দেশজুড়ে যেখানে দেখা দিয়েছে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস আতংক। তেমনিভাবে এর প্রভাব পড়েছে হবিগঞ্জেও। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজনের মধ্যে এই আতংক বিরাজ করছে। বিশেষ করে এই আতংকে রোগি শূন্য হয়ে পড়েছে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতাল। ঠিকমত নার্সরা দায়িত্ব পালন করলেও ২-৩ দিন ধরে তেমন রোগির দেখা মিলছে না। এর আগে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রতিদিন ৩-৪শ রোগির সমাগম হলেও বর্তমানে করোনা আতংকে রোগি নেই বললেই চলে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন মাত্র ৮৮ জন রোগি। এর মধ্যে হাসপাতালের ভর্তি খাতায় ৪৭ জনের নাম উল্লেখ থাকলেও অনেক রোগি চলে গেছেন তাদের বাসা-বাড়িতে।
গতকাল বুধবার রাতে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ব্রেড রয়েছে ৪৪টি। গতকাল বুধবার সকাল থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত ওই ওয়ার্ডে ৮জন রোগি ভর্তি হলেও রাতে কোন রোগি পাওয়া যায়নি। ফলে রোগি শূণ্য অবস্থায় ছিল মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড। শুধু তাই নয়, পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে গতকাল সারাদিনে ৪ রোগি ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১ জন অবস্থান করেন হাসপাতালে। বাকি ৩ জন চলে গেছেন তাদের বাসা-বাড়িতে। মহিলা সার্জারীতে ভর্তি হন ৯ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে রয়েছেন ৪ জন রোগি। শিশু ওয়ার্ডে ব্রেডের সংখ্যা ৩৯। এর মধ্যে গতকাল রাত ৮ টা পর্যন্ত ১৩ জন রোগি ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ওই ওয়ার্ডে অবস্থান করছেন মাত্র ৩ জন রোগি। অন্যান্যরা তাদের বাসা-বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স ময়না আক্তার জানান, করোনা আতংকের কারনে ওই ওয়ার্ডে রোগির সংখ্যা কম দেখা দিচ্ছে । করোনা আক্রান্তের ভয়ে অনেক রোগিরা তাদের বাসা-বাড়িতে চলে গেছেন। হাসপাতালের নার্স নাদিয়া সুলতানা জানান, জীবনের ঝুকি নিয়ে তারা রোগিদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। সরকারীভাবে ঘোষনা দেয়া হলেও এখন তাদের ভাগ্যে জুটেনি পিপিই। এতে করে করোনা আতংকে রয়েছেন তারা নিজেও। এদিকে প্রাণঘাতি করোনা আতংকে চরম বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। জেলা জুড়ে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় জনশূণ্য হয়ে পড়েছে শহর-গ্রাম। ফলে কাজ-কর্মে যেতে পারছেন না তারা। তাদের আয়ের কোটায় দেখা দিয়েছে শূণ্যের হাড়ি।