মুসলিম এর দাবী স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম বলায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা নির্বাচন কর্মকর্তার উপর হামলা করে ॥ মাধবপুরে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে হামলার অভিযোগে আওয়ামীলীগ সভাপতিসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
তারিখ: ২৮-মার্চ-২০১৫
মাধবপুর প্রতিনিধি ॥

মাধবপুরে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পরিচালনাকালে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলায় উপজেলা নির্বাচন অফিসার শহীদুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় শহীদুল ইসলাম বাদি হয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিক শাহ মোঃ মুসলিমকে প্রধান আসামী করে ২০ জনের নাম উল্লেখ করে ৪০/৫০ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে মামলা দায়েরের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়। প্রবীণ এ রাজনীতিককে আসামী করায় তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। এ ব্যাপারে তারা আন্দোলনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে ২৬ মার্চ রাতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি সভাপতি সৈয়দ মোঃ শাহজাহান, পৌরসভা মেয়র হীরেন্দ্র লাল সাহা প্রমূখ। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ শাহজাহান সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসাবে উল্লেখ করে  তার  প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সাথে সাথে তার এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানায় পৌর যুবলীগ সভাপতি সাব্বির হাসান সহ উপস্থিত নেতাকর্মিরা। বক্তব্যের পর উপস্থাপক উপজেলা নির্বাচন অফিসার শহিদুল ইসলাম উপজেলা চেয়ারম্যানের বক্তবের সাথে একাত্ত্বতা পোষন করে তাকে ধন্যবাদ জানান।  পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষে ভাইস চেয়ারম্যান পৌর বিএনপির সভাপতি  আব্দুল আজিজ স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া এর কোন আইনগত ভিত্তি নেই বলে ক্ষমা চেয়ে অনুষ্ঠান থেকে চলে যান। এর প্রায় ১৫ মিনিট পর প্রধান অতিথি অনুষ্ঠানে আসন গ্রহন করেন। উপজেলা চেয়ারম্যনকে ধন্যবাদ জানানোর অভিযোগে প্রায় আধা ঘন্টা পর ক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী মঞ্চে উঠে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার উপর চড়াও হন। এ ঘটনায়  মাধবপুর থানায় উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র শাহ মোঃ মুসলিম, মোঃ রফিক, রফিক ভূইয়া, শাহ মোঃ তরিক, শাহ মোঃ জয়নাল, মোঃ স্বপন, মোঃ রিপন, পৌর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহ টিপু, জাবেদ মিয়া, বিল্লাল হোসেন খান, শাহ মোঃ বিল্লাল, এমরান মিয়া, ইয়াকুব আলীসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে ৪০/৪৫ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম।

মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, এমপি সাহেবের উপস্থিতিতে কোন কারণ ছাড়াই তারা আমার উপর হামলা করা করেছে। আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।

উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোঃ মুসলিম জানান, মহান স্বাধীনতা দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা বিরোধী দণ্ডপ্রাপ্ত রাজাকার সৈয়দ মোঃ কায়সারের ভাই সৈয়দ মোঃ শাহজাহান স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম বার বার বলেন। তার সাথে শহীদুল ইসলামও একাত্ত্বতার পাশাপাশি অনুষ্ঠানগুলোতে মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামীলীগ নেতাদের বাদ দিয়ে বিএনপি নেতাদের গুরুত্ব দেন। এতে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলামের উপর চড়াও হন। তিনি জানান, ওই নির্বাচন কর্মকর্তা ১২ বছর ধরে মাধবপুরে কর্মরত। সে স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে আঁতাত করে অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিল।

প্রথম পাতা
শেষ পাতা