অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে ব্যবস্থা ॥ যাদবপুরে শিক্ষকের বেত্রাঘাতে শিক্ষার্থী হাবিবার চোখ নষ্ট
তারিখ: ১০-সেপ্টেম্বর-২০১৯
জাকারিয়া চৌধুরী ॥

সদর উপজেলার যাদবপুরে শিক্ষকের ছোড়া বেতের আঘাতে হাবিবা আক্তার (৮) নামে এক শিক্ষার্থীর চোখের আলো হারিয়ে গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে হবিগঞ্জ ও পরে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটির চাচা মঈন মিয়া জানান, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন হাবিবার চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে, এ ঘটনায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আহত শিক্ষার্থী যাদবপুর গ্রামের শাহিন মিয়ার মেয়ে ও যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার দুপুরে ক্লাস চলাকালে সহকারী শিক্ষক নিরঞ্জন দাশ তার হাতের একটি বেত ছুড়ে মারলে তা সরাসরি হাবিবার চোখে লাগে। এতে তার চোখ থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরে শিক্ষার্থীরা চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় লোকজন হাবিবাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

এদিকে, এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার আবু জাফর। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীসহ স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে ঘটনার বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি জানান, তদন্ত চলছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই তদন্ত রিপোর্ট পেশ করা হবে।

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক নিরঞ্জন দাশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়া নিচ্ছিলাম। এ সময় যারা পড়া পারছিল না তাদের বেত্রাঘাত করি। কিন্তু ওই ক্লাসের দরজার সামনে কিছু শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে হৈ চৈ করছিল। আমি তাদের বারবার ধমক দিলেও তারা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকলে হাতে থাকা বেত ছুড়ে মারলে তা গিয়ে অসাবধানতাবশত হাবিবার চোখে লাগে।’

যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুন নুর জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। আজ দুপুরে তদন্ত দল সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

হবিগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রেজ্জাক জানান, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বেত দিয়ে আঘাত করার কোনও বিধান নেই। শিক্ষার্থীর চোখের আঘাতের বিষয়টি আজ দুপুরে সরেজমিন তদন্ত করা হয়েছে। দোষী হলে অবশ্যই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।