জনতার উত্তম-মধ্যম ॥ ৮০ হাজার টাকায় রফাদফা ॥ বাহুবলে প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ
তারিখ: ২৩-ফেব্রুয়ারী-২০১৯
বাহুবল প্রতিনিধি ॥

বাহুবলে ‘আঙ্গুরা বেগম ইসলামিয়া মহিলা টাইটেল মাদ্রাসা এন্ড আল হিলালী ইসলামী একাডেমী’-এর প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই প্রিন্সিপালকে আটক করে উত্তম-মধ্যম দিয়েছে স্থানীয় জনতা। বিষয়টি নিয়ে আলেম সমাজে ক্ষোভ ও এলাকাবাসীর মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সিটকো গ্যাস পাম্প সংলগ্ন ‘আঙ্গুরা বেগম ইসলামিয়া মহিলা টাইটেল মাদ্রাসা এন্ড আল হিলালী ইসলামী একাডেমীর প্রিন্সিপাল জালাল উদ্দিন হেলালী মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানী করে। বিষয়টি নাম গোপন রাখার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রীরা এলাকার লোকজনকে জানান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন ওই ছাত্রীদের অভিভাবকরা। ফলে গত ১৫ ফেব্র“য়ারি মিরপুর বাজারে ওই ছাত্রীদের অভিভাবকরা প্রিন্সিপাল জালাল উদ্দিন হেলালীকে আটক করে উত্তম মাধ্যম দেন। বিষয়টি রাতেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে জেলার বিভিন্ন এলাকার শত শত লোক ঘটনাস্থলে জমায়েত হন। পরে তার অভিভাবকরা এসে তাকে ছাড়িয়ে নেয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মুরুব্বিয়ান জালাল উদ্দিন হেলালীকে অর্থদন্ড করে আপোষে নিষ্পতি করেন বলে জানান এলাকাবাসী। মাওলানা জালাল উদ্দিন হেলালী উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের শফিয়াবাদ এলাকার আকবর হোসেনের পুত্র। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ।

এ ব্যাপারে বাহুবল উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গীতিকার এম আর মামুন জানান, প্রিন্সিপাল জালাল উদ্দিন হেলালী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় মাদ্রাসা শিক্ষকতার নামে ছাত্রীদের যৌন হয়রানী করে আসছে। সে জনৈক ছাত্রীকে মাদ্রাসা ছুটির পর কোচিং করার কথা বলে তার কোচিং সেন্টার মিরপুর বাজার হক ভিলায় নিয়ে যায় এবং সেখানে অন্যান্য ছাত্রীকে বিদায় দিয়ে ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করে। 

পরে ওই ছাত্রী কৌশলে পালিয়ে মাদ্রাসায় গিয়ে তার অভিভাবকদের জানায়। এ ঘটনায় ওই অভিভাবকরা তাকে আটক করে উত্তম মাধ্যম দেয়।

অনেক ছাত্রীর সাথে সে এমন কর্মকান্ড করেছে, মান-সম্মানের ভয়ে অনেক ছাত্রীই মুখ খুলছেনা’।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চৌধুরী টেনু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তবে অর্থদন্ড-জরিমানার বিষয়টি তিনি অবগত ননবলে জানান। মুরুব্বী ফারুক মিয়া জানান, আটককৃত প্রিন্সিপালকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হলে সে ৫৬ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরেছি, তবে কেউ অভিযোগ করে নাই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মৌলানা জালাল উদ্দিন হেলালীর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ  ষড়যন্ত্র ও নাটকীয়তা করেছে। বিষয়টি সমাধান হয়েছে বলে তিনি জানান।