নবীগঞ্জে শিশু জিসানকে নগ্ন করে নির্যাতন ॥ অভিযুক্ত স্বপনের আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি ॥ কারাগারে প্রেরণ
তারিখ: ৮-নভেম্বর-২০১৯
জাকারিয়া চৌধুরী ॥

নবীগঞ্জে ৫ বছর বয়সী শিশু জিসানকে নগ্ন করে নির্যাতনের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দিয়েছে শিশু জিসানের চাচা স্বপন মিয়া (২৬)। বুধবার রাতে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনুর আক্তারের আদালতে ১৬৪ ধারায় এ স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পরে রাতেই তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নবীগঞ্জ থানার (ওসি) তদন্ত উত্তম কুমার দাস।

আদালতের বরাত দিয়ে তিনি জানান, স্বপন মিয়া ঘটনার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। সে টাকার জন্যই তার ভাতিজাকে নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করে তার প্রবাসি মায়ের কাছে প্রেরণ করে। পরে নির্যাতনের এ দৃশ্য সইতে না পেরে সৌদি আরব থেকে ছুটে এসেছেন মা। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত দেবর স্বপন মিয়া (২৬) কে। সে উপজেলার চরগাও গ্রামের মৃত মনাই মিয়ার পুত্র।

উল্লেখ্য, নবীগঞ্জ পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামের সুফি মিয়ার সাথে বিয়ে হয় সুমনা বেগমের। সুফি মিয়ার মৃত্যুর পর ছোট্র দুইটি শিশুর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিদেশে যাওয়ার জন্য ভাবতে থাকেন সুমনা। এরপর জীবিকার তাগিদে তিনি পাড়ি জমান সৌদি আরব। আর ছোট্র দুইটি শিশুকে রেখে যান তার দেবর স্বপন মিয়ার কাছে। সৌদি আরবে গিয়েও শান্তিতে থাকতে পারেননি তিনি। টাকার জন্য তার সন্তানকে নির্যাতন করতে থাকেন দেবর স্বপন মিয়া। হতভাগা মা সন্তানকে নির্যাতন থেকে বাঁচাতে ধাপে ধাপে স্বপনের কাছে টাকাও পাঠান। কিন্তু নির্যাতন থামেনি।

সম্প্রতি শিশু জিসানকে নগ্ন করে নির্যাতন করে সেই দৃশ্য ভিডিও করে টাকা চেয়ে তা পাঠান মায়ের নিকট। এই দৃশ্য সইতে না পেরে গত ২ নভেম্বর দেশে ছুটে আসে মা সুমনা। মঙ্গলবার নির্যাতনের এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় শুরু হয় নানান আলোচনা ও সমালোচনা। বুধবার দিবাগত রাতে এ ঘটনায় সুমনা আক্তার বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় স্বপনকে একমাত্র আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে। পরে বুধবার সকালে পুলিশ গোপন সংবদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া এলাকা থেকে নির্যাতনকারী স্বপন মিয়াকে আটক করে।

প্রথম পাতা