নতুন কোন করারোপ ছাড়াই হবিগঞ্জ পৌরসভার ৮৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন মেয়র মিজান
তারিখ: ৩০-জুন-২০২০
স্টাফ রিপোর্টার ॥

নতুন কোন করারোপ ছাড়াই ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য ৮৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে হবিগঞ্জ পৌরসভা। কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের কারনে সীমিত পরিসরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বাজেট ঘোষনা করেন হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ মিজানুর রহমান। নতুন বাজেটে পৌরসভার রাজস্ব ও উন্নয়ন খাতে আয় ধরা হয়েছে ৮৬ কোটি ৩১ লক্ষ ৮০ হাজার ৫৩ টাকা এবং ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫ কোটি ১৩ লক্ষ ৬৫ হাজার ৫ শ ১ টাকা। উদ্বৃত্ত দেখানো হয়েছে ১ কোটি ১৮ লক্ষ ১৪ হাজার ৫ শ ৫২ টাকা। নতুন অর্থবছরে হবিগঞ্জ পৌরসভার রাজস্ব খাতে মোট আয় ১০ কোটি ৪৯ লক্ষ ৮৬ হাজার ৮শ ৮৬ টাকা এবং মোট ব্যয় ১০ কোটি ২৩ লক্ষ ৫০ হাজার ৫শ ১৯ টাকা। উন্নয়ন খাতে মোট আয় ৭৫ কোটি ৮১ লক্ষ ৯৩ হাজার ১শ ৬৭ টাকা এবং মোট ব্যয় ৭৪ কোটি ৯০ লক্ষ ১৪ হাজার ৯ শ ৮২ টাকা। নতুন বাজেটে তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ (সেক্টর) প্রকল্পের (ইউজিপ-৩) আওতায় রাস্তা ড্রেনসহ অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় দেখানো হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩৩ কোটি টাকা। একই প্রকল্পের আওতায় অন্যান্য বড় পরিকল্পনার মাঝে যে ব্যয় সমূহ ধরা হয়েছে সেগুলো হলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে বহুতল পৌরশপিং মল নির্মাণ ৫ কোটি টাকা, পুরাতন পৌরসভায় ল’চেম্বার, বাসস্থান ও মার্কেট নির্মাণ ৫ কোটি টাকা, পিটিআইয়ের সামনে কিচেন মার্কেটের উর্ধ্বমূখী সম্প্রসারণ ৫ কোটি টাকা, চৌধুরী বাজার কাঁচামাল হাটা মার্কেট নির্মাণ ৩ কোটি টাকা ইত্যাদি। এডিপি ও রাজস্ব উন্নয়ন হিসাবে অবকাঠামো উন্নয়ন অর্থাৎ রাস্তা নির্মাণ-সংস্কার, ব্রীজ কার্লভাট নির্মাণ-সংস্কার, ড্রেন ও স্লাব নির্মাণ-সংস্কার বাবদ নতুন বাজেটে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা। রাজস্ব খাতে উল্লেখযোগ্য ব্যয়ের মাঝে রয়েছে দারিদ্র হ্রাসকরণ কর্মপরিকল্পন, প্রাপ-এর আওতায় কর্মসূচীসমূহের জন্য ৪৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, জেন্ডার এ্যাকশান প্ল্যান (গ্যাপ) কর্মসূচীর জন্য ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের বেতন ৪৫ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা, সড়ক বাতি কার্যকর, বৈদ্যুতিক মালামাল ক্রয় ১৩ লক্ষ টাকা, মসজিদ ও মন্দির উন্নয়ন ও সংস্কার ৩০ লক্ষ টাকা ও মশক নিধন ৫ লক্ষ টাকা। মেয়র মিজানুর রহমান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘গত এক বছরে মেয়র হিসেবে পৌরবাসীকে সেবা দিতে আমি দিনরাত কাজ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘সকলের সহযোগিতায় অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদ করে বড়ড্রেন সমূহকে অনেকাংশে সচল করতে পেরেছি। এই প্রচেষ্টার ফলাফল এখন পৌরবাসীর কাছে দৃশ্যমান। চলতি মওসুমে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হলেও কোথাও পূর্বের মতো পানি জমে থাকেনি। তবে কিছু কিছু স্থানে উন্নয়নকাজ চলমান থাকার কারনে বৃষ্টির পানিতে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে যা শীঘ্রই অবসান হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘পৌরসভার মেয়র হিসেবে সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করার ফলে আমি অনেকটা প্রমান করতে পেরেছি যে আমার অঙ্গিকারগুলো ফাঁকাবুলি ছিল না।’ মেয়র বলেন, ‘সবাই ৫ বছরের মেয়াদ নিয়ে পৌরমেয়রের চ্যালেঞ্জ গ্রহন করেন। আর আমি অল্প সময়ের জন্য সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি। আমি আমার অঙ্গিকার বাস্তবায়নের পথে অনেক দুর এগিয়ে এসেছি। হবিগঞ্জ পৌরবাসী আমার পাশে থাকলে হবিগঞ্জকে প্রকৃত অর্থেই একটি পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক সেবামুলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সারা বাংলাদেশের মাঝে অনুসরণীয় একটি পৌরসভায় রূপান্তরিত করবো। ইনশাআল্লাহ।’ বাজেট ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পৌরসভার বাজেট সম্পর্কিত সাংবাদিকদের করা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মেয়র। সাংবাদিক সম্মেলনে কাউন্সিলরদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আবুল হাসিম, মোঃ জাহির উদ্দিন, মোহাম্মদ জুনায়েদ মিয়া, গৌতম কুমার রায়, শেখ নূর হোসেন, মোঃ আব্দুল আউয়াল মজনু, মোঃ আলমগীর, শেখ মোঃ উম্মেদ আলী শামীম, পিয়ারা বেগম, খালেদা জুয়েল, অর্পনা পাল, সচিব মোঃ ফয়েজ আহমেদ  ও নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সিরাজুল হক। আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক পৌরকমিশনার আব্দুল মোতালিব মমরাজ ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ এমদাদুর রহমান বাবুল প্রমুখ।

প্রথম পাতা