প্রতিবাদে এলাকাবাসীর সড়ক অবরোধ অগ্নিসংযোগ ॥ আটক ৪ ॥ মশাজানে আসামী ধরতে গিয়ে পুলিশের সাথে এলাকাবাসির সংঘর্ষে আহত ১০
তারিখ: ১-জুলাই-২০১৬
জাহদে আলী মামুন ॥

শহরতলীর ধুলিয়াখালে ডাকাতি মামলার আসামী ধরতে গিয়ে গ্রামবাসির সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় পুলিশসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ডাকাতসহ ৪ দাঙ্গাবাজকে আটক করেছে পুলিশ। এর প্রতিবাদে সড়কে গাছ ফেলে, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে হবিগঞ্জ-মিরপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন গ্রামবাসি। এতে ৩ ঘন্টা ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ সূত্র ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে সদর থানার এএসআই আব্দুল লতিফসহ একদল পুলিশ ওই গ্রামে অভিযান চালিয়ে মশাজান গ্রামের আব্দুল মতিনের পুত্র ৪ মামলার পলাতক আসামী ডাকাত নজরুল ইসলাম খোকা (৩০) কে আটক করে নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে আব্দাবখাই গ্রামের পশু চিকিৎসক আব্দুস সহিদের পুত্র জালালকে পিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আটক করে। এ সময় তার পক্ষের লোকজন পুলিশের গাড়ি আটকে বাঁধা প্রদান করে। এ সুযোগে জালাল হ্যান্ডকাপ নিয়ে পালিয়ে যায়। আহত এএসআই লতিফ জানান, এক পর্যায়ে খোকা ও তার লোকজন পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ ও ডাকাত নজরুল ও তার লোকজনের মাঝে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এতে এএসআই আব্দুল লতিফ ও পুলিশ সদস্য সবুজ রানা আহত হন। খবর পেয়ে সদর থানার ওসির নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায় এবং ঘটনার পর থেকে গ্রেফতার আতংকে গ্রামের অনেকেই সটকে পড়ে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আব্দাবখাই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সাবেক বিডিয়ার কর্মকর্তা আলা উদ্দিনের পুত্র কলেজ ছাত্র নুর উদ্দিন, ও তার ছোট ভাই আইডিয়াল স্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র মইন উদ্দিন, জাহাঙ্গীর ও আহাদকে আটক করে পুলিশ। এ ছাড়াও ডাকাত খোকাকেও আটক করে আহত অবস্থায় ও এএসআই আব্দুল লতিফকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে মশাজান ও আব্দাবখাই এবং শরীফপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুুষ রাস্তায় নেমে আসেন। তারা পুলিশের এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় দুই পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন মিরপুর-ধুলিয়াখাল সড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে পৌছে দোষী পুলিশদের বিচারের আশ্বাস দিলে সন্ধ্যায় অবরোধ তুলে নেয়া হয়। আহত মশাজান গ্রামবাসি অভিযোগ করেন পুলিশ অহেতুকভাবে মহিলাদের উপর লাঠিচার্জ ও ঘরে ঢুকে ভাংচুর করে। তাদের লাঠির আঘাতে মহিলা ও শিশুসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়।

আহতরা হলেন তানজিল, নাজমা, আমিনা খাতুন, নজিরা, রেজিয়া, ফাতেমা, জাহাঙ্গীর, আব্দুস সহিদ, আব্দুল জলিল, কাদির, আলা উদ্দিন ও সামছুননাহার। এদিকে ঘটনার পর আব্দাবখাই গ্রামের মুরুব্বি জনাব আলীর মাধ্যমে পালিয়ে যাওয়া আসামী জালালের কাছ থেকে হ্যান্ডকাপটি উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন লস্করপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান হিরু ও সাবেক চেয়ারম্যান আলী আমজাদসহ গন্যমান্য ব্যক্তি।

এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মোঃ নাজিম উদ্দিন জানান, কোন নিরীহ লোকদের গ্রেফতার করা হয়নি। ওয়ারেন্টের আসামী ধরতে গেলে গ্রামের লোকজন আমাদের বাঁধা প্রদান করে।

প্রথম পাতা