গ্রেফতার আতংক ॥ তিন জন আটক ॥ শহরে বিএনপির মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ গুলি ॥ গুলিবিদ্ধসহ আহত অর্ধশতাধিক
তারিখ: ২১-ফেব্রুয়ারী-২০১৮
জাকারিয়া চৌধুরী/জাহেদ আলী মামুন ॥

হবিগঞ্জে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ গুলিবিদ্ধ ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিকে গউছসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেলসহ অন্তত ৩০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি একটি বিক্ষোভ মিছিল শায়েস্তানগরস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে বের করতে চাইলে ডিবি পুলিশের ওসি শাহ আলমের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিকে গউছ দলীয় নেতাকর্মীদের মিছিলে অংশ গ্রহন করতে আহ্বান করলে পুলিশ বাধা প্রদান করেন। এ সময় জিকে গউছেল সাথে পুলিশের ব্যাপক বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হয়। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকে। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে জেলা ছাত্রদলের ব্যানারে অপর একটি বিক্ষোভ মিছিল দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। এ সময় পুলিশ সর্টগানের গুলি ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে উত্তেজিত নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পুলিশের সাথে দলীয় নেতাকর্মীদের সংঘর্ধ বেধে যায়। সংঘর্ষের সময় পুলিশের সর্টগানের গুলিতে ৩০ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় গুলিবিদ্ধরা শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি ও চিকিৎসা গ্রহন করেছে। এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিকে গউছকে আটক করলেও পড়ে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।  গুলিবিদ্ধ আহতরা হলো জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইলিয়াছ, সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান মোঃ রুবেল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি এমদাদুল হক ইমরান, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি জিল্লুর রহমান, আরিফে রাব্বানী টিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রাজিব আহমেদ রিংগন, সদর থানা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি অলিউর রহমান, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মহিবুর রহমান শাওন, আবুল বাশার ইছা, আব্দুল হান্নান, বাদশা সিদ্দিকী, বিজয় টির্ভির জেলা প্রতিনিধি ইলিয়াছ আলী মাসুক, আসকির মিয়া, সৌরব, সৈয়ধ আশরাফ, সজিব আহমেদ, আফরোজ মিয়া, ইমরান মিয়া প্রমুখ। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিকে গউছ জানান, বিএনপি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল করতে চাইলে ডিবি পুলিশের ওসি শাহ আলম তাকে হুমকি দিলে তাদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ কবে। এ সময় পুলিশ তাদের শাস্তিপূর্ণ কর্মসুচিতে গুলি ছুড়ে শতাধিক নেতাকর্মীদের আহত করে। হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক জানান, বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চাইলে পুলিশ বাধা প্রদান করেন। এ সময় পুলিশের উপর বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর আক্রমন করতে চাইলে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তিনি বলেন এ ঘটনায় পুলিশের ৩ সদস্য আহত হয়েছে এবং পুলিশ ৫৪ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এদিকে এঘটনায় রাতে পুলিশ বাদি হয়ে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইলিয়াছ, সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান মোঃ রুবেলসহ ২শ জনকে আসামী করে সদর থানায় একটি পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান রুবেলের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া ও জাড়ি করা হয়েছে।

প্রথম পাতা
শেষ পাতা