লাখাইর তেঘরিয়ায় বিরোধপূর্ণ ২৫ একরসহ ৮১২ ক্ষের গোচারণ ভূমিতে রিসিভার নিয়োগ
তারিখ: ৮-অক্টোবর-২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার ॥

লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া শালদিঘা ও মৌবাড়ি এলাকার বিরোধ পূর্ণ ২৫ একর গো চারণ ভূমিতে রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে। হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মর্জিনা আক্তার গত বুধবার রিসিভার নিয়োগের আদেশ তামিল করতে লাখাই থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। তেঘরিয়া, শালদিঘা ও মৌ বাড়ি এলাকার প্রায় ২৭১ একর বা ৮১২ ক্ষের গোচারণ ভূমির দখল বেদখল নিয়ে তেঘরিয়া গ্রামের মিলন মিয়া ও তার সহযোগিদের সাথে শালদিঘা গ্রামের মহিবুর রহমান চৌধুরী ও তার সহযোগিদের মধ্যে দীর্ঘ দিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। বিশাল আয়তনের গোচারণ ভূমিটি দখল করে ফসল ফলানোসহ ভোগ দখলের চেষ্টা করে আসছিল মিলন মিয়া ও তার লোকজন। এনিয়ে ওই ৩ গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে মিলন মিয়ার লোকজনের একাধিকবার সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা মোকাদ্দমাও বিদ্যমান। লাখাই উপজেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি প্রায়ই বিঘিœত হয়ে আসছিল ওই গোচারণ ভূমিকে কেন্দ্র করে। সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একাধিকবার হস্তক্ষেপে খুন খারাপি থেকে গ্রামবাসী রক্ষা পেলেও বিরোধ মিমাংসা হয়নি। ৩ গ্রামবাসীর পক্ষে মহিবুর রহমান চৌধুরী বিরোধ পূর্ণ জায়গার রিসিভার নিয়োগের আবেদন করেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দীর্ঘ শুনানী শেষে আইন শৃংখলা রক্ষা করার স্বার্থে রিসিভার নিয়োগের আবেদন মঞ্জুর করেন। ফলে বিরোধ পূর্ণ জায়গার রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব পেলো লাখাই থানা। গত ২৫/১/২০১৮ইং তারিখে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত মিস ২৫/১৮ লাখাই মামলায় ৮১২ ক্ষের জমিতে রিসিভার নিয়োগের আদেশ দেন। এডিএম কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে শাহজাহান মিয়া দায়রা জজ আদালতে ৩৮/১৮নং রিভিশন করেন। ওই রিভিশন মোকাদ্দমা শুনাণী শেষে অতিরিক্ত দায়রা জজ এসএম নাসিম রেজা রিভিশন মামলাটি না মঞ্জুর এবং এডিএম কোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। মিলন মিয়ার পক্ষে রিসিভার বাতিলের আবেদন করলে স্বত্ব ১০/১৩ ইং লাখাই মামলার রায়ের আলোকে গত ৪/২/২০১৮ইং তারিখে এডিএম আদালত গোচারণ ভূমির ২৫ একর জায়গার রিসিভার বাতিলের আদেশ দেন। গ্রামবাসীর পক্ষে স্বত্ব ১০/১৩ লাখাই মামলার নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে স্বত্ব ২১/১৬ইং আপিল করা হয়। ওই আপিল শুনানী শেষে যুগ্ম দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক মোঃ মিজানুর রহমান আপিল মঞ্জুর করেন এবং নিম্ন আদালতের রায় বাতিল ঘোষনা করেন। স্বত্ব আপিলের রায় গ্রামবাসীর পক্ষে গেলে ওই আদেশের আলোকে এডিএম কোর্টে একটি আবেদন করেন মহিবুর রহমান চৌধুরী। তিনি গোচারণ ভূমির অবশিষ্ট ২৫ একর জায়গার রিসিভার বাতিলের আদেশ রহিত করার দাবী জানান। আদালত গত ৬ নভেম্বর উভয় পক্ষের শুনানী শেষে ইতিপূর্বে ২৫ একর গোচারণ ভূমির রিসিভার বাতিলের আদেশ বাতিল করে ২৫/১/২০১৮ইং তারিখের আদেশ পুনর্বহালের আদেশ দেন। এ আদেশের প্রেক্ষিতে গোচারণ ভূমির প্রায় ২৭১ একর বা ৮১২ ক্ষের গোচারণ ভূমির পুরোটাই রিসিভারের আওতায় এলো। রিসিভার নিয়োগের কারণে ওই জমি নিয়ো আপাততঃ আর কোনো বিরোধ দেখা দেবে না বলে জানান গ্রামবাসী। ৮১২ ক্ষের জায়গা নিয়ে মহিবুর রহমান চৌধুরীর দায়েরকৃত একটি স্বত্ব ১০৫/১৭ নং মামলা বর্তমানে যুগ্ম দায়রা জজ-১ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

প্রথম পাতা