নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট গ্রামে দুই লন্ডন প্রবাসী তাদের বাড়ির কেয়ারটেকার দিয়ে একই গ্রামের তিন নিরীহ নিরপরাধ লোককে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে মামলার তদন্তকারী সংস্থা ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করেছে। পাশাপাশি মামলার বাদি নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মামলা মিথ্যা বলে এভিডেভিট প্রদান করেছে। এ নিয়ে ওই গ্রামে তোলপাড় হচ্ছে।
জানা যায়, উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট গ্রামের লন্ডন প্রবাসী আসাদ মিয়া ও তার ভাই আনোয়ার মিয়ার সাথে একই গ্রামের কচই মিয়া গংদের জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এর জের ধরেই ইতিপূর্বেও এক মহিলাকে বাদী করে কচই মিয়া গংদের উপর মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করেছিল তারা। একই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ মার্চ আনোয়ার মিয়া লন্ডনীর বাড়ির কেয়ারটেকার গজনাইপুর ইউপির কামারগাঁও গ্রামের আব্দুর রহমানের পুত্র সুমন মিয়াকে বাদি করে কচই মিয়ার পুত্র মাসুক মিয়া, কন্যা শিপনা বেগমসহ তিনজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১ হবিগঞ্জ আদালতে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করে। বিজ্ঞ আদালত মামলাটির বিষয়ে ৭ কার্য দিবসের মধ্যে অনুসন্ধানপূর্বক (সাক্ষীদের জবানবন্দীসহ) প্রতিবেদন দেয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশন (পিবিআই) হবিগঞ্জকে নির্দেশ প্রদান করেন। পিবিআই মামলাটির অনুসন্ধানপূর্বক এর কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মৃনাল দেবনাথ অনুসন্ধান পূর্বক মামলাটির ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে প্রেরণ করেন।
এদিকে মামলার বাদি সুমন মিয়া গত ৩ জুলাই বিজ্ঞ নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হাজির হয়ে এফিডেভিট প্রদান করে জানান, সদরঘাট গ্রামের লন্ডন প্রবাসী আসাদ মিয়া ও আনোয়ার মিয়ার চাচাতো ভাই এলাইচ মিয়া (পিতা মৃত কইতন মিয়া) তাকে আসাদ মিয়ার বাড়িতে কেয়ার হিসেবে এনে দেন। আসাদ মিয়া তার কথামতো চললে তাকে বাড়ি-ঘর ও জমি দেবে। এতে সুমন রাজি হলে তার মোবাইল ফোন দিয়ে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে মিথ্যা অপহরণের ঘটনা সাজিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে। পরবর্তীতে ফেইসবুক আইডি দেখিয়ে সুমনকে বø্যাকমেইল করে ভয় ভীতি দেখিয়ে সুমনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার কে আসামীগন অপহরণ করছে মর্মে মিথ্যা মামলা দায়ের না করলে আসামিগণ সুমনের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করে সারাজীবন জেলে রাখিবে বলে সুমনকে বাধ্য করে আসাদ মিয়া, আনোয়ার মিয়া ও তাদের চাচাতো ভাই এলাইচ মিয়ার কথায় রাজি হয়ে তার স্ত্রী ফাতেমাকে চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। প্রকৃতপক্ষে আসামীগণ অর্থ্যৎ মাসুক মিয়া, শিফনা বেগমসহ তারা তার স্ত্রীকে অপহরণ করে নাই মর্মে এফিডেভিটে জানায়।
মামলার আসামি শিপনা বেগম জানান, জমি নিয়ে লন্ডন প্রবাসী আসাদ মিয়া ও আনোয়ার মিয়ার সাথে তার পিতা কচই মিয়ার বিরোধ আছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে আসাদ মিয়া ও আনোয়ার মিয়া একের পর এক মামলা দিয়ে তাদেরকে অযথা হয়রানিসহ নানাভাবে নির্যাতন করে আসছে। তিনি আরো জানান, আমরা নিরীহ মানুষ আমাদেরকে কেন একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে তা তাদের বোধগম্য নয়। তিনি এসব মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিবেন বলেও জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, তাদের বিরোধ মীমাংসা করে দেয়ার জন্য এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বিগন চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়েছেন।