নিজের কর্মস্থল ফাঁকি দিয়ে বানিয়াচঙ্গে শাপলা ডায়াগনস্টিকে রোগী দেখছেন ডাঃ সুবিমল
তারিখ: ২৭-ফেব্রুয়ারী-২০২০
বানিয়াচং প্রতিনিধি ॥

 রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলায় মেডিকেল অফিসার এমওএমসিএইচ (এফপি) ডাঃ সুবিমল চন্দ তার নিজ কর্মস্থল থেকে মেডিকেল (লীভ) ছুটি নিয়ে বানিয়াচং শাপলা মেডিকেল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়মিত রোগী দেখছেন। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে এলাকাবাসীদের মধ্যে।

জানা যায়, বানিয়াচংয়ের তৎকালীন মেডিকেল অফিসার এমওএমসিএইচ (এফপি) ডাঃ সুবিমল চন্দ তার কর্মস্থলে থাকাকালীন অবস্থায় বিভিন্ন দুর্নীতিও নানা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে প্রমানিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ডাঃ সুবিমল কে একই পদে গত মাসের ১৯ তারিখে প্রথমে লালমনিরহাটে বদলির আদেশ দেন মহাপরিচালক পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর বিভাগ। পরে লালমনিরহাটের বিভাগীয় কর্মকর্তা দুর্নীতির দায়ে তার এই পদায়ন গ্রহণ করেননি। পরবর্তীতে ২১ তারিখে আরেকটি আদেশে তাকে কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলায় উক্ত শুণ্যপদে বদলির আদেশ দেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক ইফতেখার রহমান। সেখানে যোগদানের কয়েকদিন পর তার শারীরিক অসুস্থতা দেখিয়ে (মেডিকেল লীভ) একমাসের ছুটি নিয়ে বানিয়াচং চলে আসেন ডাঃ সুবিমল। বানিয়াচং আসার পর বানিয়াচং বড়বাজারে অবস্থিত শাপলা মেডিকেল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রোগী দেখছেন তিনি।

সরেজমিনে ওই মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে দেখা যায় রোগী নেই তবে চেম্বারে বসে খোশগল্প করছেন ডাঃ সুবিমল। এখন প্রশ্ন উঠেছে, নিজের কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে তিনি কিভাবে অন্য উপজেলায় এসে রোগী দেখছেন। পাশাপাশি মেডিকেল লীভ নিয়ে আসলে উনি তো অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে থাকার কথা। তা না করে নাগেশ্বরী উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মিথ্যা কথা বলে দিনের পর দিন বানিয়াচংয়ে পড়ে থাকছেন তিনি। চেম্বার খোলে নিয়মিত রোগীও দেখছেন। তাছাড়াও ডাঃ সুবিমল বানিয়াচং থেকে বদলী হওয়ার পর পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ২০১৭-২০১৮ এবং ২০১৮-২০১৯ আর্থিক সালের অফিসিয়াল বিল ভাউচার, ক্যাশবুক, বিল রেজিস্টারও অন্যান্য কোনো কাগজপত্র দায়িত্বরত কাউকে তিনি বুঝিয়ে দিয়ে যাননি। এসব কাগজপত্রাদি তিনি নাকি তার বাড়িতে নিয়ে রেখে দিয়েছেন এমনও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, বানিয়াচং পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ক্লিনিক অধিক্ষেত্রের বিভিন্ন সময়ে বরাদ্দকৃত কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ ক্রয়বাবদ মোট ২লাখ ৫হাজার ৬শ টাকা পুরোটাই তিনি আতœসাত করেছেন বলে জানা গেছে। বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয় কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার মেডিকেল অফিসার এমওএমসিএইচ (এফপি) ডাঃ সুবিমলের সাথে। তিনি জানান, এলাকার রোগীরা আামাকে চায়। তাই সপ্তাহে একদিন এখানে বসা হয়। মেডিকেল ছুটি নিয়ে কিভাবে আপনি চেম্বারে রোগী দেখেন আপনার তো বেডরেস্ট বা চিকিৎসকের আওতায় থাকার কথা? এই প্রশ্নের উত্তরে ডাঃ সুবিমল বলেন, আমি বাড়িতে আসছিলাম মেডিকেল ছুটি নিয়ে এই বলে সে ফোন কেটে দেন। কুড়িগ্রাম জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডাঃ নজরুল ইসালাম জানান, ডাঃ সুবিমলের মেডিকেল ছুটি মঞ্জুর করা হয়নি। আবেদনে সে তার বাবার ক্যান্সার হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। তাকে ক্যামো দিতে পাশে থাকতে হয় বিধায় ছুটির প্রয়োজন। তবে ডাঃ সুবিমল কিভাবে বাবার অসুস্থ্যতার মিথ্যা কথা বলে বানিয়াচংয়ের শাপলা মেডিকেলের চেম্বারে গিয়ে রোগী দেখছেন সেটা তিনি দেখবেন বলে জানিয়েছেন। রংপুর বিভাগের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক মনোজ কুমার রায়ের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ডাঃ সুবিমলের ছুটির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।