শরিফ উদ্দিন সড়কে কালভার্ট নির্মাণে অনিয়ম ॥ ঠিকাদার শোয়েবের খুটির জোর কোথায় ?
তারিখ: ২৬-ফেব্রুয়ারী-২০১৭
জাকারিয়া চৌধুরী ॥

বানিয়াচং-আজমিরিগঞ্জ শরিফ উদ্দিন সড়কের জলসুখা গ্রামের পাশ্বর্তী ডরের ভাঙ্গা নামক স্থানে কালভার্ট নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি আচঁ করতে পেরে স্থানীয় এলাকাবাসী নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে চাইলেও এলাকার কিছু প্রভাবশালীর কারণে পারছেন না। জানা যায়, ওই এলাকা তথা আজমিরীগঞ্জ উপজেলার মানুষের প্রাণের দাবি ছিল শরিফ উদ্দিন সড়ক নির্মাণ। বছর ধরে একটু একটু করে নির্মাণ করা হয়েছে এই সড়কটি। আর ওই সড়কের জলসুখা গ্রামের পাশ্বর্তী ডরের ভাঙ্গা নামক স্থানে কালভার্ট নির্মাণের জন্য টেন্ডার ঘোষণা করা হয়। টেন্ডার ঘোষণার পর ওই কালভার্টটি নির্মাণের কাজ পায় এএম এইচ কন্ট্রাকশন নামে সুনামগঞ্জের একটি টিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই ঠিকাদরি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক শোয়েব আহমেদ ২০১৬ সালের প্রথম দিকে থেকে এর কাজ শুরু করেন। কিন্তু কালভার্টটি নির্মাণের জন্য যে মালামাল ব্যবহার করার কথা ছিল, তিনি তা ব্যবহার করছেন না। নিম্ন মানের রড, সিমেন্ট ও পাথর ব্যবহার করে তিনি ওই কালভার্টটি নির্মাণ করছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই কালভার্টটি নির্মাণের জন্য মোটা রড ব্যবহারের কথা থাকলেও ঠিকাদার শোয়েব আহমেদ অনেক স্থানে চিকন রড ব্যবহার করছেন। এমনকি, ওই বালু ও রডগুলো বর্ষার সময়ে প্রায় ৪/৫ মাস জলের নিচে তলিয়ে ছিল। ফলে ওই রডগুলোতে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। আর বালু গুলো মাটির সাথে একাকার হয়ে গেছে। কিন্তু তিনি নতুর রড বা বালু ব্যবহার না করে ওইগুলো দিয়েই কালভার্টটি নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে, যে কোন ব্রীজ বা কালভার্ড নির্মাণের জন্য এলসি পাথর ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ওই কালভার্ট নির্মাণে লাল পাথর ব্যবহার করছেন ঠিকাদার শোয়েব আহমেদ। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। নাম প্রকাশ না করার সর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, ‘শরিফ উদ্দিন সড়কটি আজমিরীগঞ্জবাসীর দির্ঘ প্রতিক্ষার ফল। কিন্তু এই সড়কে কালভার্ট নির্মাণে এমন অনিয়ন মেনে নেয়া যায় না। চিকন রড, নিম্ন মানের সিমেন্ট ও লাল পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে এই কালভার্টে। ফলে কয়েক বছরের মধ্যে ওই কালভর্টটি ভেঙ্গে যেতে পারে। আর ওই কালভার্টটি ভেঙে গেলে আজমিরিগঞ্জ উপজেলাবাসী আবারও ভোগান্তির শিকার হবেন।’ তারা বলেন, ‘স্থানীয় সচেতনমহল কালভার্ট নির্মাণে অনিয়মের বিষয়টি আচঁ করতে পেরে কাজ বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এলাকার কিছু অসাধু প্রভাবশালী কাজ বন্ধ না করার জন্য এলাকাবাসীকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে।’ এছাড়াও যারা এ কাজ বন্ধ করতে বলবে তাদেরকে মামলা মোকদ্দমা দেয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। তাই এ ব্যাপারে স্থানীয় কোন লোকজন মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এ ব্যাপারে ঠিকাদার শোয়েব আহমেদের সাথে যোগাযোগ করতে ওই এলাকায় গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। এদিকে, স্থানীয় পত্র পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশের পরও কি ভাবে ওই ঠিকাদার কাজ চালাচ্ছেন তা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের সঞ্চার হয়েছে। অনেকে আবার মনে করছেন ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির খুটির জোর কোথায়?

প্রথম পাতা
শেষ পাতা