জীবন আহমেদ লিটন, বানিয়াচং \
বানিয়াচংয়ে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরে তালা দেয়ায় ৩ শিশু সন্তানসহ ভিখারিনীর ঠাঁই হয়েছে হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের মেঝেতে। সঙ্গে রয়েছেন জটিল রোগে আক্রান্ত পিতা নিজাম উদ্দিনও। তাদেরকে নিয়ে হাসপাতালেই অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছেন তিনি।
জানা যায়, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে উপজেলা নন্দীপাড়া মহল্লার ভ‚মিহীন নিজাম উদ্দিন ও তার স্ত্রী শামীমাকে উপজেলা সদর ৩নং দক্ষিণ পূর্ব ইউপির অন্তর্গত পাড়াগাও মৌজার বড়বান্দে একটি আশ্রয়নের ঘর বন্দোবস্ত দেয় উপজেলা প্রশাসন। নিজাম উদ্দিনের সাথে বন্দোবস্ত পাওয়া ৪৯ জন ভ‚মিহীন পরিবারকে তাদের ঘর সমজাইয়া দিলেও অদৃশ্য কারণে নিজাম উদ্দিন তার ঘরটি পাননি। নিজাম অনেক দৌড়ঝাঁপ করার পর গত ১৩ এপ্রিল ইউএনও বরাবর তার নামের ঘরটি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন করেন।
পরে এসিল্যান্ড ইসমাইল রহমান তাকে পুলিশের সহায়তা নিতে বলেন। প্রশাসনের পরামর্শ অনুযায়ী বানিয়াচং থানার দ্বারস্ত হন নিজাম। তার অভিযোগের ভিত্তিতে থানার এ এস আই ইমরুল এলাকার মেম্বার জলিল মিয়া ও তোফাজ্জুল হোসেনকে নিয়ে সরজমিনে তদন্ত শেষে অবগত হন যে, স্বপ্না আক্তার নামে একজন একটি ঘরে অবৈধভাবে বৈধ বন্দোবস্তপ্রাপ্ত আশিক মিয়ার ঘরে আছেন এবং আশিক মিয়া নিজামের নামে বরাদ্দকৃত ঘরে বসবাস করছেন। এ প্রেক্ষিতে আশিক মিয়াকে জোর দখলদার স্বপ্নার ঘরে স্থানান্তর করেন ও নিজামকে আশিক মিয়ার দখলকৃত ঘরে প্রবেশ করিয়ে দেন।
নিজাম একজন জটিল রোগে আক্তান্ত রোগী, তাকে লালন পালন করেন তার মেয়ে শাবানা বেগম। শাবানা বগমের ৩ টি কন্যা শিশুকে তার পিতার আশ্রয়ে থেকেই ভিক্ষাবৃত্তি করে লালন পালন করেন তিনি (শাবানা)। এ সুবাদে নিজাম ও তার মেয়ে, নাতনি গত ৭ মে থেকে স্বপ্নের ঘরে বসবাস শুরু করেন। কয়েকদিন পর নিজাম উদ্দি গুরুতর অসুস্থ হলে কন্যা শাবানা ও তার নাতনিদের ঘরে রেখে চিকিৎসা করাতে যান নিজাম। পরদিন আশিক ও স্বপ্নার অভিযোগের ভিত্তিতে নিজামের ঘরে তালাবদ্ধ করা হয়।
ভিখারিনী শাবানা বেগম বলেন, আমার বাবা চিকিৎসা করতে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরদিন আমাদেরকে ঘরটি তালা দেয়া হয়। বর্তমানে আমি সন্তান ও বাবাকে নিয়ে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে রাত্রিযাপন করছি।
এ বিষয়ে থানার এ এস আই ইমরুল হোসেন বলেন, ঘরটি নিয়ে জটিলতা রয়েছে। আগামী সোমবার ৩ পক্ষকে নিয়ে থানার গোলঘরে শালিস বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।