দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস \ পেঁয়াজের হাফ সেঞ্চুরি
তারিখ: ১৪-মে-২০২২
স্টাফ রিপোর্টার \
 ‘তেলের লিটার ১৯৮ আর পেঁয়াজের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ১৬ হাজার টাকা বেতন চাকরি করে বাসা ভাড়া, নিত্যপণ্য, সন্তানের লেখাপড়া চালাতে মাসে আরও ৩/৪ হাজার টাকা ধারদেনা করতে হয়। যদি নিত্যপণ্যের দাম এভাবে বৃদ্ধি পায় তাহলে বাঁচা দায়।’ কথাগুলো শুক্রবার সকালে হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার এলাকায় বাজার করতে আসাত একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কর্মরত মিনহাজুর রহমান বলছিলেন। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে দেশে একদিনে প্রতি লিটার তেলে ৩৮ টাকা দাম বাড়িয়ে ১৯৮ টাকা করা হয়েছে। এর রেশ কাটতে না কাটতেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের অজুহাতে কেজি প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। হবিগঞ্জ শহরে বৃহস্পতিবার পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় আর খুচরা দোকানে তো হাফসেঞ্চুরি।
অন্যদিকে, মাছের বাজারও বেশ চড়া। এক সপ্তাহ আগে যে মাছ ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে সেটি এখন ১৪০ টাকা। আর ছোট দেশীয় মাছের দেখাই মিলছে না বাজারে। প্রতিনিয়ত 
 দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সাইমুম চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘একের পর এক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সরকার এই বিষয়ে কোন মনযোগ দিচ্ছে না। যদি এভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে তাহলে মানুষ ফকির হয়ে যাবে।’ ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘মানুষ যদি তেল-পেঁয়াজেই সব টাকা শেষ করে ফেলে তাহলে সংসারের বাকি খরচ কিভাবে চালাবে। এটা আমাদের প্রতি অবিচার হচ্ছে। ব্যবসায়িরা সিন্ডিকেট করে আর সরকার দাম বাড়ায়। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না।’ তিনি বলেন ‘একজন মানুষ মাসে কত টাকা আয় করে ? আয়ের অনুপাতে ব্যয় বেশি। কত ঋণ করে চলা যায়? দ্রæত দ্রব্যমূল্যের দাম কমানো না গেলে মানুষ না খেয়ে মরবে।’
হবিগঞ্জে চৌধুরী বাজারের পেঁয়াজের ডিলার মেসার্স খালেদ এন্টারপ্রাইজের স্বাত্তাধিকারী সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা যাচ্ছে না। এলসি করেও পেয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে দেশের বাজারে পেয়াজের দাম বৃদ্ধি।’ আরেক ডিলার বিধান রায় বলেন, ‘দেশের বাজারে পেঁয়াজ শেষ হয়ে গেছে। যদি ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি করা না যায় তাহলে পেয়াজের দাম আরও বাড়তে পারে।’ বাণিজ্যিক এলাকার ব্যবসায়ী কাশেম আহমেদ বলেন, আমি গত (বুধবার) ৪০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনেছি। আর বিক্রি করছি ৪৫ টাকা কেজি ধরে। বেশি দামে ক্রয় করার কারণেই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’ দ্রব্যমূল্যের এমন দাম বৃদ্ধিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে।