উন্নয়ন মেলায় দলীয় ব্যানার অপসারন করার জের ॥ আজমিরীগঞ্জে ইউএনও পুলক কান্তি চক্রবর্তীকে লাঞ্ছিত করেছে যুবলীগ নেতা
তারিখ: ১৪-জানুয়ারী-২০১৮
স্টাফ রিপোর্টার ॥

আজমিরীগঞ্জ উপজেলার উন্নয়ন মেলায় দলীয় ব্যানার অপসারন করায় যুবলীগ নেতার হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কান্তি চক্রবর্তী। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে মেলার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে আইনানুগ ব্যবস্থার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন। শনিবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজমিরীগঞ্জে তিন দিন ব্যাপি উন্নয়ন মেলা শুরু হলে মেলার মধ্যে এবং উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় কয়েকটি ব্যানার লাগান উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক মমিনুর রহান সজিব। ব্যানারে তিনি স্থানীয় এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি এবং সাধারন সম্পাদকের ছবি ব্যবহার করেন এবং এমপি আব্দুল মজিদ খানের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ছবি ব্যবহার করেন। শনিবার সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল স্থানীয় এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান। তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে সকল দলীয় ব্যানার মেলা ও অফিস প্রাঙ্গণ থেকে অপসারন করা হয়। শনিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কান্তি চক্রবর্তী মেলা পরিদর্শনে গেলে সেখানে উপস্থিত হয়ে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক বাবুল রায় ও যুগ্ম-আহবায়ক মমিনুর রহমান সজিবের নেতৃত্বে যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করেন এবং হুমকি দেন। এক পর্যায়ে মেলায় থাকা দর্শনার্থীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মেলা থেকে তার কার্যালয়ে নিয়ে যান। তখন সেখানে উপজেলার সকল কর্মকর্তা মিলিত হন এবং মেলার কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখেন। এ ব্যাপারে উজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কান্তি চক্রবর্তী বলেন, মেলার ভিতরে রাজনৈতিক কোন ব্যানার লাগানোর নিয়ম নেই। তাই তিনি ব্যনারগুলো অপসারন করেছেন। মেলায় ও অফিসের সামনে বড় বড় ব্যনার লাগানো হয় কাউকে না জানিয়ে। যেহেতু সমাপনী অনুষ্ঠানে এমপি মহোদয় আসবেন তাই ব্যানারগুলো সরানো হয়েছিল। তিনি তাকে হুমকি ও দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলেঅভিযোগ করে জানান, মেলা সাময়িক বন্ধ রেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করেছেন। উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক মমিনুর রহমান সজিব জানান, তিনি মেলার বাহিরে ব্যনার লাগিয়েছিলেন। এটি দলের ব্যনার নয়। সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে তিনি ব্যানার তৈরি করেছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যানারগুলো ছিড়ে নষ্ট করায় তারা ক্ষুদ্ধ হয়েছেন।

জেলা প্রশাসক মনীষ চাকমা জানান, বিষয়টি বড় কিছু নয়। স্থানীয়ভাবে এর মিমাংসার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে, রাতে এমপি আব্দুল মজিদ খান এর মধ্যস্থতায় এক শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শালিস বৈঠকে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক বাবলু রায় ও যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মমিনুর রহমান সজিব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হাতে-পায়ে ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করলে বিষয়টি নিস্পত্তি হয়। পরে উন্নয়ন মেলার কার্যক্রম চালু করা হয়।