আজ সকাল ১১টায় জানাযা ॥ এমপি আবু জাহিরের শোক ॥ সুলতানশীর আধ্যাত্মিক সাধক সৈয়দ আউলিয়া মিয়া আর নেই
তারিখ: ৫-মে-২০১৯
আখলাছ আহমেদ প্রিয় ॥

হাজার হাজার ভক্তবৃন্দকে কাদিয়ে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করলেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ঐতিহাসিক সুলতানশী হাবেলীর বিশিষ্ট লেখক, ইসলামী চিন্তাবিদ ও আধ্যাত্মিক সাধক পীরে ক্বামেল সৈয়দ হাসান ইমাম হোসাইনি চিশতী ওরফে সৈয়দ আউলিয়া মিয়া। গতকাল শনিবার ভোর ৬টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে বার্ধক্যজনক কারণে ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি ইহকালে ৩ পুত্র, স্ত্রী ও আত্মীয়স্বজনসহ লক্ষাধিক ভক্তবৃন্দ এবং অসংখ্য গুনগাহী রেখে গেছেন। গতকাল সৈয়দ হাসান ইমাম হোসাইনি চিশতীর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তাঁর ভক্তবৃন্দ ও সাহিত্য সমাজের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। মরহুমের লাশ বিকেলে সুলতানশী হাবেলীতে পৌছলে সেখানে খবর পেয়ে উপস্থিত হন হবিগঞ্জ সদর-লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এডভোকেট মোঃ আবু জাহির। এ সময় তিনি গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং মরহুমের আত্মীয়-স্বজনের সাথে কথা বলেন ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। এছাড়াও স্থানীয় এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজার হাজার ভক্তবৃন্দের উপস্থিতিতে শোকসন্তপ্ত মানুষের ভীড় জমে। সৈয়দ হাসান ইমামের নামাজে জানাজা আজ রবিবার সকাল ১১টায় সুলতানশী হাবেলীর মাঠ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে। সকল ধর্মপ্রাণ মুসল্লিকে তাঁর নামাজে জানাজায় উপস্থিত থাকার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, সৈয়দ হাসান ইমাম হোসাইনী চিশতী ১৩৪৩ বাংলা সনের ২৩ শে অগ্রাহয়ণ জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা মরহুম সৈয়দ গোলাম মোস্তফা হোসাইনী চিশতি একজন ইংরেজী, আরবী, উর্দু ও ফারসী ভাষায় উচ্চ শিক্ষিত আলেম ছিলেন। সৈয়দ হাসান ইমাম হোসাইনী চিশতি ১৯৫৬ ইং সনে বাংলা, আরবী-ফারসী, উর্দু ও ইংরেজী ভাষায় উচ্চ শিক্ষা লাভ করে পান্ডিত্য অর্জন করেন। পিতার রেখে যাওয়া হাজারো কিতাবের একটি লাইব্রেরী প্রাপ্ত হন। ১৯৫৬ ইং সন থেকে জীবনের অন্তিমকাল অবধী আরবী, উর্দু, ফারসী ও ইংরেজী ভাষায় ইসলাম ধর্মীয় জটিল তত্ত্বসমূহের গবেষণার কাজ চালিয়ে গেছেন। বাংলা-ইংরেজী, আরবী-উর্দু ও ফারসী ভাষায় তিনি একজন সুপন্ডিত ছিলেন। সৈয়দ হাসান ইমাম হোসাইনি চিশতী অনেক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন ছাড়াও তিনি বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন। তিনি হবিগঞ্জ সাহিত্য পরিষদ-এর সভাপতি ও সিপাহসালার সাইয়্যেদ নাসিরউদ্দিন পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নিয়মিত মাসিক মদিনা, মাসিক তরজুমানসহ বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখতেন। তার রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে দ্বীনহীন রচনাবলী, তরফের ইতিবৃত্ত, মহরম পরিচিতি, শানে পাঞ্জাতন ও ডুব দাও সখা সত্য সিন্ধু জলে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও তিনি লিখেছেন তরফের ইতিকথা, শানে পাঞ্জাতন,  মহররম পরিচিতি, ইশকে রাছুল, ইসলামের দৃষ্টিতে বায়ত তরিকা ও চিল¬া প্রসঙ্গ, ইসলামের আলো নামাজ প্রসঙ্গ, রচনা- কদমবুচি প্রসঙ্গ, মুআদ্দাত আল কোরবা, আউলিয়া কিরামের ওসীলা ফজিলত ও মর্যাদা। তাঁর প্রতিষ্ঠিত মহাকবি সৈয়দ সুলতান সাহিত্য ও গবেষণা পরিষদ থেকে অনেকগুলো স্মারক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

প্রথম পাতা