সিভিল সার্জন ও তদন্ত কমিটি প্রধানের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য ॥ বাহুবলে ডাঃ বাবুলের অনিয়ম-দূর্নীতি তদন্তে মাঠে নেমেছে ৩ সদস্যের কমিটি
তারিখ: ২৪-জানুয়ারী-২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার ॥

বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ বাবুল কুমার দাসের অনিয়ম-দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশের পর নড়ে-চড়ে বসেছেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। একজন পদস্থ কর্মকর্তাকে দিয়ে গঠন করা হয়েছে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। ইতিমধ্যে ওই তদন্ত কমিটি পরিদর্শন করেছে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এ বিষয়ে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ও তদন্ত কমিটি প্রধানের পরস্পর বিরোধী বক্তব্যে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল। একদিকে, সিভিল সার্জন ডাঃ সুচিন্ত চৌধুরী বলছেন, ‘বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের সমস্যার বিষয়ে তিনি জ্ঞাত নন’। অপরদিকে, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডাঃ দেলোয়ার হোসেনের দাবি, সিভিল সার্জন অফিসের সিদ্ধান্তক্রমেই তাকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘ইতিমধ্যে তার নেতৃত্বে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছে তদন্ত কমিটি। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে’। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তারা এসব কথা জানান। তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মুখলেছুর রহমান উজ্জল ও একই কার্যালয়ের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম।

সূত্রে জানা গেছে, ডাঃ বাবুল কুমারের পক্ষে মিডিয়া কভারেজ দিতে হামিদনগর এলাকার একটি ফার্মেসী মালিক টাকা বিলাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে বড় অংকের টাকা দিয়ে মাঠে নামানো হচ্ছে কতিপয় ব্যক্তিকে। টাকার বিনিময়ে তদন্ত কমিটি ছাড়াও দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের সামনে ডাঃ বাবুল কুমারের পক্ষে লবিষ্ট হিসেবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি মহল।

উলে¬খ্য, টানা ৮ বছরেরও বেশী সময় ধরে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে কমর্রত আছেন ডাঃ বাবুল কুমার দাস। বাহুবলে আসার পর রাতারাতি পরিবর্তন ঘটেছে তার ভাগ্যের। দৃশ্য-অদৃশ্য অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে তিনি এখন বিশাল বিত্ত-বৈভবের মালিক। অদৃশ্য আয়ে কিশোরগঞ্জে তার ভাইয়ের নামে গড়ে তুলেছেন বিলাস বহুল প্রাইভেট হাসপাতাল। এ ছাড়াও ২০টিরও বেশী কোম্পানীর সাথে রয়েছে তার দহরম-মহরম। রোগীর ব্যবস্থাপত্রে নিম্নমানের ঔষধ লেখার শর্তে তিনি এসব কোম্পানীর নিকট থেকে গ্রহণ করেন উৎকোচ। কোন কোন কোম্পানির কাছ থেকে তিনি গ্রহণ করেন মাসিক, আবার কোনটির কাছ থেকে নেন বাৎসরিক হিসেবে। কোম্পানীর প্রতিনিধিদের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘সম্মানী ভাতা’। এ সব উৎকোচ ডাঃ বাবুল কখনো গ্রহণ করেন নগদে, আবার কখনো ব্যাংক চেকের মাধ্যমে। এরকম একটি উৎকোচের ‘চেক’ সম্প্রতি ভাইরাল হওয়ায় সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্য। ‘ডাচ বাংলা ব্যাংক লিঃ’ ঢাকা তেজগাও ব্রাঞ্চের ২১৪৪৪৪২ নং চেকের মাধ্যমে তিনি একটি ঔষধ কোম্পানীর কাছ থেকে ওই উৎকোচ গ্রহণ করেন।

তবে সম্প্রতি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর ডাঃ বাবুল ‘ভারপ্রাপ্ত’ শব্দ ব্যবহার করতে বাধ্য হন। এখন তার যাবতীয় কাগজপত্র ও দপ্তরে ভারপ্রাপ্ত শব্দটি শোভা পাচ্ছে।