চুনারুঘাট উপজেলার ছয়শ্রী গ্রামে মনিপুরীদের আবাসস্থলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৮১তম মহারাসলীলা উৎসব। এতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষের ঢল নামে। উত্তর ছয়শ্রী মহাপ্রভু মÐপে মঙ্গল আরতির মাধ্যমে শুরু হয় এ উৎসব। মহারাসলীল উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দরা জানান, আরতির মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়। এরপর মহাপ্রভুর ভোগ আরতি ও মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। এছাড়া শ্রীকৃষ্ণের গোচারণ লীলা হয়। দিবাগত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে আজ শনিবার ভোর পর্যন্ত হয় মহারাসলীলা উৎসব।
জানা গেছে, প্রতি বছর কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে অনারম্ভরভাবে অনুষ্ঠিত হয় মহারাসলীলা। দিনের বেলায় রাখাল নৃত্যের পর থেকেই সন্ধ্যায় শুরু হয় রাসলীলা। শুরুতেই পরিবেশিত হয় রাসধারীতের অপূর্ব মৃদঙ্গ নৃত্য। মৃদঙ্গ নৃত্য শেষে প্রদীপ হাতে নৃত্যের তালে তালে সাজানো মঞ্চে প্রবেশ করেন শ্রী রাধা সাজে সজ্জিত একজন নৃত্যশিল্পী। তার নৃত্যের সঙ্গে বাদ্যের তালে তালে পরিবেশিত হয় মনিপুরী বন্দনা সংগীত।
শ্রীকৃষ্ণ রূপধারী বাঁশিঁ হাতে মাথায় কারুকার্য্য খচিত ময়ূর গুচ্ছধারী এক কিশোর নৃত্যশিল্পী তার বাশিঁর সুর শুনে রাজগোপী পরিবেশিত হয়ে শ্রী রাধা মঞ্চে আসেন। রাতব্যাপী সুবর্ন কংকনপরিহিতা মনিপুরী কিশোরীদের নৃত্য প্রদর্শন চলে। স্থানীয় শিল্পীরা এই পরিবেশনার জন্য মাসব্যাপী প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। তারা বংশ পরম্পরায় এই নৃত্য শিখে আসছেন।
জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মনিপুরী স¤প্রদায়সহ জাতি ধর্ম নির্বিশেষে অনেকেই ছুটে আসেন মহারাসলীলা উপভোগ করতে। মুনিপুরী নৃত্যকলা শুধু ছয়শ্রী নয়, গোটা ভারতীয় উপমহাদেশ তথা বিশ্বের নৃত্যকলার মধ্যে একটি বিশেষ স্থান দখলে করে আছে। মহারাসলীলায় শিশু থেকে শুরু করে কিশোর কিশোরী সবার স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে রাতে রাস উৎসব হয়ে উঠে সবচেয়ে আকর্ষণীয়।