় বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। যদিও বিষয়টি জানতে পারেনি বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেখা রানী দাসসহ অন্যান্য শিক্ষকরা। যে কারনে গত  আগষ্ট মাসের অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে পরিতোষ গোপের বেতনের বিল প্রস্তুত করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী মোঃ মাহবুবুর রহমান তার বেতন স্থগিত করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘আমার জানামতে গত ২৯ আগষ্ট পর্যন্ত হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর ছিলনা। পরে কিভাবে খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে তার বিল তৈরী করা হল বুঝতে পারলাম না। ধারণা করা হচ্ছে, সে নিজেই রাতে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে খাতায় স্বাক্ষর দিয়েছে অথবা বিদ্যালয়ে থাকা তার কোন সহকর্মীর মাধ্যমে সে কাজটি করেছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেখা রানী দাস বলেন, সহকারী শিক্ষক পরিতোষ গোপের গত মাসের স্থগিত করা হয়েছে জানি। তবে কি কারণে ইউএনও স্যার তার বেতন স্থগিত করেছেন জানি না। বিদ্যালয়ে পরিতোষ গোপ ২৫ দিন অনুপস্থিত ছিলেন আপনে জানেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন আমি ঘুমে আছি, দিনে ফোন দিয়েন। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না’।

প্রথম পাতা