গণপূর্তের পুকুর থেকে লীজ ছাড়াই লাখ-লাখ টাকার মাছ বিক্রি ॥ পাহাড়সম অভিযোগ হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ॥ দুদুকের মাধ্যমে তদন্তের দাবী
তারিখ: ৯-অক্টোবর-২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার ॥

একদিকে সারা দেশে চলছে দুর্ণীতিবাজদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান। অন্যদিকে দূর্ণীতির যেন এক পসরা সাজিয়ে বসে আছে হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের ৫ কর্মকর্তা। তাদের দাপট এতটাই যে, কোন নিয়মনীতিরই যেন তোয়াক্কা করে না তারা। হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগ ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সংলগ্ন পুকুর থেকে বছরের পর বছর কোন ধরণের সরকারী লিজ ছাড়াই মাছ বিক্রি করে আসছে ৫ কর্মকর্তা দ্বারা গঠিত একটি সিন্ডিকেট। আর তাতে করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এছাড়াও সরকারী চাকুরী বিধি অনুযায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সর্বোচ্চ ৩ বছরের মাথায় স্থানান্তর হওয়ার কথা থাকলেও বছরের পর বছর ধরে বহাল তবিয়তেই রয়েছেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে ওই ৫ কর্মকর্তার মধ্যে কোন কোন কর্মকর্তা হবিগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা আবার কোন কোন কর্মকর্তা দীর্ঘদিন যাবত থাকার ফলে তৈরী করেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। যার ফলে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। গণপূর্ত বিভাগের যাবতীয় কার্যক্রম তাদের ঈশারায় চলে বলেও জানা গেছে। অভিযুক্ত ৫ কর্মকর্তা হলেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বৈদ্যুতিক) এনায়েত উল্লাহ, ক্যাশিয়ার নুরুল হক কামাল, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী দেবতোষ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী নূর উদ্দিন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) কামরুজ্জামান।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাল ফেলে মাছ সংগ্রহ করা হয়। পরে তা বিক্রি করে দেয়া হয়। আর ওই বিক্রির টাকা ভাগাভাগি করে নেয় ৫ সদস্যের সিন্ডিকেট। এছাড়াও ওই সিন্ডিকেটটি ছালেক ড্রেডার্স নামে একটি দোকানের প্যাড ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকার ভাইচার কুটেশন করে নেয়। যা সরেজমিনে (দুদুকের) মাধ্যমে তদন্ত করলে সত্যতা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন ভোক্তভূগী।

অভিযোগ উঠেছে, হবিগঞ্জ গণপূর্ত অফিসের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী দেব তোষ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুর উদ্দিন ভূইয়া, ক্যাশিয়ার নুরুল হক কামালসহ বেশ কয়েকজন একে অপরের সহযোগী হিসেবে নানা দুর্নীতি’র সাথে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে পাহাড়সম অভিযোগ। এরা সকলে মিলে গত প্রায় ৩ বছরে অন্তত ৮ কোটি সরকারী টাকা ‘নয়-ছয়’ করেছেন। যা নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বৈদ্যুতিক) এনায়েত উল্লাহ এর সাথে বার-বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ও স্টাফ অফিসার দেব তোষ ২০১৬ সাল থেকে প্রায় ৪ বছর, উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুর উদ্দিন ভূইয়া ৬ বছর ও ক্যাশিয়ার নুরুল হক কামাল ২০ বছর যাবত হবিগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগে কর্মরত রয়েছে।

প্রথম পাতা