“এইচএসসি পরীক্ষা -২০১৫” এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল ররিবার সকালে সারা দেশে এক যোগে ওই ফলাফল প্রকাশিত হয়। ফলাফলে সিলেট বিভাগে হবিগঞ্জ জেলা ২য় স্থান অর্জন করেছে। জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৪ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছেলে ৩১ ও মেয়ে ৪৩ জন। এ বছর হবিগঞ্জ জেলায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৬৬৭ জন। এর মধ্যে ছেলে ৪ হাজার ৯৩৫ জন এবং মেয়ে ৫ হাজার ৭৩২ জন। মোট পাশের সংখ্যা ৭ হাজার ৯৩০ জন। এর মধ্যে ছেলে ৩ হাজার ৬৫১ জন এবং মেয়ে ৪ হাজার ২৭৯ জন। জেলায় পাশের হার ৭৪.৩৪। এবার জেলার কলেজ গুলোর মধ্যে পাশের হারের দিক দিয়ে এগিয়ে গেছে বানিয়াচং উপজেলার সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজ। এ কলেজের পাশের হার সর্বোচ্চ ৯৭.৬২। তবে সর্বোচ্চ ৪৮ টি জিপিএ-৫ পেয়েছে ঐতিহ্যবাহী হবিগঞ্জ সরকারী বৃন্দাবন কলেজ। উপজেলা ভিত্তিক পাশের হার এর দিক দিয়ে সকলের পিছনে পড়েছে মাধবপুর। এ উপজেলার পাশের হার ৬৫.১১। এ বছর বোর্ডে সেরা প্রতিষ্ঠানের তালিকা না করার সিদ্ধান্তের কারণে জেলার সেরা প্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া যায়নি।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো উপজেলা ভিত্তিক ফলাফল তুলে ধরা হল।
মাধবপুর প্রতিনিধি মিজানুর রহমান অনিক জানান, উপজেলায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩৪৪। এর মধ্যে পাশ করেছে ৮৭৫। যার পাশের হার ৬৫.১১। জিপিএ-৫ ২টি।
আজমিরীগঞ্জ প্রতিনিধি এবাদুর রহমান রাসেল জানান, উপজেলায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৪২৮। এর মধ্যে পাশ করেছে ৩০১। পাশের হার ৭০.৩৩। জিপিএ-৫ নেই।
বানিয়াচং প্রতিনিধি জীবন আহমেদ লিটন জানান, উপজেলায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩৮৭। এর মধ্যে পাশ করেছে ১১৯৫। যার পাশের হার ৮৬.১৬। জিপিএ-৬ টি। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জেলায় পাশের হারের দিক দিয়ে শীর্ষ স্থান দখল করেছে উপজেলার সুফিয়া-মতিন মহিলা কলেজ। ওই কলেজ থেকে ১৬৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে পাশ করেছে ১৬৪ জন। যার পাশের হার ৯৭.৬২।
বাহুবল প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৮৭৬। এর মধ্যে পাশ করেছে ৫৭৪। যার পাশের হার ৬৫.৫৩। জিপিএ-৫ ২টি।
লাখাই প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৫০। এর মধ্যে পাশ করেছে ২৭৭। যার পাশের হার ৭৯.১৫। জিপিএ-৫ নেই।
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৬৩১। এর মধ্যে পাশ করেছে ১২৬৫। যার পাশের হার ৭৭.৫৬। জিপিএ-৫ ৪টি। এ উপজেলায় উল্লেখযোগ্য ফলাফল অর্জন করেছে দিনারপুর কলেজ। প্রথম বারের মত এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে কলেজটি। এ কলেজ থেকে মোট ৭৭ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে পাশ করেছে ৭৫ জন। যার পাশের হার ৯৭ .৪০%। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে রাগীব-রাবেয়া স্কুল এন্ড কলেজ। এ কলেজ থেকে ২১৮ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহন করে পাস করেছে ২০৩ জন। যার পাশের হার ৯৩.১২।
চুনারুঘাট প্রতিনিধি জানান, উপজেলায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ হাজার ১শত ২৯। এর মধ্যে পাশ করেছে ৮৫৭। যার পাশের হার ৭৫.৯১। জিপিএ ৫-৭টি।
এদিকে, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ফলাফল জানতে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তার কাছে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সর্বশেষ মধ্য রাতে তিনি ফোন ধরলেও বিরক্তির সুরে জানান, তার কাছে কোন তথ্য নেই। এ সময় তিনি সিলেট শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তবে আমাদের প্রতিনিধিদের নিজস্ব সূত্রে হবিগঞ্জ সরকারী বৃন্দাবন কলেজের ফলাফলের আংশিক তথ্য পাওয়া গেছে। এ কলেজ থেকে এ বছর ১ হাজার ৪০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। তবে গতকাল রবিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত কতজন পরীক্ষার্থী পাশ করেছে তা জানাতে পারেননি কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক বদরুজ্জামান চৌধুরী। এবার এ কলেজ ৪৮টি জিপিএ-৫ লাভ করে জেলায় শীর্ষ স্থান (জিপিএ-৫ এর দিক দিয়ে) দখল করেছে।
ফলাফল বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোহাম্মদ আবদুর রউফ জানান, এ বছর বোর্ডের সেরা প্রতিষ্ঠানের তালিকা না করার সিদ্ধান্তের কারণে জেলার সেরা প্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া যায়নি। গত বছরের তুলনায় এবার ফলাফল কিছুটা খারাপ হলেও বোর্ডে হবিগঞ্জের অবস্থান যথেষ্ট ভাল।