বানিয়াচঙ্গে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষনের চেষ্টার ঘটনা শালিসে নিস্পত্তি ॥ সিএনজি চালক ও তার সহযোগীকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও গলায় জুতার মালা দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারী-২০১৫
আব্দুর রউফ সেলিম/জীবন আহমেদ লিটন ॥

বানিয়াচঙ্গ উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে একমাত্র উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শেখ সামছুল হক কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর চেষ্টাকারী লম্পটদের দুই লাখ টাকা জরিমানা ও জুতামালা গলায় দিয়ে জনসস্মুখে ক্ষমা প্রার্থনা করে ঘটনা নিস্পত্তি করা হয়েছে। সেই সাথে সিএনজি অটোরিক্সা সমিতির পক্ষ থেকে দুঃখ ও ক্ষমা প্রার্থনা এবং ভাড়া নির্ধারণ করে এলাকাবাসী ও শ্রমিকদের বিরোধ নিস্পত্তি করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার দুপুরে উত্তর সাঙ্গর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে হবিগঞ্জ মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ্ব রইছ মিয়ার সভাপতিত্বে ও মন্দরী ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন খন্দকার এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শালিস বৈঠকে এসব রায় প্রদান করা হয়। শালিস বৈঠকে হবিগঞ্জ জেলা ইউপি চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী মমিন, দক্ষিণ বানিয়াচঙ্গের ৫টি ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, এলাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গসহ হাজার হাজার জনতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শুরুতেই শালিসের সামনে ঘটনার নায়ক লম্পট সিএনজি অটো রিক্সা চালক মোজাফফর ও তার সহযোগি জিলাই মিয়া সহ নির্যাতিতা ছাত্রীকে উপস্থিত করানো হয়। এক পর্যায়ে সুজাতপুর ইউপি চেয়ারম্যান এনাম খাঁন চৌধুরী ফরিদ, সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও আছকির মিয়া সামদু, সাদিকুর রহমান এর নেতৃত্বে এক বোর্ড গঠন করে এবং তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী লম্পটদের দুই লাখ জরিমানা ও জুতার মালা গলায় দিয়ে জনসম্মুখে ঘুরে ক্ষমা চাওয়ানো হয়। ভবিষ্যতে নির্যাতিত মেয়েটির নিরাপত্তার জন্য ৫০ হাজার টাকা মুছলেকার নির্দেশ দেয়া হয়।

বৈঠকে বক্তব্য রাখেন ড. মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব শেখ সামছুল হক, জেলা চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী মমিন, ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান এনাম খাঁন চৌধুরী ফরিদ, রফিকুল ইসলাম পাশা, সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবির রেজা, আকাদ্দছ হোসেন তালুকদার, জেলা জাপা নেতা জালাল উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ মিয়া, হবিগঞ্জ পৌর সভার প্যানেল মেয়র আবুল হাসিম, জেলা সিএনজি অটোরিক্সা মালিক সমিতির সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, খায়রুল বক্স, শাহাব উদ্দিন, সফর আলী, আঃ রউফ, সামছুল হক তালুকদার, বিশিষ্ট মুরুব্বী ইদ্রিছ মিয়া, আব্দাল খাঁন চৌধুরী, আলা উদ্দিন সর্দার, হাজী রুছমত আলী মাস্টার, নুর মিয়া তালুকদার, হরবল্লব চৌধুরী, সাদেক মিয়া, আব্দুর রব, সিরাজ উদ্দিন, আব্দুল হাকিম ফুল মিয়া, এইচ এম জাহির, নুরুল হুদা, আব্দুল আউয়াল মেম্বার, ফারুক হুসাইন বেলু, তারা মিয়া মেম্বার, আরজু মিয়া আনসারী, কাজী মোক্তার হোসেন, মতি মিয়া মেম্বার, আঞ্জব আলী মেম্বার, আব্দুর রহমান মেম্বার, আব্দর রউফ মেম্বার, হান্নান মেম্বার, মোতাব্বির মিয়া, সবুর মেম্বার, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান খোকন, সাবেক মেম্বার ইলিয়াছ মিয়া, আব্দুল মিয়া, আব্দুল জলিল, কাজী মোস্তাক আহমেদ, জেলা ছাত্রলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহি প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারী সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ শহরের থেকে প্রাইভেট পড়া শেষে সিএনজি অটোরিক্সা যোগে বাড়ি ফেরার পথে উত্তর সাঙ্গর গ্রামের শেখ সামছুল হক কলেজের এক ছাত্রীকে ইকরাম গ্রামের সিএনজি অটোরিক্সা চালক মোজাফফর ও যাত্রী বেশে থাকা জিলাই মিয়া যৌন হয়রানির চেষ্টা চালায়। এসময় ছাত্রীটি লাফ দিয়ে পড়ে আত্মরক্ষা করে। পবরর্তীতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী তীব্র আন্দোলন গড়ে তুললে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহাদ মিয়া বিষয়টির শালিসের উদ্যোগ নেয়।

প্রথম পাতা
শেষ পাতা