আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস
তারিখ: ১৬-ডিসেম্বর-২০১৮
কাউছার আহমেদ টিপু ॥

আজ ১৬ ডিসেম্বর ৪৭তম মহান বিজয় দিবস। ৯ মাস মুক্তি সংগ্রামের পর ১৯৭১ সালের আজকের দিনেই হানাদার মুক্ত হয় পূর্ব বাংলা। বিশ্ব মানচিত্রে নতুন করে খচিত হয় “বাংলাদেশ”। মানচিত্রে টানা হয় নতুন ভৌগলিক রেখা। দিগন্তে উদিত হয় লাল সবুজের বিজয় কেতন। সেদিন বাংলার প্রতিটি জনপদে ধ্বনিত হয় বিজয় উল্লাস। তবে এ বিজয়ের পেছনের ইতিহাস বড় নির্মম, মর্মান্তিক। যার জন্য রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল “কুঁড়ে থেকে অট্রালিকা”। রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল এদেশের কাল-বিল, হাওর-বাওর, নদী-নালা। চারদিকে ছিল ধ্বংসস্তুপের হাহাকার, বাতাসে লাশের গন্ধ। নির্যাতিত মা-বোনের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছিল আকাশ-বাতাস। পৃথিবীর খুব কম জাতির ভাগ্যেই জুটেছে এমন বিভীষিকার অভিজ্ঞতা। কারণ হানাদাররা চেয়েছিল “মানুষ নয় মাটি”। সেজন্যই বুঝি নির্বিচারে চলছিল গনহত্যা। তাদের কবল থেকে রক্ষা পায়নি কোলের শিশু থেকে অক্ষম অসহায় বৃদ্ধও। যার শুরুটা হয়েছিল ২৫শে মার্চের কালরাতে। সে রাতে ঢাকা পরিণত হয় বিংশ শতাব্দীর কারবালায়। তখনই বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেতার বার্তায় ঘোষণা করেন আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা। চারদিকে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। গঠিত হয় অস্থায়ী মুজিবনগর সরকার। জেনারেল ওসমানীর নেতৃত্বে গঠিত হয় মুক্তি বাহিনী। আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের একমাত্র সম্বল ছিল স্বদেশ প্রেম আর দূরদর্শী কৌশল। চলে টানা ৯ মাস। অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিতে থাকেন স্বদেশ প্রেমে উজ্জীবিত এদেশের সূর্য্য সন্তানেরা। নিশ্চিত মৃত্যু জেনে বুকে মাইন্ড বেধে ট্যাংকের সামনে ঝাপিয়ে পড়ার দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যায় খোদ হানাদারের দল। অবশেষে এদেশের আপামর জনতার স্বতঃস্ফুর্ত সমর্থন, সহযোগীতা এগিয়ে যেতে থাকে বীর বাঙ্গালী। পাশাপাশি কৌশলী মু্িক্তযোদ্ধাদের হাতে চারদিকে ধীরে ধীরে কাবু হতে থাকে হানাদার বাহিনী। পূর্ব গগনে উকি দেয় বিজয়ের সূর্য্য। প্রকাশ্যে এগিয়ে আসে প্রতিবেশী ভারত। শুরু হয় যৌথ বাহিনীর প্রতিরোধ যুদ্ধ। এক সময় ধরা দেয় বহু আকাঙ্খিত অধরা। আজকের দিনেই ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ৯৪ হাজার সৈন্যসহ আত্মসমর্পণ করেন পাক বাহিনী প্রধান নিয়াজী। প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

এদিকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন, জেলা আওয়ামীলীসহ অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে। সকাল দূর্জয় হবিগঞ্জে ৩৩ বার তুপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটি সূচনা করা হবে। এর পর জেলা প্রশাসনের জালাল স্টেডিয়ামে কুচ-কাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। পরে নিমতলায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সংবর্ধনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে।

শেষ পাতা