জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ ॥ বানিয়াচঙ্গে দুই পরিবারকে সমাজচ্যূত করে রেখেছে গ্রাম্য মাতব্বররা
তারিখ: ১৩-সেপ্টেম্বর-২০১৮
স্টাপ রিপোর্টার ॥

বানিয়াচঙ্গে জলাশয়ের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুটি পরিবারকে সমাজচ্যূত করা হগয়েছে। সমাজচ্যূত বা একঘরে করে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন আমিরখানী মহল্লার কতিপয় সমাজপতি। ভুক্তভোগীরা হবিগঞ্জ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত, বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বানিয়াচং থানা ও বানিয়াচং মানবাধিকার কমিশন বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বানিয়াচং উপজেলার আমিরখানী মহল্লার মোঃ ফুল মিয়া ও তার ছোট ভাই মোতাহের মিয়া উভয়ই কৃষক ও মহালদার। জানা যায়, আমিরখানী মহল্লার সর্দার আমজাদ মিয়া ও তার দুই চাচা এবং ভাইদের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ ফুল মিয়া ও তার ভাইয়ের পারিবারিক বিরোধিতা চলে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সমাজচ্যুতের ঘটনা ঘটল। অভিযোগ থেকে জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি জলাশয় সরকারি বিধি মোতাবেক ইজারা নেন জাহিদুল ইসলাম জাকু আর ফুল মিয়া জাহিদুল চৌধুরীর নিকট থেকে আমমুক্তার নিযুক্ত হয়ে পঁচিশ বৎসর যাবৎ জলমহালটি ভোগদখল করে আসছেন।

ইদানিং ফুল মিয়া আমিরখানী মহল্লার মসজিদের কাজের অনিয়মের প্রতিবাদ করায়, সর্দার আমজাদ বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে জলাশয় দখল করার হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করেন ফুল মিয়া ও তার ভাইয়ের নিকট। ফুল মিয়া ও তার ভাই মোতাহের মিয়া চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় এলাকাবাসীকে ক্ষেপিয়ে তুলে। পরে সমাজচ্যূতের দাবী তুলে তা বাস্তবায়ন করেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সর্দার আমজাদ ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এলাকাবাসী বিরোধিতা করলেই নেমে আসে চাঁদাবাজি ও নির্যাতন। এ ব্যাপারেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সমাজচ্যূত হওয়া মোতাহের মিয়া বলেন, ‘মহল্লার যৌথ ফান্ডের টাকা মহল্লার সকল বাসিন্দার মধ্যে বন্টন করা হলেও আমাকেও আমার ভাই ফুল মিয়াকে ওই যৌথ ভাগের টাকা দেয়া হয় নাই। এমনকি লোকজনকে বারণ করে দেয়া হয়েছে  আমাদের সঙ্গে যেন কথাবার্তা না বলেন’।

অভিযোগকারী ফুল মিয়া বলেন, ‘মসজিদ নির্মান কাজে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় আমজাদ ও তার লোকজন আমাকে ও  আমার ভাইয়ের উপর বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদেরকে একঘরে করে রাখা হয়েছে। আমরা প্রশাসনের নিকট এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই’।

আমিরখানী মহল্লার সর্দার আমজাদ হোসেন জানান, সমাজচ্যূত করার অভিযোগ সঠিক নয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মামুন খন্দকার জানান, অভিযোগের ব্যাপারে ওসি বানিয়াচং  থানা ও উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

প্রথম পাতা