আজ বিশ্ব ভালবাসা দিবস ॥ প্রতিদিন হোক ভালবাসার দিন
তারিখ: ১৪-ফেব্রুয়ারী-২০১৮
আখলাছ আহমেদ প্রিয় ॥

আজ ১৪ই ফেব্র“য়ারী “বিশ্ব ভালবাসা দিবস”। ঘড়ির কাটার মতো ঘুরতে ঘুরতে ভালবাসা দিবসটি আবারও ফিরে এসেছে সবার মাঝে। হৃদয়ের উজার করা স্নেহ-মমতা আর প্রেম-প্রীতির টানে আপন ব্যক্তিটিকে বরন করে নেওয়া হয় এই ১৪ই ফেব্র“য়ারী ভালবাসা দিবসে। হৃদয়ের গভীর ভালবাসার জন্ম। তাই ভালবাসা চলমান। যার কোন পরিমাণ বা শেষ নেই। একটি হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায় আরেকটি হৃদয়ের কথা। ভালবাসার মানুষটিকে মন উজার করে ভালবাসলেও ভালবাসার শেষ হয়না। যাকে বলা হয় অফুরন্ত ভালবাসা। ১৪ই ফেব্র“য়ারীতে ভালবাসার পাত্র-পাত্রীদের মধ্যে নানান উৎসব মুখরিত হয়। প্রেমিক-প্রেমিকার জন্য ১৪ই ফেব্র“য়ারী একটি উৎসব মুখরিত দিন। প্রেমের উৎসব, ভালবাসার উৎসব, আজ কাপা-কাপা হৃদয়ে কাউকে প্রপোজ করার দিন। শুধু তাই নয় এই দিনে ভালবাসার পাত্র-পাত্রীদের মধ্যে বিশ্বজুড়ে বিনিময় হয় কার্ড, চকলেট, ফুলসহ নানান উপহার। শিশু ও বুড়োরা এই দিনে বিনিময় করেন ভ্যালেন্টাইন কার্ড। ভ্যালেন্টাইন দিবসে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য মানুষ ভ্যালেন্টাইন কার্ড বিনিময় করে তাদের হৃদয়ের মানুষ, বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে। অনেক ভ্যালেন্টাইন কার্ডে খচিত থাকে প্রেমময় প্রংক্তিমালা। ভালবাসার হাস্য কৌতুকময় ছবি এবং বিভিন্ন রঙ্গে সাজানো মন মুগ্ধকর কথামালা। ভালবাসা দিবস সমন্ধে ইতিহাসের পাতা থেকে জানা যায়, ভ্যালেন্টাইন নামে এক ব্যক্তি তৃতীয় শতকে রোমে বসবাস করতেন। সে অনেক আগের কথা। ওই সময়ে ক্লোডিয়াস নামের এক সম্রাট রোম শাসন করতেন। কিন্তু ভ্যালেন্টাইন ক্লোডিয়াসকে পছন্দ করতেন না। ভ্যালেন্টাইন পুরোহিত ছিলেন। তার প্রিয় কাজ ছিল নারী এবং পুরুষদের বিয়ে দেয়া। নারী এবং পুরুষদের বিয়ে দিতে পারলেই তিনি খুশি হতেন। কিন্তু ওই সময়ে রোম শাসনকর্তা ক্লোডিয়াস নারী এবং পুরুষের বিয়ে দেয়া হবেনা বলে নতুন আইন পাশ করে। ভ্যালেন্টাইন ক্লোডিয়াসের আইন অমান্য করে গোপনে বিয়ের কাজ করে যেতেন। একদিন ক্লোডিয়াসের হাতে ভ্যালেন্টাইন ধরা পড়ে গেলেন। ক্লোডিয়াস ভ্যালেন্টাইনকে জেলে ঢুকিয়ে দিল এবং ভ্যালেন্টাইনকে মৃতুদন্ড দেয়া হবে বলে ক্লোডিয়াস জানিয়ে দেয়। ভ্যালেন্টাইন কারাগারে বসবাস কালে অনেকেই দেখার জন্য কারাগারে যেত। এদের মধ্যে এক কারারক্ষীর মেয়েও ছিল। কারারক্ষী তার মেয়েকে ভ্যালেন্টাইনের কাছে যেতে দিতেন। ভ্যালেন্টাইন ওই কারারক্ষীর মেয়ের সাথে নানা ধরনের কথাবার্তা বলতেন। কিন্তু যে দিন ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যদন্ড কার্যকর করা হয় সেদিন ভ্যালেন্টাইন ওই মেয়ের প্রতি তার বন্ধুত্ব, ভালবাসা ও আনুগত্যর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তার উদ্দেশ্যে একটি চিরকুট লেখে যান। তাতে “ভ্যালেন্টাইন লাভ ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন” লেখে দেন। ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুর দিন ছিল ২৬৯ সালের ১৪ই ফেব্র“য়ারী। ভ্যালেন্টাইন ডে বা বিশ্ব ভালবাসা দিবসে ভালবাসার বার্তা বিনিময় প্রথা এভাবেই শুরু হয়। ভ্যালেন্টাইনের লেখা গুলো হয়ে উঠেছিল চিরন্তন, চিরজীবি। ভ্যালেন্টাইন হয়ে উঠলেন বার্ষিক উৎসবের একজন আধ্যত্মিক তত্ত্বাবধায়ক। তখন থেকে তরুন রোমানরা  প্রতিবছরের ১৪ই ফেব্র“য়ারীতে তাদের নিজ নিজ পছন্দের তরুণীদের কাছে পৌছে দিতে শুরু করে নিজ হাতে লেখা হৃদয়ের কথা। ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদন্ড হল, কিন্তু ভালবাসার মৃত্যুদন্ড হলো না। যে ভালবাসার শেষ নেই, যাকে বলা হয় অফুরন্ত ভালবাসা। ভালবাসা আছে, ভালবাসা থাকবে। সখি বলোনা ভালবাসা কারে কয়?।

প্রথম পাতা
শেষ পাতা