চুনারুঘাটের আলীনগর গ্রামে স্বজনদের আহাজারী ॥ ভারতীয়দের হাতে নিহত ৩ গরু ব্যবসায়ীর লাশ ফেরত আসছে আজ
তারিখ: ৩০-অক্টোবর-২০১৪
মোহাম্মদ নুর উদ্দিন ॥

চুনারুঘাট উপজেলার রেমা-কালেঙ্গা সীমান্তের অপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যেও খোয়াই জেলার বাচাইবাড়ী নামক এলাকায় ৩ বাংলাদেশীকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে গতকাল বুধবার বিকেলে বাল্লা সীমান্তের অপারে ভারতীয় অংশে ব্যাটলিয়ান পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের পর সন্ধ্যায় লাশ ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এদিকে চুনারুঘাট উপজেলার আলীনগর গ্রামে স্বজন হারানোদের হাহাজারীতে ভারী হয়ে উঠেছে পূর্ব মুছিকান্দি পাহাড়ী এলাকা। নিহত তিনজনই ভূমিহীন হিসাবে পাহাড়েরর এই সরকারী জায়গায় বসবাস করত। নিহত তিন জনের মাঝে আজগর আলীর ছেলে করম আলী (৪০) একজন কুখ্যাত চোর হিসাবে পরিচিতি থাকলেও সমির হোসেনের ছেলে সুজন মিয়া (২২) এবং সনু মিয়ার ছেলে আক্কল মিয়া (১৯) এই লাইনে নতুন। করম আলীর বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তবে সুজন ও আক্কল মিয়ার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। তাদের পরিবার দাবী করছে করম আলীই এদেরকে খারাপ পথে নিয়ে গেছে।

গাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওলানা তাজুল ইসলাম জানান, করম আলীর বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ ছিল। এক বছর আগে তার বাড়ি ভেঙ্গে টিন অন্যদেরকে দিয়ে দেয়া হয়। তবে সুজন ও আক্কল মিয়ার বিরুদ্ধে আগে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, গত ৬ মাসে ভারতে এ ধরনের ঘটনায় ৬ জন মারা যায়। গত ১০ বছরে শিশু ও নারীসহ মারা যায় ২৫/৩০ জন। জনগনকে বারবার সচেতন করলেও তারা ভারতে গিয়ে বারবার ধরা পড়ে এই করুন মৃত্যুর মুখোমুখি হয়।

চুনারুঘাট থানার ওসি অমুল্য কুমার চৌধুরী জানান, মৃত্যুর ঘটনা সত্যিই মর্মান্তিক। ভারতের অংশে মৃত্যু হওয়ায় আমার কিছু করতে পারছিনা।

বিজিবির ৪৬ ব্যাটালিয়নের সিইও লে. কর্ণেল নাছির উদ্দিন জানান, বারবার সীমান্ত এলাকার লোকজনকে সচেতন করার পরও সীমানা অতিক্রম করে এধরনের মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া দুঃখ জনক। তবে বিএসএফকে বলা হয়েছে যদি কেউ অপরাধ করে তাকে যেন এভাবে না মেরে আইনের হাতে তুলে দেয়া হয়। তিনি জানান, আমরা বিএসএফ কাছে দাবী জানিয়েছে লাশগুলো দ্রুত ফেরত দেয়ার জন্য আশা করি আজ যে কোন সময় লাশগুলো ফেরত দেয়া হবে।

প্রসঙ্গত মঙ্গলভার ভোর রাতে চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের আলী নগর গ্রামের আজগর আলীর ছেলে করম আলী (৪০), একই গ্রামের সমির হোসেনের ছেলে সুজন মিয়া (২২) এবং সনু মিয়ার ছেলে আক্কল মিয়া (১৯) ভারতে যান। সেখানে স্থানীয় জনতা তাদেরকে কুপিয়ে হত্যা করে। আহত অবস্থায় আক্কল মিয়া জীবন বাঁচাতে খোয়াই শহরের একটি হাসপাতালে ভর্তি হলে পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এলাকায় তারা ফিরে না আসায় বিকেলে মুখে মুখে তাদের হত্যার কথা প্রচার হয় এবং বিজিবি ও পুলিশকে অবহিত করা হয়। সন্ধ্যার পর বিজিবি ও পুলিশ এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়।

উল্লেখ্য, গত ৪ এপ্রিল এ ধরনের এক ঘটনায় তিন জনকে পিটিয়ে হত্যা করে ভারতীয় জনতা।

প্রথম পাতা
শেষ পাতা