বানিয়াচংয়ে যুবলীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মাসুদ কোরাইশী মক্কি এখনো অধরা ॥ ক্ষোভ
তারিখ: ১১-নভেম্বর-২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার ॥

 আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দেড় বছর পার হলেও বানিয়াচং উপজেলার ৮নং খাগাউড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী যুবলীগ নেতা শাহ মাসুদ কোরাইশী মক্কি এখনো অধরা রয়েছেন। এতে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 
অভিযোগ রয়েছে, জনসেবার নামে বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা ও ঘর নির্মাণের জন্য সরকারী টিন প্রদানের বলে তার সহচর শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি রুবেলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এক হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় সমালোচনা দেখা দিয়েছে। 
জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার ৮নং খাগাউড়া ইউনিয়নের গুনই গ্রামের শাহ মাসুদ কোরাইশী মক্কি ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার খালাতো ভাই আওয়ামী লীগ নেতা ময়েজ উদ্দিন রুহেল ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তার ছত্রছায়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেন মাসুদ কোরাইশী।
এক পর্যায়ে তিনি নির্বিঘ্নে ভিজিডি ও ভিজিএফের ১৪০ বস্তা চাল জনগণের মধ্যে বিতরণ না করে হবিগঞ্জ শহরে বিক্রির চেষ্টা করলে জনতার হাতে ধরা পড়েন। পরে জনরোষের মুখে সেই চাল পুনরায় এলাকায় এনে কার্ডধারী সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সারাদেশে বহু ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পলাতক, বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার হলেও শাহ মাসুদ কোরাইশী মক্কি এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
উজিরপুর গ্রামের বয়স্ক মহিলা সায়রা বেগম জানান, আমাকে বয়স্ক ভাতা ও সরকারী টিন প্রদানের কথা বলে শাহ মাসুদ কোরাইশী মক্কির সহচর রুবেল এক হাজার টাকা নেয়। কিন্তু আট মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সরকারী টিন এবং টাকা কিছুই দেয়নি। বিভিন্ন ভাতা ও সরকারী অনুদান দেয়ার কথা বলে এলাকার আরো ৫০ জনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
একই ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের আব্দুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার একটি বিরোধে শালিসের নামে ৫০ হাজার টাকা আমানত হিসেবে নেয় চেয়ারম্যান শাহ মাসুদ কোরাইশী মক্কি। কিন্তু বছরের পর বছর সময় ক্ষেপণ করে কোনো সমাধান করেননি’। পরে আব্দুর রহমান হবিগঞ্জ কোর্টে মামলা দায়ের করলে আদালতের নির্দেশে চেয়ারম্যান মক্কির কাছ থেকে উক্ত টাকা আদায় করা হয়’।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পূর্বে চেয়ারম্যান মক্কি আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে ৭, ৮ ও ৯নং ইউনিয়নের নিরীহ মানুষদের বিভিন্ন মামলায় আসামি করার তালিকা প্রণয়ন করতেন। বৈষম্যবিরোধী মামলায় অনেকেই গ্রেপ্তার হলেও চেয়ারম্যান মক্কি নিজে দুই মামলার এজহারভুক্ত আসামি হয়েও প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন- এতে জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।

প্রথম পাতা